somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত প্রেমের গল্প- (পর্ব ২৬)

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিয়ে বিয়ে করে মাথাটা নষ্ট করে দিচ্ছে মা। আফরোজা অস্থির হয়ে গেছেন ছেলেকে বিয়ে দিতে। বুড়ো হয়ে গেলে এই ছেলের জন্য কোন মেয়ে পাওয়া যাবে না। অথচ ছেলে বলছে সে আরো একটু সময় চায়। এত সময়ের কী দরকার তিনি বুঝতে পারছেন না। যেই বয়সে যেই কাজ করা উচিৎ!! এখন পুলকের উচিৎ বিয়ে করা। ভালো চাকরী করছে। বাইরেও যেতে হতে পারে সামনের বছর। আচ্ছা!! তাঁর পছন্দমত না করুক বিয়ে। নিজে পছন্দ করে আনুক। এক রীতা চলে গেছে বলে কি দুনিয়াতে আর মেয়ে নেই? বাচ্চা মেয়ে বিয়ে করবে না। আচ্ছা!! করিস না!! বিয়ে তো করবি!! আগের বার মেয়েটাকে কী ভয়টাই না পাওয়াল। রাগ করে বহুদিন ছেলের সাথে কথা বলেননি তিনি। কিন্তু রাগ করে তো মনে হচ্ছে লাভ নেই। বিয়ের নাম মুখে আনে না পুলক। এখন আফরোজার বয়স হয়েছে। মন নরম হয়েছে অনেক। মৃত্যুভয়ও দানা বেঁধেছে। এত আদরের ছেলের বিয়েটা দেখে যেতে পারবেন না? কপালে থাকলে হয়তো নাতি-নাতনীর মুখটাও দেখা যেত। কিন্তু তাঁর জন্য তো বিয়ে করা লাগবে।

অফিস থেকে বাসায় ফিরেছে পুলক। বাসায় ফেরার পর ওঁর ব্যবহারেই বোঝা যায় ছেলের মেজাজ মর্জি কেমন!! ছেলেটা বাবার মত মেজাজী হয়েছে কিন্তু কোথাও যেন সে বাবার মত না। অন্তত আফরোজা চেষ্টা করেছেন ছেলেকে অন্যরকমভাবে গড়ে তুলতে। ‘মা!! মা!!’। হুম!! ছেলের মেজাজ ভালো। এখন এসে অকারণ তাঁকে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করবে, “কেমন আছো মা? মা!!! কেমন আছো?? হ্যাঁ!! হ্যাঁ!!”এসব হচ্ছে মুড ভালো থাকার পাগলামি।

ঠিকই পুলক ঘরে ঢুকল। আফরোজার পাশে এসে বসল।
-কেমন আছ মা? হ্যাঁ, কেমন আছ?
বলতে বলতে আফরোজার পিঠে হাল্কা থাপ্পড় দিতে লাগল। আদরের থাপ্পড় আর কি!! এরকমই হয় পুলকের মন মেজাজ ভালো থাকলে। সেদিন পাড়ার সবাই তাঁর গলার গান শুনে ফেলে। সে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে গোসল করতে করতে গান গায়।

গোসল শেষ পুলকের। মা ছেলে খেতে বসেছে। আফরোজা কথা তুললেন।

-তুই কি বিয়ে করবি না পুলক?

-কেন করব না মা? অবশ্যই করবো। (খুবই উৎফুল্লভাবে বলল পুলক)

-কবে করবি? আমি মরলে?

-তুমি মরলে যদি বিয়ে করি তাহলে অনেক দিক দিয়ে সুবিধা।

-কী? কি সুবিধা?

-রাগো কেন মা? লজিকালি চিন্তা কর। এখন যদি আমি বিয়ে করি। নতুন বউ আসবে। স্বাভাবিকভাবেই আমার নতুন বউকেই বেশি ভালো লাগবে। ওঁর আশেপাশেই ঘুর ঘুর করব। তোমার খোঁজখবর নেয়া কমে যাবে। তুমি আবার এতে মনে দুঃখ পাবা। আমাকে কিছু বলতেও পারবা না। কারণ তুমিও অনেক যুক্তিবাদী নারী। আবার ধর আমি খুবই আদর্শ ছেলে। বিয়ের পরেও পরিবর্তন হইল না আমার। এতে আবার তোমার নতুন বউমার অসুবিধা হল। তখন? আমি তো স্যান্ডুইচ!! এত ঝামেলা করার চেয়ে এখনি কি সব ভালো আছে না?

-তুই বেশী কথা বলস!!!

-আরে মা!!! সিরিয়াসলি!! আজকাল চারপাশে বিয়ে করে সুখী আমি কাউকে দেখি না। আমাদের অফিস এর এক আপু। সে ঝাল ছাড়া খেতে পারে না বলে জামাইকে বলসে মাংস ধুয়ে ধুয়ে খেতে। ব্যাটা খাইতেসেও!!! চিন্তা করতে পার!!

আফরোজা উঠে যাওয়ার ভঙ্গি করতেই পুলক বলল,

-যাইও না মা!! আরেকটা আসে। আরেকটা আসে!! এইটা মজার!! শুনো!! মেয়েদের!! হ্যাঁ!! মেয়েদের কিন্তু আবার অনেক কোড ল্যাঙ্গুয়েজ থাকে। ওগুলা না বুঝলে ওরা স্বামীদের পাশ নাম্বার দেয় না। ধর! রাত তিনটায় বউ ঘুম থেকে ডেকে বলল আমার ভালো লাগতেসে না। এই ‘ভালো লাগতেসে না’ কথা থেকেই তোমাকে বুঝে নিতে হবে যে তোমার বউ ছাদে গিয়ে চন্দ্র তারা দেখিতে চায়। বা ও এই রাত্র তিনটায় ঢাকা শহর ঘুরিয়া দেখিতে চায়। এই কথা তোমাকে অবশ্যই তাহাদের পেটের ভিতরে গিয়ে উদ্ধার করিতে হইবে। আর মা!!! আমি এমনিতেই সোজা ল্যাঙ্গুয়েজই বুঝি না। কোড কেমনে বুঝব বল!!! তুমি জেনে শুনে আমার এরকম সর্বনাশ করতে চাও!!

পুলক মায়ের দিকে শয়তানি দৃষ্টিতে তাকাল।

আফরোজা চরম বিরক্ত হয়ে উঠে চলে গেল। পুলক খ্যাক খ্যাক করে হাসতে লাগল।

এক এক দিন এরকম পাগলামিতেই দিন যায় পুলকের। তাছাড়া আজকের দিনটা তাঁর ভালই গিয়েছে। অফিস থেকে বের হয়ে ইতি-কে কল দিল। ইতি আর সে মিলে রিক্সায় সারা বিকাল ঘুরল।

সন্ধ্যার সময়টা একটু কেমন যেন!! মন খারাপ করে দেওয়ার মত ভালো লাগা আচ্ছন্ন করে মানুষকে। কারণ একমাত্র মানুষ-ই পারে মন খারাপকেও উপভোগ করতে। এই সন্ধ্যার মুহূর্তটাতেই মানুষ খানিক সময়ের জন্যে ইহ জগতের ছোট খাটো ব্যাপারকে তুচ্ছ করতে পারে। বর্ষার সময়েও এরকম অনুভূতি হয়।

রিক্সা চলছিল। পুলক আর ইতি সূর্য ডোবার সময়টাতে চুপ করে ছিল। কেউ কোন কথা বলেনি। মনের কোণে পড়ে থাকা দুঃখ নিয়ে মনে হয় একটু নাড়াচাড়া করে নিচ্ছিল যে যার মত।

ছোটবেলা থেকেই ইতি খুব প্রানবন্ত। উচ্ছল। ছেলেরা তাঁকে আলাদা গুরুত্ব দিত। খুব সহজেই ছেলেদের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব হয়ে যেত। কিন্তু কেন জানি ছেলেগুলো শুধু বন্ধু থাকতে চাইত না। একটু বড় হওয়ার পর বিরক্ত হয়ে ছেলেদের সাথে মিশা বন্ধ করে দিয়েছিল সে। এরপর অনেকদিন পর আসফাক এর সাথে পরিচয় হল। কেন জানি ওকে বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু করতে মন চাইল। এরপর তারা বিয়ে করল।

মানুষ সাধারণত যখন মনের দিক থেকে, নিজের অস্তিত্বের কাছে নিরাপদ থাকে তখন সাবধান কম থাকে। ইতি আসফাকের সাথে সুখী ছিল। তাই বোধহয় অসাবধানও ছিল। আসফাকের অনেক বন্ধু ছিল। ছেলে মেয়ে দুই দলেরই। এতে ইতির কোন সমস্যা ছিল না। বরং আসফাকের সব বন্ধুই ইতিরও বন্ধু হয়ে গিয়েছিল। সব বন্ধুরাই ঠিক ছিল। শুধু রানা ছাড়া। রানা দেখতে সুদর্শন ছিল। সম্ভবত আসফাক রানাকে এই জন্যই আগে থেকেই কম পছন্দ করত। রানা এমনিতেও একটু গায়ে পড়া ছিল। কিন্তু আসফাকের রানাকে অপছন্দ করা, রানার গায়ে পড়া ভাবের পেছনে অন্য উদ্দেশ্য এসব কিছুই জানত না ইতি। আর ইতিও ভুলে গিয়েছিল যে কিছু একটা সমস্যা হয় ছেলেদের তাঁর সাথে মিশলে। এরা স্বাভাবিক থাকতে পারে না। হয়তো নিজের অজান্তে ইতি নিজেই কোন সংকেত দেয়। আজো ধরতে পারেনি ইতি কী সে সংকেত। শেষমেশ রানাকে নিয়েই তাঁকে সন্দেহ করল আসফাক। শুধুমাত্র ইতিকে হারানোর জন্য সে অন্য আরেকটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়াল। ফলাফল ডিভোর্স। দুই বছরও টিকল না বিয়েটা। এরপর থেকে যেন নিজেকে নিয়ে গবেষণা করছে ইতি। অনেক পুরানো বন্ধুদের সাথে মিশছে সে। নতুন বন্ধু বানাচ্ছে। বেশিরভাগই ছেলে। সে জানতে চায় যে সে কী এমন করে যাতে করে এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

কোন একদিন কোন এক দুর্বল মুহূর্তে পুলককে সে তাঁর এই জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে বলেছে। পুলক তাঁকে আশ্বস্ত করেছে যে সে তাঁকে এ ব্যাপারে খুবই সাহায্য করবে। এবং এ নিশ্চয়তাও দিয়েছে যে সে ইতির প্রেমে পড়বে না। আর পড়লেও বলবে না। তারা দুজনেই খুব হেসেছে এইসব কথা বলতে গিয়ে।

মজার কথা হচ্ছে কয়েক দিনের মধ্যেই ইতির গবেষণার ফলাফল পুলক বের করে ফেলল। সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। ইতি খুব করে পুলককে বলেছিল যে একদিন বৃষ্টিতে ভিজবে। ইতির মধ্যে এ ধরনের ছেলেমানুষি রোমান্টিকতা ভরা। রিক্সাতে অকারণ ঘোরা। চা খেতে খেতে হাঁটা যাতে করে চা ছলকে পড়ে। গভীর রাতে ঘুরতে বের হওয়া(যা সে এখনো করতে পারেনি)। বৃষ্টির দিনে যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন!! ভেজা। মেয়ে মানুষ একা একা ভিজলে সারা দুনিয়ার লোক ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে শরীরের সব ভাঁজ দেখে ফেলতে চায়। শরীরটা কেমন রি রি করে ওঠে ইতির। সাথে কেউ থাকলে অতটা মনে হয় না।

এরকমই এক বৃষ্টির দিনে পুলক আর ইতি ভিজতে বের হল। পুলকেরও বৃষ্টি খারাপ লাগে না। কিন্তু সে স্বাভাবিক মানুষের মত আচরণ করতে পারে। মনে মনে বৃষ্টির আমেজ উপভোগ করতে পারে। কিন্তু ইতি যেন নিজেই বৃষ্টি। এই হাসছে। এই একটু মৃদু দৌড়াচ্ছে। আবার সিনেমার নায়িকাদের মত দুই হাত ছড়িয়ে দিচ্ছে যেন বৃষ্টিকে আলাদা করে ছোঁবে। পুলক মুগ্ধ দৃষ্টিতে ইতিকে দেখছে। এবং তক্ষুনি পুলক বুঝতে পারল কেন ছেলেরা ইতিকে শুধু বন্ধু ভাবতে পারে না।

হঠাৎ করে পুলকের মনটা খারাপ হয়ে গেল। রীতার খুব ইচ্ছা ছিল পুলকের সাথে বৃষ্টি-তে ভিজবে। তা আর হয়নি।

পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link পর্ব-২৩ Click This Link পর্ব-২৪ Click This Link পর্ব-২৫ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২০
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×