somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ দু'জনার দুটি পথ দু'টি দিকে গেছে বেঁকে...(২৪)

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্ব (২৩)

তারপর শুরু হল নতুন ঝামেলা, মধ্যরাতে ফোন আসা শুরু, রিসিভ করলে কেউ কথা বলেনা, মা'র এবার চিল্লাচিল্লি মাঝরাতে, কার সাথে কি করে বেড়াস রাতে ঘুমাতে পারছিনা, এসব কি মাঝরাতে! ইত্যাদি বলে মা বকা শুরু করত, প্রথম প্রথম আমি চুপ মেরে থাকতাম পরে আমিও প্রতিবাদ করতে শুরু করলাম, মাকে কথার উপর বলে দিয়েছি আমার সাথে এমন কোন কারো সাথে পরিচয় নেই যে মাঝরাতে কেন দিনের বেলায় ডিস্টার্ব করবে এমন ফালতু কারো সাথে আমার পরিচয় নেই, আমাকে সহ্য করতে না পারলে বিয়ে দিযে দাও চলে যাই।

বললাম হুম বুঝলাম, আচ্ছা সেটাতো বললেনা, আমার মোবাইল নাম্বার কোথায় পেলে? আমি যে এখন ব্যাংকে জব করছি সেটাইবা জানলে কি করে?
উত্তরটা বেশ মজার এবং অবাক করা ছিল, সে জানাল " তোমার এবং আমার প্রিয় গল্পকার পলাশ ভাইয়া থেকে।" অবাক হলাম বটে, পলাশ ভাইয়া মানে ভাইয়ার বন্ধু খুব ভাল গল্প লিখেন সেই পলাশ ভাইয়া!! রুমি জানাল হুম...

পলাশ ভাইয়ার সাথে রুমির পরিচয়টা কিছুটা কাকতালিয়, পলাশ ভাইয়া সবসময় ছোটদের সাথে মজা করে চলেন, পিচ্চিদের দেখলেই উনি তার সাথে কথা বলবেনই, আর ছোটরাও খুব সহজে পলাশ ভাইয়ার সাথে মিশে যায়, পলাশ ভাই এর সেই গুণটা যে আছে সেটা আমার জানা ছিল, ওনি যে এলাকায় থাকতেন সেখানে একদল পিচ্চি আছে যাদের সাথে পলাশ ভাইয়ার খুব বন্ধুতা, প্রায়ই চকলেট এটা সেটা গিফ্ট দিয়ে জামিযে রাখেন সেসব পিচ্চিদের, এসব আমিই রুমিকে বলেছিলাম একদিন।

রুমিরা যখন ভাড়া বাসায় চলে এল আরো এদিকটায় মূল শহরের দিকে তার বড়ভাইয়ার পিড়াপিড়িতে, তখন সাথে তার চাচাত ভাইকেও নিয়ে এসেছিল, বাসা চেন্জ এর টুকটাক হ্যাল্প লাগবে বলে, নাম ছিল মুকিম, হাই স্কুলে পড়তো, সিক্স কি সেভেনে হবে, রুমির মা তাকে রেখেই দিলেন, এখানে ভাল স্কুলে পড়াও হলো আর রুমিদের ছোট একটা ভাই এর দরকারও ছিল, টুকটাক অনেক কাজ যেগুলো বয়স্ক বা মহিলাদের দিয়ে হয়না্, নিচের তলার তামান্না ষ্টোর থেকে হঠাৎ প্রয়োজনীয় কিছু আনতে হলে সেই দায়িত্বটা মুকিমের উপরই বর্তাল।

স্কুলটা একটু দূরেই ছিল, মুকিম কখনো বাসে কখনো রিক্সায় যাওয়া আসা করত, যদিও রিক্সা ভাড়া বরাদ্ধ ছিল তবুও সে বাসে গিয়ে টাকাটা সেইভ করত, আর সেই পথেই পলাশ ভাইয়া যেতেন কলেজে, উনি শিক্ষকতা করতেন, যদিও উনার আচরণ আর শরীর গঠন দেখে ষ্টুডেন্টরা ভুল করে তাদের সহপাঠি মনে করারা সম্ভবনাই বেশী, এমনই একদিন যাওয়া আসার পথে পরিচয় হয় মুকিম এর সাথে এবং সম্পর্কটা বড় ভাই এবং বন্ধু এই দুই মিলে অনেকটা ঘনিষ্টই হয়ে গেল।

পলাশ ভাই প্রায়ই আসতে লাগলেন মুকিম এর খোঁজে, তবে কখনো রুমিদের বাসার প্রবেশ করতেননা, কলিং ব্যাল টিপে সরে দাঁড়াতো একটু দুরুত্বে সিড়িতে, তারপর মুকিম থাকলে দু'জন বেড়ীয়ে পড়তো, আশে পাশে ঘুরে আসতো, আর মুকিম বাসায় না থাকলে দরজা খুলে একটা মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসতো, মুকিম বাসায় নেই বলে, পলাশ ভাইয়া নিচের দিকে তাকিয়ে শুনতেন শব্দগুলো, কখনো তাকিয়ে দেখেননি কন্ঠ টা কার।

রুমি প্রায়ই শুনতো কলিং ব্যাল এর পর মুকিম বলে কেউ একজন ডাক দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, মুকিম সেন্টো গেঞ্জির উপর টি শার্টটা গায়ে দিয়ে বোতম লাগাতে লাগাতে মনের আনন্দে বের হয়ে গেল, যেন কোন সহপাঠি বন্ধু ডাক দিল, বিকেলে ক্রিকেট খেলবে বলে, কি জানি হয়তো সত্যিই সত্যিই ক্রিকেটই খেলতে গেছে হয়তো।

এমনই একদিন মুকিম ছিলনা বাসায়, রুমিরও হঠাৎ মনে হল পরিচয় হবে লোকটার সাথে, বয়সের এতো ব্যাবধান থেকেও কিভাবে তারা বন্ধু হল, নিশ্চয় কোন রহস্য আছে! রুমি দরজায় দাঁড়িযে সেদিন বলেনি মুকিম নেই, বলল বাসায় আসুন, প্রতিদিন বাইরে থেকে চলে যান, আজকে আসুন বাসায়, চা খেতে খেতে পরিচয় হওয়া যাবে, পরিচয় পর্ব হতে গিয়ে রুমির মনে হল ইনি পলাশ ভাইয়াই হবেন গল্প পড়ার সুবাদে আগে থেকেই চেনা, তাই রুমি বলল " আমার মনে হয় আপনাকে আমি অনেক আগে থেকেই জানি, আজকে চেনা হল, আপনার গল্পের ভক্ত আমি আর শাকিল, খুব ভাল লাগে আপনার গল্পগুলো, ইত্যাদি।" পলাশ ভাইয়াও কিছুটা অবাক হলেন, এমন কাকতালিয় পরিচয় হবার কারনে।

পলাশ ভাইয়া এখন আর দরজা হতে ফিরিয়ে যাননা, মাঝের মধ্যে চা পর্বও চলে, সেই ফাঁকে রুমি শাকিলের খবরটাও নেয়া হযে যায়, এদিকে পলাশ ভাইও শাকিল এর ল্যাটেষ্ট খবরাখবর রাখতে লাগলেন, চা এর কাপে চুমুক এর সাথে এমন বাড়তি কিছু একটা থাকলে চা এর স্বাদটা একটু বেশীই হয় বৈকি!

বিষয়টা ফুল পর্যন্ত গড়াল, মাঝের মধ্যে ফুলও আসতে লাগল, রুমির মা বাবার সাথে পরিচয় ও হল, রুমি চাইলে এড়িয়ে চলতে পারতো কিন্তু এমনটা হলে শাকিল এর খবরা খবর আর পাওয়া যাবেনা, তাই ফুল গুলো নিতেই হতো।

চলবে..........

পরের পর্ব(২৫)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:৫১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×