এই ছেলেটি সেই ছেলে যার বাবার রুটিন হয়ে গেছে ভোরে ছেলেকে ডাকাডাকি করে হয়রান হয়ে, 'আরলি টু বেড, আরলি টু রাইজ টু মেকস এ ম্যান হেলদি ওয়েলদি এন্ড ওয়াইজ' বিড়বিড় করে যাওয়া
.
আদরের ছেলে কম্বল টেনেটুনে আরো গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায়
.
সেই ছেলে আজ ভোর পাঁচ'টা ঘুম থেকে উঠে
-চুলের ভাজ ঠিক করছে
-আবছা আলো অন্ধকারে তাকিয়ে
-ব্রাশ হাতে নিয়ে ব্রাশ খুজছে
.
বাবা ছেলের বোধদয় হয়েছে ভেবে মিটিমিটি হাসছে
.
দিনের আলোর সাথে মনের আলো জেগে উঠেছে, ভোরে ল্যাম্প পোস্টের নিচে দাড়িয়ে আছে,ভাবছে ঘড়ির কাটা নড়ছে না কেন? তবে কি আজ সকাল থমকে গেছে?
.
আর কত মুহূর্ত পেরুলে সকাল সাতটা বাজবে? এদিকে প্রকৃতি ডেকে চলেছে, এই ডাক উপেক্ষা করা বড়ই কঠিন তার চেয়ে কঠিনতর আজ সকাল সাতটায় দাড়িয়ে না থাকা
.
সাপ্তাহে তিন দিন এভাবে দাড়িয়ে থাকার পর অন্যদিনগুলোতে সে বিক্ষোভে ফেটে উঠে!
.
যারে সমানে পায় সমানে বুজিয়ে চলে মাস্টারগুলো কমার্সিয়াল হয়ে গেছে বড্ড বেশী, সাত দিন না পড়াক পাঁচ ছয়দিন তো পড়াতে পারে!
.
শিক্ষার এমন বাণিজ্য চলতে দেওয়া যায় না, রুখে দিতে হবে, দরকার হলে হরতাল! আচ্ছা হরতাল দিলে সে কেমনে আসবে!? বাবা বের না ও হতে দিতে পারে
.
আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত, অহিংস আন্দোলন এসব ভাবতে ভাবতে মঙ্গলবারের প্রতি বিরক্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে আজ
.
জীবন এখানে থেমে গেছে! আজ বাবা মারা গেল তার, বড় ভাইয়ের উপর অনেক দখল গেছে, তিনদিন পর বড় ভাই কাধে হাত দিয়ে বলল,
'নিলয় আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে,কাঁদিস না ছোট ভাই! তোর সামনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, বাবার অনেক স্বপ্ন ছিল তোকে নিয়ে.......'
.
এরপর পর থেকে শুরু হলো নিলয়ের ভ্রাম্যমান জীবন, বছর কয়েক কেটে গেল, আজ হলের রেলিংয়ে দাড়িয়ে রাতের আকাশের তারা দেখছে সে! নীলয়ের মন খারাপ, হঠাৎ মন খারাপ! ভয়ঙ্কর মন খারাপ! প্রথম ভালো লাগা সেই মেয়েটির আজ বিয়ে
.
ভালো থেকো কখনো কথা না বলা সেই মেয়েটি, ভালো থেকো নীলয়....!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫১