somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প, ছোটগল্প নাকি অনুগল্প...?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কোন বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হতে চাইলে তা নিয়ে বই লেখা শুরু করাই ভালো। -বেঞ্জামিন ডিজরেইলির এই কথাটা ব্লগের প্রেক্ষিতে বলতে গেলে কোন বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চাইলে ব্লগে পোস্ট প্রকাশ করাই ভালো।।

ব্লগে অনেকেই দারুণ গল্প লিখেন। কেউ কেউ ভালো লেখার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ একেবারেই নতুন এই এরিয়াতে। নিজের আগ্রহ মেটাতেই কিছু জানার চেষ্টা করলাম। আশাকরি অন্যরাও জানাবেন।

গল্পের আকার:
ঘড়িতে এলার্ম বেজে গেছে। উঠতে হবে এবার। ঘাড়ের ৩, ৪ এবং ৬ নম্বর হাড়ে ক্ষয় ধরেছে। বেশিক্ষণ ল্যাপটপে কাজ করতে পারেন না একটানা। কিন্তু মেলায় একটা বই আসা চাইই চাই। লেখাটা কোনদিকে যাচ্ছে পাঠক শুরুতেই বুঝতে পারবেন নিশ্চিত...

এই বোল্ড করা লেখাটা দিয়ে একজন আমায় জিজ্ঞেস করেছিলেন, পনি, বলতো এটাকে তুমি কোন ধরণের লেখার ট্যাগে ফেলবে?
আমি এটাকে অনুগল্প বলতে চাই। কিন্তু আদতে এটি অসম্পূর্ণ উপন্যাস একটি। যার ঘটনার মাত্র শুরু। উপন্যাস নিয়ে খুব বিস্তারিত সন্দেহ না থাকলেও এর ব্যাপ্তি আসলে কতোটুকু? কতো শব্দ, কতো পাতা, কতো ফর্মার বই? আশাকরি পাঠক আমায় এই কৌতুহলের অবসান ঘটাবেন।
অবসান ঘটাবেন কতো শব্দ হলে একটি গল্প হয়? এ বিষয়টা কোনভাবেই মাথায় আসে না। কতো শব্দের মধ্যে হবে একটা গল্প বা ছোট গল্প বা অনুগল্প?
অনলাইনে কখনো দেখি একহাজার (১০০০) শব্দের মধ্যে গল্প চাওয়া হয়। আবার কোন কোন পত্রিকা, ম্যাগাজিন ৩ থেকে ৫ হাজারের মধ্যে চায়। পত্রিকায় আড়াই হাজার শব্দের গল্প পেয়েছি।
৪ ফর্মার একটা বই একটা কাহিনি নিয়ে গল্প। মানে প্রায় ২৪ হাজার শব্দ।
ছোটগল্প সাধারণত ১০ হতে ৫০ মিনিটের মধ্যে শেষ হওয়া বাঞ্ছনিয়। এমনই বলেছেন মামুনুর রশিদ। সূত্র: Mamunor Rashid
ছোটগল্প লেখার ৫ টি নিয়ম, নিউজ সমাহার, ১২-১০-২০১৬
ছোটগল্প লেখার ৫ টি নিয়ম

তাহলে বড় গল্প আর উপন্যাসের ফারাক কতোটুকু? কতো শব্দের, কতো ফর্মার?

গল্পে কী থাকা উচিত?

মোদ্দাকথা হলো সুখপাঠ্য... সুখপাঠ্য ভাষা না হলে আমার কাছে তা আহামরি গল্প নয় মোটেই।
বানানে বিশেষ সতর্কতা। যদিও আমি নিজেও বানানে দূর্বল। কিন্তু সতর্ক থাকার চেষ্টা করি প্রতিনিয়ত।
শিবব্রত বর্মন বলেছেন গল্পের নিজস্ব নিয়মে পাঠকের চোখ দিয়ে দেখে গল্প লিখতে। সূত্র:
শিবব্রত বর্মন, কীভাবে গল্প লিখতে হয়, গোল্লাছুট, প্রথম আলো,১৪ অক্টোবর ২০১৬ কীভাবে গল্প লিখতে হয়
কিন্তু একজন লেখক যখন লিখেন তখন তিনি সবসময়ই পাঠকের কথা নাও ভেবে লিখতে পারেন। তিনি মনের সুখের জন্যে, স্বস্তির জন্যে লিখে থাকেন।


সহব্লগাররা কী বলেন?
সহব্লগার বাকপ্রবাসকে বিশেষ ধন্যবাদ বিষয়টি অনেকটাই বুঝিয়ে বলার জন্যে।

বাকপ্রবাস বলেছেন: অণুগল্প আর উপন্যাস এর মাঝে কোন ঝুট ঝামেলা নাই, কেউ উপন্যাস লিখে যেমন অণুগল্প শিরোনাম দেয়না আবার অণুগল্প লিখেও উপন্যাস শিরোনাম দেয়না। যে সম্পর্কটা আছে সেটা হল বিষয়বস্তু বা সারমর্মআণুগল্প এর সারমর্মটা এতো প্রখর, তীব্র কিংবা অর্থবহ হতে পারে সেটার উপর ভর করে একটা উপন্যাসও হয়ে যেতে পারে, আবার একটা উপন্যাসে ছোটছোট অনেক অণুগল্প ঢুকে যেতে পারে তাতে কারো কোন প্রবলেমও থাকেনা।
অণুগল্প এর সাথে গল্পের মাঝে একটা ভুলবোঝা বোঝি হয় নতুন লেখকদের মাঝে। তারা বুঝতে পারেনা অনেক সময় এটা কী অণুগল্প নাকি ছোটগল্প নাকি শুধুই গল্প। অণুগল্প শব্দ বা বিষয় হিসেবে সাম্প্রতিকভাবে স্বতন্ত্রতার দাবী রাখে। আগেকার লেখকরা অণুগল্প লিখেছেন তবে সেটা যে অণুগল্প সে হিসেবে লিখেননি, তারা গল্প হিসেবে লিখেছেন এবং বর্তমানে অণুগল্পের যে ধারণা ক্রিয়েট হয়েছে পুরোপুরো তার সাথে মিলে আগেকার অনেক গল্পরা অণুগল্প হয়ে গেছে। পার্থক্য হল তার সেটা গল্প হিসেবে লেখেছে। বর্তমানে অনেকে গল্প লিখে শিরোনাম দিয়ে দিচ্ছে অণুগল্প।
গল্প আর অণুগল্পে একটা বিশেষ পার্থক্য হল গল্পে মেদ থাকে। যেমন আপনি বাজারে গেলেন মাছ কিনে আনলেন কিন্তু মাছটা পচা ছিল। এসে বউ এর ঝারি খেলেন।
এই বিষয়টা গল্পে আপনি বাজারে যাওয়ার আগে থেকে শুরু করতে পারেন, কাঁধে গামছা নিলেন, লুঙ্গিতে গিট্টু নিলেন, বাজারের থলে নিলেন, যাবার আগে গরুটার মুখে ঘাসও দিলেন, যাবার বর্ণনা দিলেন, যাবার পথে কারো সাথে দেখা হল কথা হল তাও লিখলেন। এভাবে আসল কথায় আসার আগে তাকে খাইয়ে পেট মোটা করে নিতে পারেন।
কিন্তু অণুগল্পে এসব বর্ণনা আসলে সেটা মেদবহুল হয়ে যাবে, সেখেত্রে অণুগল্পে লেখটা এক বা দুই লা্ইনে শেষ হয়ে যাবে, যেমন হেমন্ত কালে তুমুল মেঘ গর্জন। মাছটা গিন্নি মাছটা কুটা শেষ হওয়া পর্যন্ত সেই মেঘ বৃষ্টি হয় হয় করেও হলনা।

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
বড় গল্প আর উপন্যাসের মধ্যে যেমন পার্থক্য আছে; ঠিক তেমনি ছোট গল্প এবং অনুগল্পের মধ্যেও কিছু পার্থক্য আছে। এজন্য অণুগল্প লেখার সময় এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়। অনেক সময় ছোট গল্পকে কেউ কেউ অণুগল্প হিসেবে চালিয়ে দিতে চান। কেউ কেউ 'কিছুই হয়নি' টাইপের লেখায়ও অনুগল্পের ট্যাগ লাগিয়ে দেন।
অণুগল্পে অল্প কথায় বৃহৎ কিছুর ইঙ্গিত থাকে। এছাড়া টুইস্ট ও গল্পের প্লট খুব সুন্দর হতে হয়; যাতে অল্প পড়েও পাঠক আনন্দ পায়, উপলব্ধির খোরাক হয়। এখানে অযথা টেনে হিচড়ে কাহিনী বড় করা সুযোগ নেই। আমি মনে করি, গল্প লেখার চেয়ে অণুগল্প লেখা বেশি কঠিন কাজ।


হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন:
গল্প/ ছোটগল্প/ অণুগল্প এগুলো নিয়ে আমি এখনো ধাধার মধ্যে আছি।
অণুগল্পের আকার/ পরিধি বা কত শব্দের মধ্যে হওয়া বাঞ্চনীয়?

লেখক (বাকপ্রবাস) বলেছেন: অণুগল্পের নির্দিষ্ট কোন আকার নেই, তবে খুব বেশী বড় হয়না সাধারণত। কম কথায় বিশালত্ব প্রকাশ পায় অণুগল্পে। প্রথম যারা লিখতে যায় তারা অণুগল্প ভেবে কবিতাও লিখে ফেলে। গল্প আর অণুগল্প সাইজ একই হতে পারে তবে গল্পতে বর্ণনা ধারাবাহিকতা থাকে, বোঝা যায় ঘটনা কি ঘটবে। অণুগল্পে এসে শেষের দিকে ঘটনা উল্টো হয়ে যাবার সম্ভবনা থাকে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে। এতক্ষণ পড়তে পড়তে যা ভেবে আসছিলেন দেখা গেল উল্টো ব্যাপার।
সূত্র: পরের ধনে পোদ্দারি

সহব্লগারদেরকে তথাকথিত উপদেশ (মুরুব্বীরা যা না করলে নিজেদের মুরুব্বীগিরি বোঝা যায় না):
►পড়ার বিকল্প নেই। ভালো পড়ার বিকল্প আরো নেই।
►লিখতে থাকুন। সমালোচকের সমালোচনা গায়ে না মেখে লিখতে থাকুন।
► বানানে সতর্ক হোন। ভাষার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে ভাষাকে কীভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরবেন?
►অন্যের প্রতি সহনশীল হোন। অন্যকে সম্মান করলে আপনার সম্মান কমে যাবে না। অন্যকে অসম্মান করে নিজেকে হেয় করবেন না।

পোস্টের শুরুতে সাহিত্য নিয়ে সার্চ দিয়েছিলাম ব্লগে। অনেক ভালো লেখা পেয়েছি। তবে আমার সময় আর ধৈর্যের নিন্দে করছি।
সাহিত্য:
সাহিত্য কি? সাহিত্য কেনো? সাহিত্য কোথায়?
জনপ্রিয় সাহিত্য, বাজারি সাহিত্য, সিরিয়াস সাহিত্য

নিজের ঢোলটা সুযোগে পিটিয়ে নেই
আমি নিয়মিতভাবে সিরিয়াস গল্প লেখক নই। তবে আগ্রহ আছে এই এরিয়াতে কাজ করার। কবিতা লিখলে বিপদে পড়তে হয়। অনেক সময়ই কবিতা লেখার পর দেখা যায় সেই কবিতা কারো গায়ে লেগে গেছে। তখন কবিতার প্রশংসা না পেয়ে গালি খাই। দরকার কি বাবা কবিতা লেখার!
আমার একটা গল্প সংকলন সময় প্রকাশন থেকে নির্বাচিত হয়ে মেলায় এসেছিল। প্রকাশক জনাব ফরিদ আহমেদ খুব সৎ মানুষ বলেই বইয়ের সম্মানিও পেয়ে গেছি।
বই লিখে রয়্যালটি পেলাম
'অবদমিত অভিমান'-একটি স্বপ্ন পুরণের কাহিনি

এবার একটু ভালোবাসার অধিকার ফলাই:
আশাকরি সামহোয়্যারইন কর্তৃপক্ষ এই ব্যাপারটায় বিশেষ নজর দিবেন। কারো পোস্টে মন্তব্য করলে পোস্টদাতা জবাব দিলেও তার নোটিফিকেশন সবসময় পাই না। একারণে সেই পোস্টে জবাব না পাওয়া পর্যন্ত চেক করা চলতে থাকে তিনি কী জবাব দিলেন দেখতে। বিষয়টা খুবই পীড়াদায়ক।


প্রথম ছবি সুত্র: অনলাইন
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২০
৪৪টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×