[আগের কোন পর্ব না পড়লেও চলবে।]
১
আমার এক দোস্ত নতুন প্রেমে পড়ছ
ত সকালের দিকে তার মোবাইল সেটের চার্জ শেষ হয়ে গেল। সারা রাত যেহেতু কথা বলেছিল !!
বন্ধু আমার কাছে আমার মোবাইল সেট চাইল। সে এখানে তার সিম ভরে কথা বলবে। আমিও দিলাম।
আমার মোবাইলের অটো রেকর্ডার ডিফল্ট হিসেবেই ৩০ সেকেন্ড অন করা থাকে। মানে, আমি অপশনে যেয়ে অফ করে রাখলেও মোবাইল সেট অফ করে অন করলে আবার সেটা চালু হয়ে যায়।
সে কথা বলল। আমাকে ২ ঘণ্টা পরে ফেরত দিল। মোটামুটি আমরা অবাক। মাত্র ২ ঘণ্টায় তার কথা কীভাবে শেষ হল
হঠাৎ অটো রেকর্ডের অপশনের কথা মনে হল। বন্ধুর সামনেই বাকিদের জানালাম। আর, ওকে বাদে সবাই অন্যদিকে দৌড় দিলাম। মানে, আরেক জায়গায় জড়ো হয়ে সেই রেকর্ড প্লে করা হবে।
ত, কিছুক্ষণ পরে ওই দোস্ত বাদে সবাই এক জায়গা হয়ে সেই রেকর্ড ছাড়লাম।
>ওগো, কী কর?? (এইটা আহ্লাদী গলায় দোস্তর গলা)
-- বাত খাই। (আঞ্চলিক ভাষার টোনে তার গার্লফ্রেন্ড)
>এত সকালে ভাত ! শরীর খারাপ করবে ত!
--খারাফ হইত না। আমি ছুট মাছও খাইতেছি বাতের লগে।
>আচ্ছা, তাহলে ত ভালই। কাঁটা লাগে না? দেখো, কষ্ট করোনা আবার।
(এহেন কথায় সবার হাসির চোটে পড়ের লাইনটা শুনতে পারিনাই
>আহা, শুনে অনেক মায়া লাগছে।(আবারো কী একটা কথায় বন্ধুর গলা)
--মায়া লাগন লাগত না। আমি গুছল করব। তুমার মোবাইলের চার্জ শেষ অইলে বুঝুম তোমার ভালবাসাও শেষ
>আর, কীসের সাথে কী? আরে শুন।
টঁট টঁট টঁট
৩০ সেকেন্ড শেষ। বন্ধুরেও দেখা যাইতেছে দূরে।
পরে ক্লাসে সে আমার মোবাইল থেকে রেকর্ড ডিলিট করে দেয়। একটু রাগারাগি ত করেই। ব্যাপার না। ওরে ঠাণ্ডা কোক খাইয়ে ঠাণ্ডা করা হয়।
ওকে এখন যখন আবার কথা বলতে দেখি, আমরা সবাই হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাই।
২
নয় তলায় ক্লাস ছিল। সাত তলা থেকে সিড়ি বেয়ে উঠার সময় আট তলার সিড়িতে এক ক্লাসমেটকে নিচের সেমিস্টারের এক মেয়ের সাথে এক লাইন কী যেন কথা বলতে দেখলাম। মানে কতক্ষণ কথা হয়েছিল আমি জানি না। তবে, আমি একটুই দেখেছি। ত, আমাকে সাক্ষী রেখে সেই ছেলে মানে, আমার ক্লাসমেট আশেপাশের সব জায়গায় বলে দিছে, “ওই মেয়েকে ত পুরাই পটিয়ে ফেলেছি। সেদিন সিড়িতে অনেকক্ষণ গল্প করলাম। পাগলাও দেখছে।” আমাকে কেউ জিজ্ঞাসা করলে আমি বাধ্য হয়ে স্বীকার করি যে আমি দেখেছি
পরে জানা গেল, ওই মেয়ে নাকি ওকে বলেছিল, “ ভাইয়া প্লিজ, সামনে থেকে একটু সরেন। ”
৩
এই কয়দিনের সবচেয়ে বড় কৌতুক। আমাদের ভার্সিটিতে প্রথম আলোর শপথ গ্রহণ কর্মসূচী পালন করা হবে। সেই নোটিশ বন্ধুসভা থেকে লিফলেট আকারে দেয়া হয়েছে। সেই নোটিশে দুই ছেলের ছবি (যারা আমাদের ভার্সিটির বন্ধুসভাতে আছেন) দেওয়া আছে বড় করে, তার নিচে তাদের ফোন নম্বর দেয়া !!
[ এটা যারা বুঝলেন না তাদের জন্য কীওয়ার্ড – ‘লুল ভাবের ক্লাসিক পর্যায়।’
৪
বাসায় ঢুকার পথে রাস্তার মোড়ে দেখি পোলাপানের এক জটলা। মাঝখানে দেখি আমারই এক এলাকার দোস্ত। আমি গেলাম। কি জানি কাহিনী কী ! দেখি দোস্তের থেকে সবাই গণহারে খাচ্ছে। ত সুযোগে আমিও একটা আধা লিটারের আরসি বাগায়া নিলাম
ত পাশের ছেলে ঘটনা বলল আজকে নাকি আনিকার সাথে দোস্তর কথা হইছে।
আনিকা হল এক মেয়ে যে আমাদের এলাকাতেই থাকে। আমার এই দোস্ত তাকে ৪ মাস ধরে পছন্দ করে। কিন্তু কথা বলার সাহস পায় না। মেয়েকে ভয় পায়, সাথে মেয়ের বড় ভাইকেও
ত, আমি বলি, “ কী কথা হইছে তোর সাথে?? ” দোস্ত এবারও কিছু বলে না। মুচকি হাসি দেয়। ত, আমি পাশের ছেলের দিকে তাকালাম আবারও। সে জানাল, আনিকা একা বের হয়েছিল। দোস্ত তাকে তার মনের কথা জানিয়েছে যে, আনিকাকে তার অনেক ভাল লাগে। এরপর, আনিকার কাছে জানতে চায় যে, তাকে দেখে আনিকার কী মনে হয়? আনিকা নাকি বলেছে, “ পুরাই টিভি তারকা। ” আমি ত ঘটনা শুনে দোস্তর থেকে আরও আধা লিটার আরসি নিলাম
ত, আমার হঠাৎ মনে হল, দোস্তকে আনিকার কোন টিভি তারকার মত লাগছে?????
দোস্ত জিজ্ঞাসা করাতে সে বলল, “ আনিকা কিছু বলার আগেই ওর ভাই নিচে নেমে আসে। আর, ও সোজা হাঁটা দেয়। আমিও চলে আসি মাঠে। আর, এত কিছুরই বা কী দরকার। আমাকে নিশ্চয়ই মডেল নোবেলের মতই লাগবে।
আমি ভাবি ভালই ত। আমিও এক লিটার পাইলাম, ওরও গতি হল। ওর আপডেট জানাতে বলে সেদিনকার মতন বিদায় নেই।
পরের দিন তার আরেক বন্ধু মারফত আপডেট পাইলাম এরকম। আনিকা নাকি দোস্তকে বলছে যে, দোস্তকে নাকি ক্লোজাপ ওয়ান খ্যাত ‘নোলক বাবু’ এর মত লাগে দেখতে।
শুনে দোস্ত ঘর থেকে আর বের হয় না। সে নাকি আরসি এর টাকা ফেরত চায়, তাই তার আশেপাশে আর কেউ ঘেঁষতেছেনা।
© আকাশ_পাগলা
[ যেহেতু এই সিরিজে সব বাস্তব কাহিনী, তাই দম ফাঁটানো হাসির কৌতুক আশা না করাই ভাল।]
প্রথম পর্ব Click This Link
দ্বিতীয় পর্ব Click This Link
তৃতীয় পর্ব Click This Link
চতুর্থ পর্বের জন্য Click This Link
পঞ্চম পর্ব Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



