somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবশেষে বান্দর বন পলায়ন

০৪ ঠা মে, ২০১৫ রাত ১২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আর মাত্র কয়েকটা দিন সামনে আছে তারপরই শুরু ফাইনাল ইয়ার পরিক্ষা । কি আর করার এ বছর পড়া লেখায় তেমন মনযোগ দিতে পারেনি অঞ্জলির জন্য । যেদিন থেকে অঞ্জলি প্রথম কলেজে আসলো সেদিন থেকেই ওর সঙ্গ পেয়ে লেখা পড়া সব গুলিয়ে খেয়ে বসেছি ।কলেজে যেতুক সময় থাকি সে সময়তুক সামনে শুধু অঞ্জলি আর বাসায় এসে যে সময়তুক অঞ্জলি সারা পাই সে সময়তুকও সামনে এসে হাজির হয় ওর ভাবনা । কি করার দেখি মিরাজকে একটা ফোন দিয়ে ওর কাছ থেকে কিছু সহযোগিতা পাওয়া যায় কিনা ।
বাহ! আমি বোকার মত কি ভাবছি এত রাতে ঘুমের ঘরে মিরাজকে ফোন দিলে ওতো আমাকে কোন সহযোগিতা করবেই না বরং উল্টো পথ দেখাবে তার চেয়ে বরং কাল সকালে কলেজে ওর সাথে দেখা করে ওরকাছ থেকে সহযোগিতা নিতে হবে ।

সকালে নাস্টার টেবিল বাবার প্রশ্ন কিরে বাবা দিপু তোর কলেজ ঠিক মত হচ্ছে তো ? দেখিছ এবারো পিছনের দুবছরের মত ফেল মারিছ না । আর এবার ফেল মারলে বুঝইতো বাচাধণ সোজা আমার ব্যবসা দেখা শোনার জন্য তোমাকে বান্দরবন আমার যে গদি ঘর আছে সেখানে পাঠিয়ে দিব । ওখানে তোমার কাজ হবে আমার ব্যবসা সামলানো আর বড় বড় মশার সাথে রাত দূপরে খেলা করা ।

খাওয়ার টেবিলে বসে বাবার মুখে বান্দরবণ যাওয়ার কথা শুনে মুখে আর খাওয়া ওঠছে না । কেননা যখন ছোট ছিলাম তখন একবার মামা পুলিশের চাকুরি করা অবস্থায় কি একটা অনন্যায় যেন করেছিলেন তাই তাকে ঢাকা থেকে বদলি করে বান্দর বণ পাঠাইয়েছিলেন । মামাকে তখন আমি জিজ্ঞাসা করছিলাম মামা তোমায় ঢাকা থেকে বান্দর বন পাঠাইলো কেন ? মামা আমার এ প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন তার বসের কি একটা কাজ যেন তাকে দিয়েছিল সে কাজটি মামা করতে পারেনি তাই তার বস রাগে রাগনিত হয়ে মামার নামে মিছে কথা তার ওপরের লেবেলের বসদের বলে তখন তাকে বান্দবণ ট্রান্সপার করান । মামা আরো বললেন যারা সরকারি পুলিশ বা অন্য কর্মকতা তারা কোন অনন্যায় করলেই তাদের সোজা বান্দর বণ বদলি করে দেন ।ওখানে মশা গুলো নাকি অনেক বড় বড় আর ঐ সব মশার কামরে নাকি মানুষের শরীরে খুব মারাক্ত বড় ধরনের রোগও হয়, এমনকি সে রোগে নাকি অনেকে মারাও যায় ।

যাই হোক বাবার মুখে বান্দর বন যাওয়ার কথা শুনে মনে হলো আজ আমি সরকারি কোন প্রষ্ঠিতানের কর্মচারি,হয়েগেছি আর আমার বাবা সে প্রষ্ঠিতানের আমার বস তাই পরিক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে না পারলে আমাকে বন্দরবণ যেতে হবে ।
নাস্টার টেবিল ছেড়ে কলেজের দিকে পথ ধরলাম । যেতে যতে ভাবলাম আজ থেকে অঞ্জলির সাথে একটু কম সময় দিয়ে পড়ায় মনযোগ দিব না হয় বান্দরবন ।
সকাল সকাল বাবা কথায় মন খারাপ করেই ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়লাম আর ভাবলাম না আর কোন ফাকি দেওয়া যাবে না এ কদিনে সব ঠিক করে নিতে হবে ।
এ ভাবতে ও ভাবতে কলেজে গিয়ে উপস্থিত হোলাম ।কলেজে চায়ের ক্যান্তিনে অঞ্জলি বসা । আজ ওকে যা লাগছে না কপালে নীল টিপ গায়ে লাল ড্রেস সব মিলে ফটাফাট । ও কে দেখতেই যেন সব ভুলে ভুলানার্থ হয়ে গেলাম । বাবার কথা বান্দরবণ যাওয়া সব ভুলে শেষ ।
যাই হোক অঞ্জলি কে দেখে কিছু একটা গদ্য পদ্য পাঠ করেফেলেছি
হায় অঞ্জলি
তোমার হাতে লাল চুড়ি
গায়ে লাল জামা
চোখে কালো কাজল
ঠোট দুটি গোলাপি রং
কপালে নীল টিপ
মন বলে তোমায় নিয়ে পালিয়ে যাই খুঁজে অজানা সে দ্বীপ ।
মনে মনে গদ্য পদ্য পাঠ শেষ হতেই মহারানীর ডাক এলো ।
হায় জান আমিও হায় জানু । কি ব্যপার জান আজ এত দেরি করলে কেন ? কি বলছো জানু আজ দেরি হয়েছে ? আমিতো ভাবলাম আজ বুধয় আমি সকলের আগে কলেজে এসেছি ।

অঞ্জলি বললো জান আজ তোমাকে আমাদের বাড়ি যেতে হবে । কেন জানু ? কেন আবার বাবায় তোমার আমার প্রেমের কথা জেনে গেছে ।কি বলো জানু কেমনে জানলো ? আরে ঐ যে আমার মামাতো ভাই শফি আছেনা ও তোমাকে আর আমাকে এক সাথে দেখছে আমি জানি ঐই বাবাকে বলেছে । তাই বাবা সকালে আমাকে জিজ্ঞাস করতে মুখে আমার খই ফুটলো আর আমিও গড় গড় করে সব বলে দিলাম ।

ঠিক আছে উনি যখন যেতে বলছে তখনতো যেতে হবেই ।
ক্লাস শেষ হতেই চলে গেলাম অঞ্জলিদের বাড়িতে যেয়ে যা দেখি
তা দেখার জন্য আমি মুটেও প্রস্তুত ছিলাম না । অঞ্জলির বাবা হাতে লাইসেন্স করা রিভালভার নিয়ে পায়ে চারি করছেন দেখেই গলা শুকিয়ে আমার কাঠ হয়ে গেছে ।

উনিও আমাকে দেখে আমার মাথা থেকে পাও পযন্ত মাপলেন ।
আমি ভয়ে ভয়ে তাকে সালাম প্রদান করলাম । উনি হাত নাড়িয়ে আমার সালামের উত্তর দিয়ে ইশারায় আমাকে বসতে বললেন ।
আমিও বসেই তাকে ইশারায় পানির কথা বলতেই তাদের কাজের লোকটিকে বললো আমার জন্য পানি আনার জন্য । লোকটি আমায় পানির গ্লাস দিতেই এক চুমুকে পুরো পানি শেষ ।
এবার উনিও শুরু করলেন আমায় জেড়া করা আমি যেন মক্কেল উনি যেন বিচারক উনিই যেন উকিল । যাই হোক উনার কথা শেষে যা বুঝলাম উনি উনার মেয়েকে আমার হাতে দিতে রাজী নন ।
আমিও পিছিয়ে যেতে রাজি নই ।
উনার সাথে কথা শেষ করে বাড়ি ফিরলাম । বাড়ি ফিরে রাতে ভাবলাম অঞ্জলিকে নিয়ে ভেগে যাওয়া ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই । কিন্তু ভেগে যাবোতা কোথায় ?
অনেক ভাবনার পরে মাথায় একটা শয়তানি ভূত চাপলো আর তা হলো বাবা বলেছিল পরিক্ষায় খারাপ রেজাল্ট করলে বন্দরবন পাঠাবে তাই আমি রেজাল্ট ভালো করি আর খারাপিই করি বাবাকে বলবো রেজাল্ট খারাপ হয়েছে । আর সে সুযোগে অঞ্জলিকে সঙ্গে নিয়ে সোজা বান্দরবন পাড়ি দেব

দেখতে পরিক্ষা শুরু হয়ে গেল এবার আমিও খুব ভালো রেজাল্ট করলাম । কিন্তু বাবার সামনে এমন চেহারার ভাব নিয়ে গেলাম বাবা দেখেই বুঝে গেলেন আমি ফেলমেরেছি তাই আমি বাড়িতে প্রবেশ করতেই বাবা আমায় ডাক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কি বাবা দিপু রেজাল্টের খবর কি ? এভাবে বাবা কয়কেবার আমায় জিজ্ঞাসা করলেন । আমি সাধু ছেলের মতো মাথা নিচু করে মাটির দিকে চেয়ে রইলাম । শেষমেছ বাবা নিজে থেকেই বললেন কি এবার ফেল মারছিছ ? আমিও মাটি দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে বাবার কথার উত্তর দিলাম । বাবায় বললো কি আর করবা রেজাল্ট যগন খারাপ হয়ছে তখন দু এক দিনের ভেতরে বান্দর বন যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নেও ।

আমার ঘরে গিয়ে অঞ্জলিকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম আমাদের বান্দর বন যাওয়ার পেলান । ও রেডি হয়ে নিলো দুই দিনের মধ্যে আমি আর অঞ্জলি সোজা বান্দরবন পলায়ন করি । সমাপ্ত
অবশ্য বছর দুই এক পরে দুই ফেমিলীই আমাদের প্রেম মেনে নিয়েছিল ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×