somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনীতি ও তৃতীয় লিঙ্গ(হিজড়া) I ৩য় পর্ব।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হিজড়াদের জন্মগত ভাবেই কপাল মন্দ,আরো কপাল মন্দের ব্যাপার হল সামাজিক অবস্থান। উন্নত দেশের হিজড়ারা জনসাধারণের সাথে মিশে জনগণের মুল স্রোতের অন্তর্ভুক্ত হলেও আমাদের দেশে হিজড়াদের ভিন্ন চোখে দেখা হয়।হিজড়া শব্দটি এসেছে আরবী হিজরত বা হিজরী শব্দ হতে যার আভিধানিক অর্থ পরিবর্তন আর ইংরেজিতে হিজড়ার প্রতি শব্দ হচ্ছে ইউনাক যার অর্থ নপুংসক বা খোজা। আমরা জানি ক্রোমোজোমের ত্রুটির কারনে হিজড়ার জন্ম,জন্মের পর লিঙ্গ নির্ধারণে যাদের জটিলতা দেখা দেয় তারাই হিজড়া।বৈশিষ্ট্যগত ভাবে হিজড়া তিন প্রকার হয়,শাররীকভাবে পুরুষ কিন্তু মানসিকভাবে নারী তাদের অকুয়া বলে।শাররীকভাবে নারী কিন্তু মানসিকভাবে পুরুষ তাদের বলে জেনানা,আর মানুষের হাতে সৃষ্টি যারা (ক্যাসট্রেড) তাদের বলে চিন্নি।অকুয়া এবং জেননা মিলে ভয়ংকর ভাবে কখনো কখনো সৃষ্টি করে চিন্নি।

সাহিত্যের ভাষায় হিজড়ার নাম বৃহন্নলা,হিন্দি ভাষায় (KINNER) কৃন্নার,উর্দু ভাষায়(Khawaja) খাওয়াজা। এরা মানুষ হলে এদের দায়িত্ব রাষ্ট্র নিতে পিছু পা হয়।কিন্তু ইতিহাস বলে মুঘল শাসন আমলে সম্রাটদের কাছে বিশ্বস্ত ভৃত্য হিসাবে পরিচিত ছিল হিজড়ারা।ছেলে আর মেয়ে উভয়ের মাঝামাঝি হওয়ার কারণে নারী পুরুষ সবার মাঝে অবাধ চলাফেরা ছিল তাদের,এই কারণে মুঘল সম্রাটদের নারীদের পাহারা এবং বাচ্চাদের দেখাশুনা করতো হিজড়ারা।আর সেই অতীত ইতিহাস হতে বের হয়ে এসে আমাদের দেশে বর্তমানে হিজড়ারা সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রসন করে অর্থ উপার্জন করে।করে রাজনীতি,করে জবর দখল আর এসবের মূলে আরমানেরা থাকে ছায়া হয়ে।

এদের নচ্ছার চলাফেরা মানুষকে রাখে ভয়ের ভিতর।আবার কেউ কেউ পড়া লেখা শিখে ভদ্র জীবনযাপনও করে। এম.কম পাশ করা রুবেল আস্তে আস্তে বদলে রুপালী হয়ে যায়,এখন সে মডেল।সমাজবেসা অধিদপ্তরের মতে ষাট হাজার হিজড়া আছে দেশে আর ঢাকাতে আছে পনরশত,এবং প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের সাথে থাকে এখনো। তবে আমাদের সংবিধানে নারী পুরুষ এই দুয়ের স্বীকৃতি দেওয়া থাকলেও তৃতীয় জেন্ডারের কোন উল্লেখ নাই।ভোটার হতে মেয়ে বা পুরুষ লিখতে তাদের থাকে আপত্তি।কেউ যদি হিজড়া দলে ভিড়ে তাহলে গুরুমা নানা নিয়ম-কানুন ও হাতের তালির প্রশিক্ষণ দেন , দেন নানা রকম বিধিনিষেধ।

তারপরও পরিবার হতে বিছিন্ন হওয়া অসহায় নতুন হিজড়ার কাছে গুরুমাই সব।পরিবার হতে ছিঁটকে পড়া সব হিজড়ার গল্প একই রকম,হিজড়ার প্রতি পদে পদে ঘৃণা আর তিরস্কার। তাই তারা হয়ে উঠে ভয়ংকর। আর গুরুমা হয়ে উঠে গর্ভধারনী মায়ের মত,গুরুমা হিজড়াদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের দিয়ে নানা অপকর্ম করিয়ে টাকা রোজগার করে আরামের জীবন যাপন করে এবং নতুন হিজড়াদের করে বঞ্চিত। অথচ বাস্তবতা বলে চিন্তা ভাবনায় একটু দৈবজ্ঞ হলেই এমন সমস্যা প্রথমেই সমাধান করা যায়।নদী তার পরিবারের সাথেই থাকে এবং হাটে বাজারে টাকা তোলে। বহমান নদী আবার মা বাবার বুকেই রাত যাপন করে। নদীর বাবা বলে সন্তান যে নাড়ীর ধন জন্মতো আমিই দিয়েছি তাকে কি করে দুর করি।

দিনমজুর বাবা হিজড়া সন্তানকে বুকে আগলে রাখলেও অনেক পিতা মাতাই দুর দুর করে।এই নদীর সাথে আছে আরো ত্রিশজন হিজড়া,তারা বছরে একবার সমাবেশও করে। কারণ তারা থাকে ঐক্যবদ্ধ। জোটবদ্ধ হয়ে তারা কতটা ভয়ংকর ত্রাস সৃষ্টি করে যাদের বাসায় বিয়ের দিন হিজড়া গিয়েছে কিংবা কারো বাসায় বাচ্চা জন্ম হয়ছে শুনেছে তাদের বাসার মানুষ জানে কতটা দুরূহ হিজড়া হতে নিষ্কৃতি পাওয়া, ভোক্তভুগীমাত্রই জানে যন্ত্রণাটা।


সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৫
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×