somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবেক ? নাকি আবেগ ?

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা ঘটনা বলি।খুব কমন ঘটনা।শুনেন,


শিহাব আর নামিরার পরিচয় হয় ফেসবুকে।পরিচয়ের ছয় মাসের মাথায় নামিরা শিহাবের প্রেমে পুরা হাবুডুবু।শিহাব যেরকম ধান্ধাবাজ ছেলে তাতে এরকমটাই হওয়ার কথা ছিল ।যেই নামিরার পেছনে বহু ছেলের লাইন আছে সেই নামিরাই এখন বলতে গেলে শিহাবের কথায় উঠে আর বসে।

তো তাদের রিলেশনের এক বছরের মাথায় শিহাবের আর মন টিকে না। সে বাজে একটা এক্সকিয়ুজ দেখায় রিলেশন ভেঙ্গে নতুন আরেকটা মেয়ের সাথে রিলেশন শুরু করে।

নামিরা মাসখানেক প্রচুর কান্নাকাটি করলো । নাওয়া খাওয়া পড়ালেখা সবকিছু ওলট পালট হয়ে গেল ।বাবা মা অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে মেয়েকে আবার স্বাভাবিক করলো ।কিন্তু নামিরা শিহাবকে কখনোই ভুলতে পারে নায়।

আর শিহাব ততোদিনে আরো দু-চার ঘাটের জল খেয়ে ফেলছে।নামিরাও তার কয়েকজন বান্ধবীর মাধ্যমে শিহাবের সব কর্ম সম্পর্কে অবগত হয়ে গেছে।


নামিরা-শিহাবের রিলেশন ভাঙ্গার ছয় মাস পর ফেসবুকেই শাহেদ নামের একজনের সাথে পরিচয় হয় নামিরার ।কিছু দিন যেতে না যেতেই একদিন শাহেদ হঠাৎ করেই নামিরাকে প্রপোজ করে বসে।

এরকম অনেকেই নামিরাকে প্রপোজ করেছে কিন্তু শাহেদ ছেলেটা একটু অন্যরকমই। না দেখেই নামিরার পেছনে আঠার মতো লেগে থাকলো । কিছু দিন পর নামিরা এক্সেপ্ট করে ফেললো শাহেদকে।

এমন না যে নামিরারও শাহেদকে ভালো লাগতে শুরু করে । সে এই কাজটা করে শুধুমাত্র শিহাবকে ভুলে থাকার জন্য,তার উপর দিয়ে যেই ঝড়টা গেছে তা কাটিয়ে উঠার জন্য অথবা শিহাবকে দেখানোর জন্য যে তাকে ছাড়াও নামিরা খুব সুখে আছে।

আর এদিকে শাহেদ কোনো কারণ ছাড়াই নামিরাকে পছন্দ করতো। কোনো কারণ ছাড়াই।

খুবই শান্ত আর ভদ্র স্বভাবের শাহেদ নামিরাকে বলতে গেলে তার অতীতের,বর্তমানের সব কথাই বলতো। নামিরাও বলতো,তবে ফেসবুকে রিলেশন করে আগে একবার মন ভাঙ্গায় সে সবকথা শাহেদকে বলতো না।

অসাধারণ পার্সোনালিটির শাহেদ নিজেকে বোকা বোকা করে রাখতো যাতে শাহেদের বোকামিতে নামিরা একটু হলেও হাসে। নামিরার সাথে কথা বলতে শাহেদের সবসময়ই ভাল্লাগত। নামিরার ম্যাসেজের রিপ্লায়ের জন্য ওয়েট করতো।

অথচ শাহেদ এটা বুঝতো না যে কারোর সাথে কনটিনিউয়াস কিছুক্ষন ম্যাসেজিং হলে তার প্রতি এমনেতেই ভালো লাগা কাজ করবে । তার রিপ্লায়ের জন্য ওয়েট করাটা তখন তাকে মিস করার মতো মনে হবে তখন। আফসোস শাহেদ এটা তখন বুঝতে পারে না।যখন পারে তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।


শাহেদের আবেগটা সত্যিই ছিল কিন্তু নামিরার কাছে সেটা শুধু টাইম পাস বা শিহাবকে নতুন করে পাওয়ার মাধ্যম ছিল।


এরপর যা হয় আর কি ! শিহাব কিছু দিন এ ঘাট ও ঘাট করতে করতে নামিরার কাছে ফিরে আসলো । নামিরাও সবকিছু ভুলে গিয়ে পাঁচ মিনিটের একটা ফোনকলে শাহেদকে স্যরি বলে শিহাবের কাছে ফিরে যায়।

নামিরার এরকম আচরনে পুরো ব্ল্যাঙ্ক হয়ে যাওয়া শাহেদকে আরো পাঁচ-ছয় মাস পর একদিন রাতে নিজ রুমে সিগেরেটের ধোয়ার মাঝে বসে থাকতে দেখা যায়।শাহেদের রুম থেকে ধোয়া বের হতে দেখে তার মা দরজা খুলে দেখেন শাহেদ একহাতে স্লিপিং পিল আরেকহাতে পানি নিয়ে বসে আছে।ছেলেকে তখনই তিনি সুইসাইড করা থেকে আটকে ফেলেন।

আর ওদিকে নামিরা আর শিহাব বলে সুখেই আছে।


শাহেদ নিজের সব আবেগ,সব ভালোলাগা নিয়ে নামিরার কাছে উপস্থিত হয়েছিল ।আর নামিরা সেই ভালোলাগা,আবেগকে ব্যবহার করছে আরেকজনকে পাওয়ার জন্য। যখনই তার কাজ কমপ্লিট সে এককথায় শাহেদকে,শাহেদের আবেগকে ছুড়ে ফেলছে যেন শাহেদ নামের কারো অস্তিত্বই তার জীবনে ছিল না।


এরকম ঘটনা আমাদের আশেপাশেই ঘটছে।হয়তো আমরাই ঘটাচ্ছি অথবা আমরাই এর বলি হচ্ছি।


এখন দেখেন নামিরা কিন্তু শাহেদের পাশেই ছিল।অথচ নামিরা যে অভিনয় করছে শাহেদ তা বুঝতেই পারে নায়।কারন আমরা,শাহেদরা চোখ দিয়ে বা মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি।আসলে আমাদের বোঝা উচিত বিবেক দিয়ে,মগজ দিয়ে বা ঘিলু দিয়ে।

শুধু তিনটা শব্দ বললেই একজন আরেকজনের জন্য দিওয়ানা মাস্তানা হয়ে যাবে এরকম ভাবাটা বোকামি।

সো কার আবেগ রিয়েল আর কার আবেগ ফেইক সেটা বোঝা জরুরী আগে। নাহলে কতো শিহাব যে নামিরাদের কাছে বারবার ফিরে আসবে আর কতো নামিরা যে প্রেমিকের প্রতি আবেগের বান ছুটাবে আর কতো শাহেদ যে সেই বানের জলে ডুবে যাবে তার হিসেব শুধু ইতিহাস দিবে ।সো বি অ্যাওয়ার ফ্রেন্ডস..…


বাই দ্যা ওয়ে শাহেদের সাথে কৃত অভিনয় যে শিহাব এখন নামিরার সাথে করতেসে তা কি নামিরা বুঝতেসে ?
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×