somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত প্রেমের গল্প- (পর্ব ৩৭)

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাতির ঝিলের ছোট ফুটওভার ব্রিজে দুইজন মানব-মানবী দাঁড়ানো। পুলক আর রিমকি। খুব বাতাস। রিমকির খুলে রাখা চুল উড়ছে। পুলক মুগ্ধ নয়নে ওকে দেখছে।

রাতের বেলা। অনেক বাতাস। দুজন দুদিকে মুখ ফিরিয়ে আছে। মাঝে মাঝে একজন আরেকজনের দিকে তাকাচ্ছে। হঠাৎ পুলকের খুব হাসি পেল। এ ধরনের দৃশ্য বাংলা টেলিফিল্মে দেখা যায় যে নায়ক নায়িকা দুইজন দুইদিকে ফিরে একে অপরের সাথে কথা বলছে। পুলকের খালি মনে হত এদের সমস্যা কী!! এরা স্বাভাবিক মানুষের মত কথা বলতে পারে না!! এরকম ত্যারা ব্যাকা হয়ে কথা বলার কী মানে!! অথচ এখন মনে হচ্ছে এটাই ঠিক।

হঠাৎ রিমকি বলল-
- আমি অনিককেই বিয়ে করব। সম্পর্কের দায়বদ্ধতা থেকে আমাকে তাই করতে হবে। কিন্তু ও কখনো জানবে না আমার ভেতরে কতটা তোলপাড় করে আমি ওঁর সাথে থাকব। একজনের বুকে শুয়ে আমি আরেকজনের কথা ভাবব।
পুলক কিছু বলল না। কী বলার থাকতে পারে তাঁর এখানে? সে শুনে যায়।
রিমকি বলে যায়।
- আমার সবকিছু ছেড়ে ছুঁড়ে তোমার কাছে চলে আসতে ইচ্ছা হচ্ছে।
রিমকির চোখ টলমল করছে।

পুলক ওঁর গালে হাত রাখল। সেই স্পর্শ। অনেকক্ষণ এরা যেন এইভাবে স্ট্যাচু হয়ে রইল। রাস্তা দিয়ে যাওয়া কিছু মানুষ এই দৃশ্য দেখল। সদ্য যৌবনপ্রাপ্ত ছেলেগুলো উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। বাকিরা যে যার মত চলে গেল।

রিমকির যতই পুলকের কাছে চলে আসতে ইচ্ছা হোক। একটা বিশাল দায়বদ্ধতা অনিকের প্রতি তাঁর আছে। একজন বন্ধু হিসেবে। একজন প্রেমিক হিসেবেও। ৫-৭ বছরের সম্পর্কে কত ভালো-খারাপ মুহূর্ত। কত স্মৃতি। চাইলেই এসবকে তুচ্ছ করা যায় না। যা হচ্ছে তা তো একদিক দিয়ে অন্যায়ই। কিন্তু অনিক তাঁকে কথা বলার সেই সুযোগ দিচ্ছে না। ওঁর সাথে কথা হয়ে উঠছে না।

রাতে অনিক ফোন দিল নিয়ম অনুযায়ী।
- কী অবস্থা? কী কর?
- এই তো মাত্র ফিরলাম। শুয়ে আসি।
- আজকাল খুবই ব্যস্ত থাক মনে হয়!!!
- তা তো একটু থাকি-ই। অফিস করে বাসায় আসতে আসতে রাত হয়ে যায়।
- না!!! আজকাল ব্যস্ততাটা একটু অন্যরকম।
রিমকি কিছুটা চমকে উঠল। অনিক কি কিছু বুঝতে পারছে? ও তো এরকম খোঁচাখুঁচি করে না। তক্ষুনি ওঁর মনে হল অনিককে তাঁর সব খুলে বলা উচিৎ।
- দেখ অনিক!! খোঁচাখুঁচি করে তো লাভ নাই। আসো সামনা সামনি কথা বলি। আমি তোমার বাসার সামনে আসতেসি। তুমি নামো। আমরা কথা বলি।
- না! আমি তোমার সাথে কোন কথা বলব না।
- আমি আসতেসি। তোমার ইচ্ছা হলে নেমো। নইলে নেমো না। কিন্তু আমি আসতেসি।
অনিক ফোন কেটে দিল।
রিমকি রিক্সা করে অনিকের বাসার দিকে গেল। রিমকির চোখ জ্বলছে। ফোনা বাজছে। পুলক। ফোন ধরল রিমকি। পুলককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে বলল,
- পুলক!! তোমাকে আমি কিছুক্ষণ পরে ফোন দেই? ওকে।
রিমকি অনিকের বাসার সামনে পৌঁছে গেছে। রিমকি ফোন দিল অনিককে। অনিক ফোন ধরল।
- আমি তোমার বাসার নিচে।
- আমি তো বলসি আমি নামবো না। তা তুমি বাসার নিচে থাক বা জাহান্নামে থাকো।
- আমি তোমার বাসার নীচে অনিক। একবার নামো!!
- আমি নামবো না।
রিমকি রিক্সা ঘুরাতে বলল।

এদিকে পুলক রিমকির গলা শুনেই বুঝেছে কিছু একটা ঘটেছে। তাঁর খুব অস্থির লাগতে থাকল। সে আর পারল না। সে রিমকির বাসার সামনে এসে দাঁড়ালো। ওকে এসএমএস করে রাখল। আমি তোমার বাসার সামনে। কিছুক্ষনের মধ্যে রিমকি রিক্সা করে ফিরল।

পুলকের হঠাৎ করে প্রচণ্ড রাগ উঠে গেল।
- এত রাতে তুমি কোথায় গেসিলা?
- অনিকের সাথে দেখা করতে।
- সেটা কি দিনে করা যেত না? তোমাকে কী এসব পাগলামি করেই যেতে হবে?
পুলকের চোখ জ্বলছে। সেখানে রাগ উৎকণ্ঠা সব ঠিকরে বেড়িয়ে আসছে। সে রিমকিকে বলল-
- তুমি বাসায় যাও। আমরা পরে এই নিয়ে কথা বলব। যাও বাসায় যাও।
চিৎকার দিয়ে বলল পুলক।
রিমকির চোখে পানি চলে আসল। একদিকে একজন মানুষের উদাসীনতা। অন্যদিকে আরেকজন মানুষের উৎকণ্ঠাভরা চাহনি। রিমকির জন্যে।

পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link পর্ব-২৩ Click This Link পর্ব-২৪ Click This Link পর্ব-২৫ Click This Link পর্ব-২৬ Click This Link পর্ব-২৭ Click This Link পর্ব-২৮ Click This Link পর্ব-২৯ Click This Link পর্ব-৩০ Click This Link পর্ব-৩১ Click This Link পর্ব-৩২ Click This Link পর্ব-৩৩ Click This Link পর্ব-৩৪ Click This Link পর্ব-৩৫ Click This Link পর্ব-৩৬ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×