একদিন কোরবানে ছাগল কিনেছিলাম । এতো টানাটানি করলাম! ছাগল ঘরে ঢুকবেই না । অর্ধাঙ্গী সেটা খেয়াল করে বললো, ‘দুনিয়ার সবাইকে ছাগল পাওনি যে তোমার বাসায় সুরসুর করে চলে আসবে । শুধু আমি বলে ভুল করে এসেছি । তাই আজ জীবন তেজপাতা ‘। তখন ছাগলটিকে কোলে করে নতুন বউয়ের মতন করে বাসায় নিয়ে এসে বললাম, ‘এভাবে মর্যাদা দিলে তুমি কেনো যে কেউ সুরসুর করে চলে আসতে বাধ্য!’ সেদিন বউ ভাত খায়নি । শাশুড়িকে রিপোর্ট করেছে, আমি তাকে ছাগল হিসেবে ট্রিট করি, বউ হিসেবে নয় ।
.
স্কুল জীবনেও এমন হয়েছে ।একদিন স্যার গরুর সাথে তুলনা না দিয়ে ছাগলের সাথে তুলনা দেওয়া শুরু করলো । কথায় কথায়, ‘ছাগল কোথাকার’ ট্যাগ দিতে লাগলো । সেদিন বুঝলাম নিজের দাম এবং মান আরো কমেছে । দিন পাল্টাইছে । সেদিন আর নাই ।
.
আজ ছাগলগুলো লাখ টাকার হচ্ছে । এখন এক যুগ পর আবার স্যারের সাথে দেখা, আগের মতো কান টেনে বললো, ছাগল কোথাকার? বললাম, সাদিক এগ্রোর!
.
বউ আগে বলতো, ‘ছাগলামি ছাড়ো ‘। সেদিন এসে বললো, যদি ছাগলামি ছাড়তে না বলতাম আজ তুমি পনের লাখ টাকার মালিকও হতে পারতে । জগতে কোন কিছুকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই । বংশ ই মূল কথা । তুমি শুধু বুঝলে না আমি কোন কোন বংশের মেয়ে!
.
ভালো বংশের ছাগল বেশী দামে বিক্রী করা যায় এটা শুনার পর চৌধুরী বংশের রাখাল সেটা নিয়ে সোজা বাজারে চলে গেলো । এক ভদ্রলোক দাম শুনতে চাওয়ায় সে বললো, এক দাম ১২ লাখ টাকা । ক্রেতা তো আকাশ থেকে পড়লো! ছাগল বিক্রেতা বললো, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই । এটা চৌধুরী বংশ গোত্রের ছাগল । তা শুনে ক্রেতা বললো, এই ছাগল কিনে আমার দেশ ত্যাগের কোন ইচ্ছে নেই । বিক্রেতা তখন বললো, এই ছাগলের আরো গুন আছে । এটা কথা বলতে পারে । উৎসুক জনতা তখন বললো, শুনি তো?
.
সে যে ছাগল কিনতে ইচ্ছুক তাকে বললো, আপনি ছাগলকে প্রশ্ন করেন, এখন কি মাস? প্রশ্ন শুনে ছাগল উত্তর করলো, মে…./
.
ভাইরাল হওয়ার আগে আমাদের দেশে ছাগলকে বোকা প্রকৃতির ভাবা হতো । কথায় কথায় উপমা শুনতে হতো, ছাগল কোথাকার! সেদিন অফিসের বস কি যেন একটা ভুল করায় বললো, ছাগল কোথাকার! বললাম, ‘স্যার সাদিক এগ্রোর ‘।
.
একটা জনপ্রিয় প্রবাদ আছে, পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায় । উত্তর, ‘সবকিছুর পাশাপাশি ছাগলে এখন দূর্নীতিও খাওয়া শুরু করছে ।’