somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত প্রেমের গল্প- (পর্ব ৩৮)

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বপ্নবিলাসী মানুষদের সমাজ কখনো ভালো চোখে দেখে না। কারণ স্বপ্নবিলসী মানুষেরা কখনো নিয়ম মেনে চলতে পছন্দ করে না। তাঁদের মধ্যে যদি নীতিবোধ থেকে থাকে তাহলে তাঁরা খালি যেটুকু করে তা হল, নিজের আত্মার কাছে প্রশ্ন করে যে আমি যা করছি তা কি ঠিক!! যদি উত্তর আসে যে ‘হ্যাঁ ঠিক’। তবে তাঁরা আর কিছু ভাবে না। কিন্তু সমাজ এই শোধ একটা না একটা সময়ে ঠিকই নিয়ে নেয়।

রিমকি একজন স্বপ্নবিলাসী মানুষ। তাঁর কাছে জীবন খুবই নাটকীয়। মনের কাছে যা ঠিক মনে হয় সে তা-ই করে। তাঁর যাকে ভালো লাগে সে তাঁর সাথে ঘুরে। তাঁর ইচ্ছা হল এক দঙ্গল ছেলের সাথে রাতে কোথাও ঘুরতে যাবে। সে চলে যায়। দরকার লাগলে রাত পাড় করেও আসে। এখন সমাজ কখনো একটা মেয়ের রাতে বাইরে কাটানোকে ভালো চোখে দেখবে না। তাঁকে কেউ অবশ্য কখনো আটকায়ওনি। অনিকও এসব ব্যাপারে উদারই ছিল সবসময়। রিমকির বড় ছোট সব ফ্রেন্ডরা ওঁর মতই বোহেমিয়ান কিসিমের। ওঁদের কাছে জীবনের মানে উপভোগ করা। এত চিন্তাভাবনা করে কী হবে!! কয়দিনের আর এই জীবন!! যে বয়সে চাঁদ দেখতে সুন্দর লাগে, ঐ বয়সে চাঁদ না দেখা হল চূড়ান্ত বোকামি। তা সে চাঁদ দেখার জন্য মাওয়া যেতে হলেও যেতে হবে। রাত পাড় হয়ে গেলেও কুছ পরোয়া নেই। কিন্তু সমাজ এসব বড় বড় চোখ মেলে দেখে। তাঁদের নিয়ম না মেনে যে চলে তাঁকে ধরার জন্য সমাজ বরাবরই বদ্ধপরিকর।

আশিক বসে আছে পুলকের বাসায়। মাঝে বেশ কয়েকদিন সে বন্ধুর খোঁজ নিতে পারেনি। আজকে সময় নিয়ে এসেছে। কিন্তু পুলক বেশ তাড়াহুড়ার মধ্যে আছে। মানে বেশ যেন একটু অস্থির ভাব। আশিক জিজ্ঞেস করল-
- তুই কি কোথাও বের হবি?
- হুম
- কোথায়?
- এমনিই বাইরে। তেমন কোথাও না।
- তোর কি ইদানীং কোন মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছে?
- কেন? (তীক্ষ্ণ কণ্ঠে পুলকের জিজ্ঞাসা)
- না!!! ছন্দা বলতেসিল যে তোকে আজকাল রিমকির সাথে দেখা যায় খুব
পুলক রেগে গেল। সে এ ধরনের কথাবার্তা পছন্দ করে না।
- তাতে ওঁর কী?
- না মানে!! (ইতস্তত করছে আশিক) ও তো রিমকির ফ্রেন্ড। রিমকিকে ভালোমতই চেনে। ওঁর মাথার ঠিক নাই। বলল সময়মত দূরত্ব না রাখতে পারলে অকারণ তুই কষ্ট পাবি।
পুলকের মাথায় আগুন জ্বলে গেল। সে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল।
- তোরা সবাই চাস আমি কষ্টে থাকি!!! তোরা কেউ আমার সুখ দেখতে পারিস না? আমি এই মেয়ের সাথে ভালো আছি। এটা তোদের সহ্য হচ্ছে না। আমি ওকে চিনি। আমি পুলক আহমেদ কোন মানুষকে যদি পছন্দ করি তাহলে বুঝতে হবে সে মানুষ খাঁটি। হ্যাঁ, ওঁর মাঝে পাগলামি আসে। কিন্তু কেউ কখনো আটকায় নাই বলে। I can take care of her. ছন্দাকে বলে দিবি সে যেন এসব নিয়ে চিন্তা না করে। বেশি চিন্তা করলে আমি ওঁর চিন্তা কমায়ে দেওয়ার ব্যাবস্থা করব।
ফুঁসতে ফুঁসতে পুলক এতগুলা কথা বলল।

আশিক বন্ধুর দিকে তাকিয়ে দেখল এক মোহাচ্ছন্ন ব্যাক্তিকে। এরকম মোহ কাটানোর মত ক্ষমতা তাঁর নেই। তাঁর এই বন্ধুকে সে খুব পছন্দ করে। আশেপাশে এত হাজার রকমের ভেজাল মানুষের মধ্যে পুলক একজন খাঁটি মানুষ। অমিশুক। অসামাজিক। কিন্তু খাঁটি। একটু সহ্য করতে পারলে, বুঝতে পারলে ওঁর মত মানুষ হয় না। সেই মানুষটার এরকম মোহাচ্ছন্ন ভাবে সে ঠিক বুঝতে পারল না যে তাঁর ঠিক কি করা উচিৎ। আশিক স্বল্পভাষী মানুষ। সে গুছিয়ে কথা বলতে পারে না। শুনতেই বেশি পছন্দ করে। ঠিক কী বলবে সে পুলককে তা বুঝতে পারল না। আশিক চলে গেল।

আশিক চলে যাওয়ার পরও অনেকক্ষণ পুলক একা একা ফুঁসতে ফুঁসতে লাগল। মেয়ে মানুষের এরকম একজন আরেকজনের পিছনে লেগে থাকা সে কখনো মানতে পারে না। জেনে না জেনে এরা মানুষকে খারাপ বলে দেয়। রিমকির বন্ধু হওয়ার পরও ছন্দা রিমকিকে চিনতে পারল না? হ্যাঁ, ও হয়তো আর সবার মত না। একটু পাগলাটে। তাই বলে ওকে খারাপ বলবে!! How dare she!! ওঁর সাথে থাকলে পুলক কষ্ট পাবে!!! আসলে ওরা কেউ ওকে সুখী দেখে সহ্য করতে পারছে না।

পুলক রিমকির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
রিমকি জিজ্ঞেস করল-
- রেগে আস কেন?
- এমনিই
- উহু!! কিছু হলেও তো চিনি তোমাকে।
- বেশী চিনা ভালো না।
- কি হইসে বল সূর্য?
নরম স্বরে বলল রিমকি। হাতটা রাখল পুলকের হাতে।

ঝাঁঝের সাথে পুলক এক গাদা কথা বলা শুরু করল।
- তোমার আসলে কোন ভাল বন্ধু নাই। তোমার কোন বন্ধুই ভালো না। যখন যা খুশী করে বেড়াইস। এমন একটা মানুষ ছিল না যে তোমাকে সামলাবে। বালের বয় ফ্রেন্ড জুটায়ে রাখস যে তুমি রাতে মাওয়া চলে যাও!! কিছু বলে না। মানুষ কী বলবে ভাবে না। আমি একজনকে ভালোবাসি। তাঁর ভালো মন্দের দায় দায়িত্ব তো আমাকেই নিতে হবে। আমার প্রেমিকাকে খারাপ বলবে মানুষ এরকম কাজ আমি কেন করতে দিব!! তোমাদের এই সুবিশাল উদারতার কোন মানে আমি খুঁজে পাই না। আমার সাথে ঘুরে বেড়াইতেস। তোমার প্রেমিকের কোন মাথা ব্যথা নাই। এই রকম ফালতু রিলেশনের কোন মানে তো আমি খুঁজে পাই না। এসব অসুস্থ উদারতা।

রিমকি কোণঠাসা হয়ে গেছে। কথাগুলো তাঁর সত্যি মনে হচ্ছে। কিন্তু তাঁকে কেউ কখনো এসব বুঝায়নি। অনিকও না। অন্য কেউও না। সে বলল-
- কেউ কিছু বলেছে আমাকে নিয়ে?
পুলক সব খুলে বলল। এরপর আরেক দফা ঝাড়ি দিল। রিমকি বাচ্চা একটা মেয়ের মত সব শুনল। মানল। কোন কারণে পুলকের এই অধিকারবোধ তাঁকে পুলকের প্রতি আরো আকর্ষিত করল। সুদর্শন এই মানুষটার দাবি নিয়ে কথা বার্তা শুনলে তাঁর ভিতরটা কেন যে এত কেঁপে ওঠে তা সে বুঝতে পারে না। নিজের সবকিছু সঁপে দিতে ইচ্ছা হয়। মন। শরীর। সব।

পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link পর্ব-২৩ Click This Link পর্ব-২৪ Click This Link পর্ব-২৫ Click This Link পর্ব-২৬ Click This Link পর্ব-২৭ Click This Link পর্ব-২৮ Click This Link পর্ব-২৯ Click This Link পর্ব-৩০ Click This Link পর্ব-৩১ Click This Link পর্ব-৩২ Click This Link পর্ব-৩৩ Click This Link পর্ব-৩৪ Click This Link পর্ব-৩৫ Click This Link পর্ব-৩৬ Click This Link পর্ব-৩৭ Click This Link
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×