
Click This Link ( ১ম পর্ব)
Click This Link ( ২য় পর্ব)
কিন্তু ভাগ্য এভাবে মিলির সাথে প্রতারণা করবে তা কে জানতো!!সচারচর নাজিমুদ্দিন স্যার যা করেন না আজ তিনি তাই করছিলেন। স্বয়ং নাজিমুদ্দিন স্যার নিজেই ভাবুক দৃষ্টিতে দরজার দিকে তাকিয়েছিলেন। মিলি ঢুকেই আড়চোখে স্যার কে দেখে পড়িমরি করে পেছনের সারিতে চলে গেল। মিলির ধারনা করছিল আলেকজেন্দার বো ও তাকে ফলো করছে। কিন্তু আশায় গুঁড়েবালি। নাজিমুদ্দিন স্যার আলেকজেন্দার বো কে দেখে বড় করে গলা খাঁকারি দিলেন। তাতে যেটা হল আলেকজেন্দার বো দরজাতেই আটকা পরে গেল। আর ক্লাসের বাকি স্টুডেন্টদের কথা কি আর বলব ??পারলে তারা ক্লাসেই একটা কমেডি ক্লাব বানিয়ে ফেলে!!!
ক্লাসের এই দুরাবস্থা দেখে নাজিমুদ্দিন স্যার আরও দশ গুন বড় গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন,” হঁইসে টা কি আঁপনাদের? জীবনে মাঁনুষ দেখেন নাই? যে কাঁজ করতে দিছি সেটা করেন। ৩২৪ নাম্বার পেঁইজের কেইসটা পড়েন।“ এই কথা শুনে ক্লাসে আবার সুনসান নীরবতা ফিরে আসল। আর ওইদিকে নাজিমুদ্দিন স্যার এর নাকি সুরের কথা শুনে আলেকজেন্দার বো এর মারাত্মক খারাপ অবস্থা। পারলে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খায়!!!
এবার নাজিমুদ্দিন স্যার পরলেন আলেকজেন্দার বো কে নিয়ে,” আজ্ঞে, আঁপনাকে তো এই ক্লাসে প্রথম দেঁখলাম। মুখ ভর্তি হাঁসি!! হাঁসির কি হইল এই খানে? রঙ্গশালা তো খুঁলি নাই, তাঁই না?
আলেকজেন্দার বোঁ বলল, “ ক্ষমা করবেন জনাব। ভুলক্রমে হেসে ফেলেছি। “
আলেকজেন্দার বোয়ের এই ভদ্র-নম্র আচরণে নাজিমুদ্দিন স্যার মুগ্ধ না হয়ে পারলেন না।জিজ্ঞেস করলেন,” কঁত দিন পর ক্লাসে আঁসলেন?এঁই কোর্সে ১৫ টার মঁতো ক্লাস নিঁয়ে ফেঁললাম অথচ আঁপনাকে কোনদিন দেখি নাই, তাঁই না? রোঁল নাম্বার কত?
“ জনাব, রোল নাম্বার কি জিনিস? “
“ ওঁ ওঁ ওঁ............রোঁল নাম্বার কি জিনিস সেটাই জাঁনেন না? নাঁম বলেন? “
আলেকজেন্দার বো একটু সাহস পেয়ে বলল,“আজ্ঞে, আমার নাম আলেকজেন্দার বো । আমি অন্য dept. এর। আপনার অনেক প্রশংসা শুনেছি। তাই বন্ধুর সাথে আপনার ক্লাস করতে এসেছি।
“নাঁমটা তো অনেক বাঁহারি। আঁলেকজেন্দার বোঁ !!!যাঁইহোক, আপনার বঁন্ধুটা কে? চেঁহারাটা একটু দেঁখে রাখি।“
এই বলে নাজিমুদ্দিন সাহেব সামনের দিকে তাকালেন এবং হতভম্ব হলেন। কারণ ক্লাসের সবাই কেইস পড়া বাদ দিয়ে হাসিমুখে এই নাটক দেখছিল। নাজিমুদ্দিন স্যার আবার গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন,” নাঁটক দেঁখে কি লাভ? নাঁটক তো পরীক্ষায় দেঁব না, তাঁই না? ৩২৪ নাম্বার পেঁইজের কেইসটা পঁড়তে বলছিলাম। কঁথা কাঁনে যায় না??”
আর ওইদিকে আলেকজেন্দার বো মিলিকে দেখিয়ে নাজিমুদ্দিন স্যার কে বলল, “ জনাব, উনি আমার বন্ধু।উনার মুখেই আপনার প্রশংসা শুনেছি।“
মিলি ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে ছিল।কারণ কোন কিছুই প্ল্যান মত হচ্ছিল না। আর দেখিয়ে দেওয়ার পর মিলির চেহারা ভয়ে লাল হয়ে গেল। মিলি অনেক ফরসা তো তাই ভয় পেলে চেহারা লাল হয়ে যায়!! মিলিকে দেখে নাজিমুদ্দিন স্যার অনেক অবাক হলেন কিন্তু কিছু বললেন না কারণ তিনি মেয়েদেরকে কোন প্রশ্ন করেন না। এই দিক থেকে মিলির লাভই হল কারণ যদি মিলির বদলে কোন ছেলে হতো নাজিমুদ্দিন স্যার এর প্রশ্নবাণে কেঁদেই দিত।
নাজিমুদ্দিন স্যার আর কি করবেন? আলেকজেন্দার বোকে উনার খারাপ লাগে নি। তাই বললেন,” ক্লাঁস করতে যেঁহেতু আঁসলেন সেঁহেতু এক জাঁয়গায় বসে পরলেই ভাল হঁয়, তাঁই না?”
“ জনাব, শুকরিয়া!!” বলে আলেকজান্দার বো দ্বিতীয় সারিতে একটা খালি সিট ছিল সেটাতে বসে পড়ল।
কথায় আছে, পড়বি তো পড় মালির ঘাড়ে। আর আলেকজেন্দার বো গিয়ে পড়ল মিনারের ঘাড়ে। কারণ মিনারের পাশের সিটেই বসেছিল আলেকজেন্দার বো। এতক্ষণ বসে বসে মিনার নাটক দেখছিল। মিলিকে দেখিয়ে দেওয়ার পর শিউর হল যে এটাই সেই বিড়াল রাজকুমার। রাগে মিনারের গা জ্বলে যাচ্ছিল। মিনার আস্তে আস্তে আলেকজেন্দার বোকে বলল,” আপনিই সেই বিড়াল রাজকুমার। আপনি না চলে গিয়েছিলেন আবার আসলেন কেন?
মিনারকে অবাক করে দিয়ে বিড়াল রাজকুমার বলল,” দুঃখিত, জনাব। আমি গোপন কথা কাউকে বলি না!!”
“ ও আচ্ছা, এটা গোপন কথা!! আমি মিনার। মিলির বয়ফ্রেন্ড। আর সেজন্যই গোপন কথা জানার রাইট আমার আছে। এখন বলেন আপনি ফিরে আসলেন কেন?”
“ আমি যে মিলিকে ভালবেসে ফেলেছি। সুন্দরীকে অনেক দেখতে ইচ্ছা করছিল তাই ফিরে এসেছি। “
এমনিতেই কয়েকদিন ধরেই মিনারের মন-মেজাজ খারাপ কারণ মিলির সাথে ঝগড়া চলছিল। আর আজকে মিলি দেখিয়েই দিল যে সে বানিয়ে বানিয়ে কথা বলে নি। বিড়াল রাজকুমার নামে সত্যি সত্যি কেউ আছে। আর আলেকজেন্দার বো এর চ্যাটাং চ্যাটাং কথা শুনে মিনারের মাথায় রক্ত চড়ে গেল। মিনার ঠিক করল সে মিলির সাথে ব্রেক আপ করবে। মিলি থাকুক তার বিড়াল রাজকুমারের সাথে!! মিনার করল কি ব্যাগ গুছিয়ে হুড়মুড় করে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেল। ঘটনার আকস্মিকতায় আলেকজেন্দার বো থ হয়ে গেল।পেছন থেকে মিলিও দেখল মিনার ক্লাস থেকে বের হয়ে গিয়েছে। মিলি কিছুই ভেবে পেল না। তার একটু একটু ভয় লাগছিল। পাঁচ –ছয় মিনিট পর মিলির মোবাইলে একটা এস এম এস আসল। তাতে বড় করে লেখা,” BREAK UP”.
ক্লাস শেষ । মিলি ও আলেকজেন্দার বো রাস্তায় হাঁটছে।মিলির মন খারাপ। মিনার এ রকম করবে মিলি ভাবতেও পারেনি। মিলিও ঠিক করল যে যতদিন পর্যন্ত না মিনার সরি বলবে ততদিন মিলি মিনারের সাথে কোন কথা বলবে না। বিড়াল রাজকুমার তাকে ভালবাসে কিন্তু মিলি তো আর বাসে না। এই সহজ সমীকরণ ও মিনার বুঝল না ।খালি দেমাগ দেখায়!!!
আর ওইদিকে ঘটছে আরেক ঘটনা। যে ডাইনী বুড়ী আলেকজেন্দার বো কে বিড়াল বানিয়ে রেখেছিল তার ঘুম ভেঙ্গে গেছে। আসলে হয়েছিল কি ডাইনী বুড়ী আলেকজেন্দার বো কে বিড়াল বানিয়ে সুখের ঘুম দিয়েছিল। আলেকজেন্দার বিড়াল থেকে আবার মানুষে রূপ নেওয়াতে ডাইনী বুড়ীর ঘুম ভেঙ্গে গেছে। রাগে ডাইনী বুড়ী কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছিল না। তখন ডাইনী বুড়ী বসল তার জাদুর আয়না নিয়ে। গত কাল থেকে ডাইনী বুড়ী আয়নাতে আলেকজেন্দারকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু পাবে কিভাবে? আলেকজেন্দার তো ঢাকা শহরে। এত মানুষ , এত দালান কোঠা, এত ঘিঞ্জি!!! তাই আয়না ভাল পারফর্ম করতে পারছিল না। হঠাৎ আয়না সবুজ হয়ে গেল। ডাইনী বুড়ী আয়নায় তাকিয়ে দেখল, আলেকজেন্দার বো আর একটা সুন্দর মেয়ে রাস্তায় হাঁটছে। ভার্সিটির রাস্তা ছিল তো তাই ঘিঞ্জি কম!! তাই আয়না জায়গা মতো পারফর্ম করতে পেরেছিল। ডাইনী বুড়ী বুঝতে পারল যে এই সেই মেয়ে যে কিনা বিড়াল রাজকুমারকে মানুষ বানিয়েছে। প্রচণ্ড রাগে ডাইনী বুড়ী তার লম্বা হাত দিয়ে আয়নায় একটা থাবা দিল। সাথে সাথে আয়নায় একটা ম্যাপ চলে আসল। ওটা নিয়ে ডাইনী বুড়ী অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। হাঁ হাঁ হাঁ......হিঁ হিঁ হিঁ......হোঁ হোঁ হোঁ............ওঁ ওঁ ওঁ ................ইঁ ইঁ ইঁ...ই ই ই.........
চলবে……………………………………………………
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১২:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




