প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষা তখন। কোন নিয়ম কানুন কিছু জানিনা, কিভাবে কী হয় তাও বুঝি না। ক্লাসের ছেলে মেয়েদের সাথে মাত্র কিছু কিছু খাতির হইছে। সবার জুনিয়র ব্যাচে। ক্লাসে কে কেমন তখনো সবার বুঝা শেষ হয় নি।
১১ তলায় যেতে হবে। লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি, লম্বা লাইন। ৫ মিনিট পরে অবশেষে আমার সুযোগ হল। হঠাত দেখি এক মেয়ে ধুমধাম এসে লাইনের তোয়াক্কা না করে সটান ভিতরে ঢুকে গেল। আর কেউ তাকে কিছু বলেও না। ভাগ্যক্রমে আমার লিফটে আমার জায়গা হয়, নিজে ঢুকতে পারায় সেটা নিয়ে আর উচ্চ বাচ্চ করলাম না, কিন্তু,মেজাজটা খিঁচিড়ে গেছে
মেয়েটা চোখ তুলে তাকাল। বড় বড়ো ডাগর দুটা চোখ। চোখের উপর নানা রঙের শেড। নাড়া খেলাম একটা
যেই রুমে পরীক্ষা ওখানে যেয়ে বসে আছি। খাতা আরও ১০ মিনিট পরে দিবে, পরীক্ষা তারও ১০ মিনিট পরে শুরু। হঠাত দেখি সেই মেয়েটা
অতক্ষণে পোলাপানের মধ্যে ফিস্ফাস্ফিস শুরু হয়ে গেছে। “কীরে, পাগলা! কী কথা বললি?” আমি ত মহা ভাবের যুগে ঢুকে গেলাম
আমি ত পুরা হিট।
আমি মনে মনে ভাবলাম, চোখ গুলোই তার সেরা।
মেয়েটা দেখি তার রুম এখনো খুঁজতেছে। একবার আমাদের সামনে দিয়ে এই দিকে যায়, আবার ওইদিকে যায়। অতক্ষণে ছেলেগুলোর মাঝে একটা ঢেউ বয়ে গেছে ফিসফাসের। সবাই বলতেছে, “ওরে চরম, ওরে চরম।”
আহা , কত পলিটিক্স।
আহ, মেয়েটাকে দেখে মাথায় আর টেক্সটাইলের অংকের সূত্র গুলা নাই।
একটু পরে স্যার আমাদের খাতা দিয়ে দিলেন। ১০ মিনিট পরে প্রশ্ন দিবেন। তখন দেখি, মেয়েটা আবার এই রুমে ঢুকল। আমার সিট একদম প্রথমে পড়েছিল। সে এসেই আমার দিকে তাকাল, বলল, “এটাই আমার রুম। আমি নতুন তো, তাই আবারো অনেক খুঁজ়ে আসতে হল, পরে নিশ্চিত হলাম। তোমার জন্য দেরী হল।”
আমি অবাক হলাম। বলে কী? আমি বললাম, “বসে বসে লিখবা। সমস্যা কী? আর এমন করতেছ কেন? বললাম না স্যরি? আর পরীক্ষা শেষে আবার কথা হবে।তোমার সমস্যা নিয়ে তুমি থাক, আর আমার লেখা আমি লিখি। ইয়াইইইইইক্স !!!!!!”
দেখি এই সুন্দরীর হাতে লাল কলম, কাঁধে ভ্যানিটি ব্যাগ। আরেক হাতে একটা কাগজ,ওখানে আমাদের প্রত্যেক রোলের জন্য পিন নম্বর দেয়া, সেটা টিচাররা খাতায় লিখে দেয় আর তার নিচে সাইন করে !!!!!
ক্লাসে আরেকজন স্যার আছেন, উনি আমার চিতকার শুনে এদিকে তাকিয়ে আছেন। আমার মাথা কাজ করছিল না, মুখ দিয়ে খালি স্যরি স্যরি বলতেছিলাম। আর, পিছনের ওই বেকুবটা (সেদিনই বুঝলাম, গর্দভটা আসলেই বেকুব
বেকুবটা এমন ভাবে বলছে, ক্লাসে অনেকেই শুনল। আবার ফিসফাস, “ওরে গরম, বেশি চরম।”
আমি ঘেমে গেলাম, সুন্দরী মানে ম্যাডাম আমার দিকে রক্তচক্ষু দিয়ে তাকাল। সুন্দরী মেয়ে, ছেলেদের ব্যাপার স্যাপার ঠিকই আঁচ করে সব বুঝে নিছে।
নাহ, আর বোধহয় কিছু বলার দরকার নাই। ঘেমে গেছি, গোসল করে আসি।
আগের পর্বের জন্য Click This Link
© আকাশ_পাগলা
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



