বিঃ দ্রঃ ছোট্ট বাবুরা এখানে আসা দরকার নেই। আমার জীবনের প্রথম গল্প।
---
........
.........
‘আমি ফিরে এসেছি, আমাকে টেনে নাও তোমার বুকে।’ আমাকে দেখেই সে বললো।
কথাগুলো শোনে আমি রাগে ফেটে যাচ্ছিলাম। নিজেকে সামলে নিয়ে কোন রকম ভূমিকা না করেই বললাম,‘আবার কোন মতলবে এসেছো তুমি এতো বছর পর?’
আমার কথাগুলো সে আমলে না নিয়ে হাসি হাসি মুখ করে বললো,‘কি বলছো এসব? আমি না তোমার শুভাকাঙ্খী। আর একজন শুভাকাঙ্খী কি তার প্রিয়জনের খবর নিতে পারে না?’
আমি আগের মতোই কঠিনস্বরে জবাব দিলাম,‘ না, পারে না।’
সে ভাব জমানো চেষ্টা করলো আমার সাথে। ‘ কি হয়েছে তোমার? তুমি এরকম কঠিন করে কথা বলছো কেন? তুমি তো এরকম ছিলে না এর আগে।’
‘আমি কি রকম ছিলাম? এর জবাব শুনতে চাই না তোমার কাছ থেকে।’
‘কিন্তু একসময় তো ঠিকই চাইতে?’
‘হ্যা চাই না। কিন্তু এখন চাই না।’
আমার কথায় চুপ হয়ে গেলো সে একদম। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর সে এবার তার প্রধান হাতিয়ারটা ব্যবহার করলো এবার। এ হাতিয়ারের কাছে সব পুরুষই নাকি হার মানে- এমন একটা কথা প্রচলিত আছে।
মেয়েদের প্রধান হাতিয়ার নাকি তাদের কান্না। সে কান্নাভরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,‘ একসময় তো আমি ঠিকই আপন ছিলাম তোমার। তখন তো তুমি আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারতে না।’
সে ভেবেছে তার এসব কথা শুনলে আমি হয়তো তাকে বুকে টেনে নেবো সব ভুলে। কিন্তু আমি কি করে ভুলে যাবো তার দেয়া আঘাতগুলো? তাই তার কথায় কর্ণপাত না করে বললাম,‘ এখন এসব শুনিয়ে কোন লাভ নেই। কারণ, অন্যের ব্যবহার করা ব্রাশের মতোই তুমি এখন আমার কাছে। আর জানোই তো কোন বোকাও অন্যের ব্যবহার করা ব্রাশ ভুলেও ব্যবহার করে না।’
আমার জবাবটা বোধহয় সহ্য হলো না তার। সে কাদতে কাদতে বলেই ফেললো,‘ তুমি বলতে পারলে এতবড় কথাটা।’
‘হ্যা’, শান্তভাবেই বললাম,‘ তুমিই তো আমাকে শিখিয়েছো এগুলো? শুনতে খারাপ লাগছে, তাই না?’
‘তো লাগবে না, এরকম করে বললে।’
‘আমারও লেগেছিল তখন, যখন তুমি এরকম করে আঘাত করেছিলে আমাকে। আচ্ছা, আজ তুমি একটা প্রশ্নের সত্যি করে জবাব দেবে?’ বলেই আমি পুরনো অ্যালবাম বের করে এনে তার প্রেমিকের ছবি দেখিয়ে বললাম,‘তুমি আমাদের দুজনের মধ্যে কাকে ভালবাসতে?’
ও একবার ছবির দিকে, আর একবার আমার দিকে তাকিয়ে দেখলো, তারপর চোখ নীচে নামিয়ে খুব ধীরে বললো,‘তোমাকে।’
‘যদি সত্যি আমাকে ভালবাসতে, তাহলে বিয়ে করলে না কেন?’
‘আসলে ও আমাকে ওর ভালবাসার ঝালে এমনভাবে জড়িয়ে রেখেছিল যে, শত চেষ্টা করেও বের হতে পারি নি তখন।’
‘তো এখন কেন এসেছো?’
‘বিয়ের পর বুঝতে পারলাম ওর আসল চরিত্র। ওর জীবনে আমিই প্রথম নারী নই। রোজ রোজ নিত্য নতুন মেয়ে আসতো আমাদের বেডরুমে। কিছু বললেই ও খুব মারধর করতো আমাকে। ওর বাবা মাও সহ্য করতে পারতো না আমাকে। তাদের ধারণা, আমিই নাকি তাদের ছেলের জীবনটা এলোমেলো করে দিয়েছি।
একসময় ওর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বলেই ফেললাম,‘ আমি তোমাকে বিয়ে না করে ওকে বিয়ে করলে, অনেক বেশী সুখী হতাম।’
আমার কথা শোনে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো আমার স্বামী নামক পশুটা,‘তোকে কে মানা করেছিল .......নকী। তোর মন চাইলে, তুই গেলি না কেন তোর .....তারের সাথে।’
আমিও কম নয়, আমিও বলে দিলাম আমার স্বামী নামক পশুকে,‘আমি তো যেতেই চেয়েছিলাম, কিন্তু তুই তো যেতে দিলি না ....য়োরের ...........য়োর। ...........দেয়ার সময় মনে ছিল না কুত্তা।’
‘চুপ .....গী, একদম চুপ। আর কোন কথা বলবি না। বেশী কথা বলবি তো একদম শেষ.......’বলেই সে হাসতে লাগলো দাত বের করে।
‘আমাকে দাত দেখিয়ে কোন লাভ নেই। আমি তোকে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বো।’ আমি রেগেমেগে বললাম।
‘তুই আমার ......লটাও ছিড়তে পারবি না।’
‘তুই দেখ শুধু আমি কি করতে পারি?’ বলেই আমি পা বাড়ালাম ঘর থেকে বের হতে।
‘কই যাচ্ছো? যাবার আগে এটা দেখে যাও।’ ও ওর মোবাইলটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলো। মোবাইলে যা দেখলাম, তা দেখে ওকে বলার মতো ভাষা খুজে পেলাম না।
মোবাইলে আমার আর ওর আবেগঘন মুহূর্তের দৃশ্য ধারণ করা ছিল। আমি কিছু বলার আগেই ও অনেকটা জোর করে কেড়ে নিলো মোবাইলটা আমার হাত থেকে।’
-------------------------চলবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১১ সকাল ৯:৩৯