somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি আরবে জীনের পাহাড়ে অলৌকিক রহস্য নাকি চোখের ভ্রম!

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গত ০৯ জানুয়ারি দৈনিক আজাদীর আগামীদের আসর পাতায় একজন লেখক সৌদি আরবের মদিনা থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ওয়াদি আল বায়জা বা জিনের পাহাড় নামক সড়কে বন্ধ গাড়ি কিংবা পানি ঢাললে ঢালু দিকে না গড়িয়ে উপরের দিকে গড়ানোকে অলৌকিক বলেছেন। আমি লেখক বা ওই লেখার সমালোচনা করবো না, শুধু মাত্র বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা করছি।
উনি একটি জায়গায় লিখেছেন, ‘বিষয়টা অনেকে মনে করেন, এটা কোন জিনের কা-। আবার অনেকের মতে, সেখানকার পাহাড়গুলোতে এমন কিছু চৌম্বক শক্তি রয়েছে যা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে কাজ করছে। যেখা যায়, সেখানকার রাস্তায় পানি ঢাললেও ঢালু দিকে না গড়িয়ে বরং ওপরের দিকে উঠছে। সেক্ষেত্রে এই চৌম্বক শক্তি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। কারণ পানির মধ্যে চুম্বরে আকর্ষণ করার মতো কিছু নেই।’ অর্থ্যাৎ, তিনি বুঝিয়েছেন, ‘মাধ্যাকর্ষণ এখানে কাজ করছে না আর অতি-প্রাকৃতিক কোনো ব্যাপার আছে! কিন্তু বিজ্ঞানের কাছেও একটি প্রমাণিত সহজ ব্যাখ্যা আছে।
এইটা হল “ম্যাগনেটিক হিল” বা “গ্রাভিটি হিল” এর কারণ। এটা এক ধরণের দৃষ্টি ভ্রান্তি (optical illusion)। চোখে দেখার ভুলের কারণে এমন হয়। আসলে গাড়ি ঢালু রাস্তা বরাবরই নামে। কিন্তু চোখে দেখার ভুলের কারণে মনে হয় গাড়ি সোজা রাস্তা দিয়ে একা একাই চলছে (ইঞ্জিন বন্ধ থাকা অবস্থায়) অথবা মনে হয় উঁচু থেকে নিচুতে গাড়ি নামানোর সময় ইঞ্জিন চালাতে হচ্ছে (অথচ এক্ষেত্রে কিন্তু ইঞ্জিন বন্ধ রাখালেও গাড়ি চলার কথা ছিল) তানা হলে গাড়ি গড়িয়ে উঁচুদিকে চলে যাচ্ছে। এসব দেখে মনে হয় অভিকর্ষ বল উল্টা দিকে কাজ করছে।
বিষয়টা একটু সহজ ভাবে বুঝিয়ে বলি, আমরা আমাদের অবস্থানের কোণ বুঝতে ইন্দ্রিয় ব্যবহার করি, নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এক্ষেত্রে দৃষ্টি ব্যবহার করি। সাধারণত এসব রহস্যময় জায়গা পাহাড়ী এলাকায় পাহাড় কাটা রাস্তায় হয়। এসব জায়গা থেকে আমরা দিগন্তরেখা (Horizon) ঠিকমত দেখতে পারি না, আর দিগন্তরেখাকে আমাদের মস্তিস্ক প্রসঙ্গ কাঠামো হিসেবে ব্যবহার করে। এজন্য নিচের দিকে নামতে থাকা গাড়িকেও আমরা মনে করি পাহাড় বেয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। এখানে প্রাকৃতিক নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে না এখানে, অতিপ্রাকৃতিকও কাজ করছে না; এটা শুধু একটা দৃষ্টিভ্রম। মূলত কোন জায়গার দৃশ্য যদি এমন হয় যেখানে দিগন্ত (Horizon) সরাসরি দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে উঁচু নিচু নির্ধারনের জন্য কোন রেফারেন্স থাকে না। ফলে উঁচু দিক কে নিচু আর নিচুু দিক কে উঁচু বলে মনে হয়।
আপনার মস্তিষ্ক হয়তো তো জানা মহাবিশ্বের সবচেয়ে জটিল বস্তু, তবে এটাও বোকা বনতে পারে। এর পরীক্ষা আপনি নিজেও করতে পারেন। একটা দুই ফিট লম্বা যন্ত্র পাওয়া যায় যা দিয়ে আপনিও এর পরিমাপ করতে পারেন। যন্ত্রটার নাম Carpenteros Level. অথবা দেখে নিতে পারেন, https://www.youtube.com/watch?v=pUasuxHZXZo.
এর মানে এই না যে অতিপ্রাকৃতিক কোনোকিছুর অস্তিত্ব নেই। পৃথিবীজুড়ে এমন এৎধারঃু যরষষ/ গুংঃবৎু ংঢ়ড়ঃ/ ঝঢ়ড়ড়শু যরষষ অসংখ্য। পাশের দেশ ভারতের লাদাখেও আছে। আমেরিকার মেরিল্যান্ডেও আছে, লোকে মনে করে আমেরিকার গৃহযুদ্ধে নিহতদের আত্ম এই অস্বাভাবিকতার কারণ! ব্যাপারটা বেশ মজার। নিচে পেনসিলভ্যানিয়ার পিটসবুর্গ থেকে নেয়া একটি ভিডিও লিংক দিচ্ছি। এখানে কার্পেন্টার লেভেল দিয়েও ব্যাপারটা বোঝানো হয়েছে। দেখুন,
https://www.youtube.com/watch?time_continue=56&v=M2lAqYZ6N5o
যেখানেই কাউকে এই অলৌকিক ব্যাপারটা প্রচার করতে দেখবেন, অনুগ্রহ করে তাদেরকে সুন্দর করে ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেবেন।

লেখক: আকাশ ইকবাল
প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক


সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৬
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×