আপনি সমাজের যেই স্তরেরই হোন না কেন 'বকশিশ' শব্দটির সাথে হাতে কলমে পরিচিতি ঘটেনি এমন সুস্থ সবল স্বাভাবিক মানুষ (ধরতে গেলে পুরুষ) খুঁজে পাবেন না হয়তো । তারপরও খোলাসা করলাম ।
বকশিশ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো বিশেষ পুরস্কার , ইনাম , খুশি হয়ে প্রদত্ত পরিতোষিক । আর খুব সহজ করে বলতে গেলে কাজের বিনিময়ে নিজ থেকে খুশি হয়ে কাউকে কিছু দেয়া । যদিও বাস্তব জীবনে ঠিক কতখানি আমরা 'নিজে থেকে' আর 'খুশি হয়ে' বকশিশ দিই তা অবশ্য ভাবনার বিষয় বটে !
এখানে বকশিশ নিয়ে কোনো সাহিত্য লিখতে আসিনি , উহা আমার কর্ম নহে । তবে ফেসবুকীয় আমজনতা হিসেবে সংক্ষেপে আর অতি ক্ষুদ্র পরিসরে দুটো মনের কথা শেয়ার করতে চাই ।
বকশিশের ট্রেডিশনটা অনেক আগে থেকে শুরু হলেও আজকাল এটাকে অঘোষিত অপরিহার্য কার্য (অনেক ক্ষেত্রে আবার উটকো উৎপীড়ন) বললেও এতটুকু বাড়িয়ে বলা হবে না । যেখানেই যান খালি বকশিশের ইস্যু । হোটেল রেস্টুরেন্ট গুলোর কথা নতুন করে আর কিই বা বলবো । ইদানিং আবার বেশ কিছু ছোকড়ার দেখা পাওয়া যায় যারা এক গ্লাস পানি সার্ভ করলেও বকশিশের আশায় তির্থের কাকের মতো ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে থাকে । আর আপনি যদি তার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন তবে তো কথাই নেই । তার কটমট চাহনিতে যেন সাক্ষাত অনলই বর্ষিত হয় । সঙ্গী যদি কোনো প্রেয়সী হয় তাহলে তো খোদ আপনিই হিরো ; আই মিন আপনাকেই হিরোর রোলটা লুফে নিতে হবে । প্রেসটিজের ব্যাপার স্যাপার আর কি...
সো নো ওয়ে ব্রো !!
সেলুনে (অনেকে আবার নতুন করে এগুলোকে জেন্টন্স পার্লার হিসেবে নামকরণ করছে স্রেফ হুজুগের বশবর্তী হয়ে) চুল কাটাইতে গেলেও ঐ একই অবস্থা । কাজে কর্মে নূন্যতম আন্তরিকতার বালাই নাই তবে বকশিশের বেলায় ষোল আনা উসুল করা চাই ই চাই ।
কি প্যাডা রে ভাই ,
ধরনীর কোথায় গেলে
শান্তি পাই ??
মাঝে মাঝে মনচায় ছেচড়া গুলার কান সই কইরা ফ্রি স্টাইলে দুই চারটা রামথাবড়া দিয়া দিলের খায়েশ মিটাই ।
আমার জীবন যৌবন (পড়ুন-আয় রোজগার) সবই গেল খালি বকশিশ ঢালতে ঢালতে ।
আমরা হিরো হইতে চাই না , খালি কোনো মতে বাঁচতে চাই । নিজের মতো বাঁচতে চাই । আমার মতো যারা আছে সবাইরে একটু রেহাই দাও গো দাদারা... সরি , মামারা !
পরিশেষে বলা যায় 'বকশিশ' শব্দটি ক্ষেত্র বিশেষে কলুষিত হয়ে পড়েছে । বকশিশের মোড়কে এখন ঘুষও দাবি করা হয় । সে এক অন্যরকম কাহিনি.....
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৭