somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোন পথে হাটছি আমরা?

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৃক্ষের চেয়ে ডালপালা বেশি এটা চিরন্তন সত্য কথা। আমার কথার ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম হয় না কখনো। একটা প্রসঙ্গ অন্য প্রসঙ্গগুলোকে টেনে আনে। এমনিতেই বেশি কথা, তাই আর কথা না বাড়াই। সব বিবেচনা আপনাদের হাতে। একটা প্রশ্ন রেখেই কথা শুরু করব, আমরা নিজেরা কি নিজেদের পায়ে কুড়োল মারছি ? নিজের কে নিজেরাই কি বিপন্ন করছি না? একই প্রশ্ন দুই ভাবে করলাম।

-
গতকাল রাতে আড্ডা দিচ্ছিলাম, রাজনীতি আমাদের আড্ডাতে আসবেই। কথার মাঝে গুলশান-২ এর ঘটনাই প্রাধান্য পাচ্ছিল বেশি। হঠাৎ করেই একেক করে সবাইকে প্রশ্ন করে বসলাম, তোমাকে যদি একদিনের জন্য ক্ষমতা দেওয়া হয় তুমি কি করবে? উত্তরগুলো কি রকম ভয়ংকর হতে পারে তার কয়েকটা নমুনা বলছি, একজন বলল, আমাকে একদিন নয় মাত্র ছয় ঘন্টার জন্য ক্ষমতা দেওয়া হোক, আওয়ামী লীগ এর সব ছাগুগুলোকে সাফ করে দিব।
অন্যজনের বক্তব্য আরেকটু মারাত্মক, এক রাতে দেশের সব শিবির সাফ করে দিব।
ওদের কথা ওরা বলেছে, আদৌতে এরা কিছুই করতে পারবে না, কারণ মুখে বলা আর কাজ করা অনেক কঠিন, তারপরেও ক্ষমতার কালো হাত ত আছেই, ক্ষমতা মানুষের চোখকে অন্ধ করে দেয় এই কথাটা প্রমাণিত।
-
আমরা খুব সহজেই প্রতিদিন নিজেদের মূর্খতাকে হাজারবার প্রমাণ করে দেই। উদাহারণ নয়, প্রাসঙ্গিক কথাই বলল। অর্থ মন্ত্রী বাজেট করে না, বাজেট করে অর্থমন্ত্রণালয়। গালি দেওয়ার সময় আমরা গালি দেই শুধু অর্থমন্ত্রীকে। একই ভাবে শিক্ষা মন্ত্রীকে বা অন্য মন্ত্রীদের গালাগালি করি। কিন্তু গালির আসল যোগ্য কারা প্রশ্নটা থেকেই যায়। অর্থমন্ত্রনালয় বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর সব কর্মকর্তা,কর্মচারী সবাই কিন্তু গালি খাওয়ার কথা যেহেতু কাজগুলো ওদের সবার সম্মিলিত, কিন্তু আমরা তা করছি না।
কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রী বা শেখ হাসিনাকে গালি দেওয়াটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে, শুধু প্রধানমন্ত্রী নয় খালেদা জিয়াকেও আমরা গালি দিতে সদা প্রস্তুত। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী একা দেশ পরিচালনা করে না, দেশ পরিচালনা করার জন্য তিনি তার সহায়তার জন্য কিছু চামচা নিয়োগ করেন যাদের আমরা মন্ত্রী বলেই জানি। তাদের নিচে আরো অনেক চামচা থাকে, তাদের কথা অনেকেই জানি কিন্তু কারা থাকে তা জানিনা। যেখান থেকে আমাদের জন্য বা দেশের জন্য কোন সীদ্ধান্ত আসে সেই জায়গার নাম মন্ত্রী সভা। অন্য জায়গা থেকেও আসে, যার নাম সংসদ। কোন সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নিজে একা নেন না, ওই সব চামচাদের মাথা থেকেই সীদ্ধান্তগুলো ও আসে।
সোজা ভাষায় আরো সহজ করে বলি, আপনি সবার উপরে আর আপনার নিচে দশজন আছে, দশজনের মধ্যে সাত বা আটজনে একটা সীদ্ধান্ত দিল, আপনি প্রধান হিসাবে সেই সীদ্ধান্ত মানতে বাধ্য নয়ত আপনাকেই বহিস্কার করে দিবে। বিষয়টা এখানেই, প্রধানমন্ত্রীকে গালি দেওয়ার আগে তার পুুরো গুষ্ঠিকে (মন্ত্রী সভা) গালি দিন।
প্রধানমন্ত্রীকে কিভাবে অকার্যকর করে রাখা হয় তার উদাহারণ খুজঁতে হারিকেন জ্বালাতে হবে না। আমিই বলে দিচ্ছি।
সৈরশাসক এরশাদ পতনের ঘটনা আমাদের অনেকেই জানে, অনেকেই স্বচক্ষে দেখেছে। আমি দেখিনি কারণ আমার জন্মই হয়নি তখন, তবে যতদূর জেনেছি তাতে, সেই সময় এই ছাগু নেতার কিছু বলদ মন্ত্রী ছিল যারা তথ্য গোপন করত। যেমন করছে বর্তমান সময়ের দ্বায়ীত্বপ্রাপ্ত কিছু লীগ ছাগু।
দেশে আন্দোলন হচ্ছে এরশাদ পতন নিয়ে, কিন্তু এরশাদ এর কিছুই জানেনা। কেন? কারণ তখনখার সময়ে যে সব পত্রিকায় তার স্বপক্ষে খবর লেখা হতো তাই তাকে পড়তে দেওয়া হতো, কানের কাছে সব সময় তার গুনকীর্তন করা হতো। আর এরশাদ সাহেব সেই খবর শুনে মুখে হাসি এনে বলতেন দেশে কোন গন্ডগোল হচ্ছে না, বরং মানুষ শান্তিতেই আছে। ফলাফল কি সেটা সবাই জানেন, একট সময় যখন এরশাদ জানতে পারল আসলেই দেশের অবস্থা ভালো না তখন আর তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব ছিল না। সময় অনেক বেশি দেরী করে ফেলেছে।
বিষয়টা এমন, এসির মধ্যে বসে ত আর বাইরের রোদের তাপ কেমন তা বলা যায় না। বর্তমান সময়েও সেই একই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। যাকে আমরা প্রতিনিয়ত গালাগালি করে যাচ্ছি দেশের এমন করুণ অবস্থা দেখে তিনি কি আদৌ এই সব খবর পাচ্ছেন? মনে হচ্ছে না, কারণ উনি পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল,এইগুলো নিয়ে ব্যাস্ত আছে। গুরুত্বপূর্ণ খবর যা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে উনার জানা প্রয়োজন সেই তথ্যগুলোকে কমগুরুত্বপূর্ণ মনে করে বা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের প্রয়োজনে আড়াল করে যাচ্ছে তথ্য সরবরাহকারীরা।
-
জিডিপি গ্রোথ মানে কি বুঝেন?
ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে বুঝাতে পারব না, শুধু এই টুকু বলি, একটা দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাওয়া মানে দেশের অর্থনীতির উন্নতি। আর দেশের অর্থনীতির উন্নতি মানে জনগনের উন্নতি। আমার কাছে বিষয়টা আরেকটু গুরুত্ব বহন করে, জিডিটি বৃদ্ধি মানে দেশের বেকারত্ব হ্রাস পাওয়া। অথাৎ আমাদের জিডিপি যত বৃদ্ধি পাবে দেশের উন্নতি হতে ততদ্রুত, তেমনি বেকারত্বও কমে যাবে।
সন্ত্রাসবাদের অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে চরমদারিদ্রতা। আমাদের দেশে অবশ্য উল্টোটাই হচ্ছে, সব বিত্তশীল পরিবারের ছেলেমেয়েরাই অপরাধ জগতে জড়িয়ে যাচ্ছে।
একটু পিছনের দিকে ফিরে তাকাই, সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গী উত্থান এর শুরুর দিকে। প্রথমেই বলে রাখছি বাংলাদেশে জঙ্গি নেই এই কথাটা বিশ্বাস করে থাকলে অবিশ্বাস করা শুরু করে দিন। উপলব্দি করুন দেশে জঙ্গি আছে নয়ত জাঙ্গি উৎখাত সম্ভব নয়। সন্ত্রাস আছে, সন্ত্রাস বিরোধী কর্মকান্ডও আছে, কিন্তু জঙ্গি নেই বলে জঙ্গি নিধন কার্যক্রম নেই, যার ফলাফল কি তা আমরা দুইদিন আগেই দেখলাম।
২০০৪ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলেই আমরা জঙ্গি দেখেছি, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবি এর কার্যকলাপ এর মাধ্যমে। পরবর্তীতে এই দলের শীর্ষ দুই নেতার মৃত্যু দন্ড কার্যকর করার মাধ্যমে কিছুটা সস্থি এসেছিল কিন্তু আদৌ এই সংগঠন বিলুপ্ত হয়নি বরং মাঝে মাঝেই এর কর্মীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আইনশৃংখলা বাহিনী এদের প্রতিহতও করেছে।
২০০৯ সালে বর্তমান লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। লীগ সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এখন পর্যন্ত সেই কাজটা খুব ভালো ভাবেই করে এসেছে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে প্রথম যে রায়টি আসে তা হচ্ছে কাদের মোল্লার যাবতজীবন কারাদন্ড। সেই সময় ব্লগ একটিভিষ্ট নামে গুটি কয়েক মানুষ শাহাবাগে আন্দোলণ এ নেমে আসে এই রায় এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে। পরবর্তীতে অসংখ্য মানুষ তাদের সমর্থন করে। আর আন্দোলণ হয়ে যায় বৃহৎ একটা আন্দোলণ। অনেকেই একে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসাবে ঘোষণা করে। ( আমি করি না)
সেই সময় প্রকাশে আসে আরো অনেকগুলো বিষয়। যেমন নাস্তিক ব্লগার। কিছু কুলাঙ্গার, নর্দমার কীট নাস্তিক নাম দিয়ে ইসলামকে অবমাননা করে। যাদের মধ্যে অন্যতম, আসিফ মহিউদ্দিন, রাজিব (থাবা বাবা), নিলাদ্রী সহ আরো অনেকেই। হঠাৎ করেই তখন আরেকটি সংগঠন মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। হেফাজতে ইসলাম। এমন একজন নেতা এখানে জাড়িয়ে যায় যাকে মানুষ আথ্যাত্মিক, ধর্মীয় নেতা হিসাবেই মান্য করত। সফি সাহেব। কি নির্বোদ এর পরিচয় তিনি দিয়ে ছিলেন তা বর্ণনা করার প্রয়োজন পড়ে না। তবু বলতে হচ্ছে, নাস্তিক হত্যা ওয়াজিব ঘোষণা দিয়ে নিজেকেই উনি টেনে নামিয়ে আনলেন আসিফ,রাজিবদের বিপক্ষে। অথচ এই মানুষটাই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারত, কিন্তু নিজের পায়ে নিজে কুড়োল মেলে নিজেকেই সেই অবস্থান থেকে নিচে নামিয়ে নিয়ে আসল। ধর্মীয় জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে শুরু করে দিয়েছিল এই লোকটাই। মে মাসে আন্দোলণ করে চূড়ান্তরূপ দিলেন এই নিচে নামার পথটাকে।
লীগ সরকার জামায়াত- শিবির নিষিদ্ধ করল, যাতে আতে ঘা পড়ল ঐ সংগঠনগুলো। সাথে বড় বড় নেতাগুলো এভাবে ফাসিঁতে ঝুলিয়ে দেওয়া বড় ধরণের একটা পরাজয় নয়ত কি। সুতরাং তারাও বেপোরোয়া ভাবে মানুষ হত্যা শুরু করে দিল। সাইদির রায় নিয়ে কি হয়েছিল ভুলে যায়নি মানুষ। কিন্তু যা ভুলে গিয়েছে তা হচ্ছে ০.২% জিডিপি গ্রোথ কমে যাওয়া। একটা মানুষকে বাচাঁতে কত মানুষ বেকার হয়ে গেল তার হিসাব কেউ করেছে, তাও আবার প্রমাণিত অপরাধীকে। সফি সাহেব কি করতে চেয়েছিল তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তখনই, কিছুই আবার অবশিষ্ট ছিল না। হেলিকপ্টার এ উঠে পলায়ণ আর রেলের জমি নিজের প্রতিষ্ঠ মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ। যারা সফি সাহেবকে সমর্থন করেছিল তারাও বিভক্তি হয়ে গেল।
২০০৯-২০১৪ সালে এই হামলাগুলোর বাইরেও অনেক হামলা হয়েছিল। আর লীগ সরকারের ছাগু মন্ত্রী এমপিরা যার সব দোষ মুখেই বিএনপি-জামায়াত এর উপরে চাপিয়ে দিয়েই সস্থি প্রকাশ করেছে। পূর্ববর্তী সময়ের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকমীর্কে জেলে ভরে দিল, অনেক মানুষ ঘুম হয়ে গেল। যত দোষ নন্দ ঘোষের এই কথা বারংবার বলে বিএনপির উপরেই দোষ চাপাল লীগ সরকার। মাহমুদুর রহমানের মত সাংবাদিক বন্দি হলো তথাকথিত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহিদ ব্লগার রাজিব এর মুখোশটা সবার সামনে খুলে দিয়ে। এই কীট যে আমাদের মত মানুষের কি ক্ষতি করেছে তা কেবল সেই সময়কার ব্লগার বা ব্লগের সাথে সম্পর্কিত মানুষেরাই বলতে পারবে। কোথাও ব্লগার কথাটা শুনলেই নাস্তিক আখ্যা দিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে।
এই সব নাস্কিক বা সেকুলার যারা বিদেশ আছে, তাদের বলি, ভাই তোরা দেশ থেকে পালিয়েছিস বেচেঁ গিয়েছিস ভালো আছিস ভালো থাক, আমাদের দেশের বিষয়ে তোদের নাক গলাতে হবে না, দয়া করে তোরা তোদের মত ভালো থাক, চুপ থাক।
২০১৪ সালের জানুয়ারীর নির্বচন। কি হলো? লীগ সরকার বলল ক্ষমতা ছেড়ে গেলে দেশ জঙ্গি রাষ্ট হয়ে যাবে, পাকিস্তানি রাষ্ট কায়েম হয়ে যাবে। যে করেই হোক ক্ষমতায় থাকতে হবে। প্রহসনের একটা নির্বাচন দিয়ে বিনা প্রতিদন্দিতায় বিজয়ী হয়ে সংসদ এ বসল। বিরোধী দল হয়ে আসল আরেক হাটু ভাঙ্গা দল, যাদের মুখ কোন কালেই কথা বলার যুক্ত ছিল না, জনগন তাদের কাছে কোন সমালোচনাও আশা করেনি সরকারের বিরুদ্ধে। সংসদের কি হয় তা মানুষ এখন দূয়েকটা কথা জানে পত্রিকা মারফত। সংসদের কি হচ্ছে তার খবর কেউ রাখে না, (আমি নিজেই রাখি না)। নির্বচন এর পরবর্তীতে কি হলো? আবার সেই জ্বালাও পোড়াও নোংরা রাজনীতির কাদা ছুড়াঁছুড়ি। টানা কয়েক মানুষকে ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখা হলো। বিএনপি কতটা র্নিবুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে এই সময়টাতে তা এই আন্দোলন এর ফলাফল দেখেই বলে দেওয়া যায়। উল্টো হলো কি, কিছু নিরাপরাধ মানুষ মরল, কিছু মানুষ বেকার হলো। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিএনপি তাদের অনেক নেতাকে দল থেকে হারালো কিছু নেতা কারাবন্দি হলো। ভুল বলেছি বোধ করি,কিছু নয় সংখ্যাটা বিপুল হবে। কারণ এমন অনেক নেতা আছে যাদের কোন হদিস নেই তাদের কে ত আর বন্দি হিসাবে বিবেচনা করতে পারি না।
স্বাধীনতার পর থেকেই ধর্মীয় রাজনীতি করে আসছিল জামাত, পরবর্তীতে তার সাথে যোগ দেয় বিএনপি। ধর্মকে নিয়ে রাজনীতির ধারাটা কিন্তু শুরু করে দিয়েছিল আমাদের সেই চাচা খ্যাত এরশাদ কাকু। ধীরে ধীরে লীগও এই রাজনীতিতে জড়িয়ে পরে। কিন্তু ভুল করে বসে সেখানেও। একটা বিশেষ গোষ্ঠির দিকে নজর দিতে গিয়ে অন্য গোষ্ঠীর দিকে চোখ ফিরানোর কথা ভুলেই যায়। কিন্তু যখন টনক নড়ে এই দিকে তাকালো ততক্ষনে বড্ড বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। দেশে ততদিনে ধর্মীয় সংঘাত শুরু হয়ে সেটা জঙ্গি হামলায় রুপান্তর হয়ে গেছে।
তারপরেও এই সব ছাগুদের মুখের লাগাম কিন্তু লাগেনি, বারবার বিএনপি কেই দোষারুপ করে নিজের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। বলছি, বিএনপি হোক বা অন্যকোন গোষ্ঠী হোক প্রমাণ করে দেখারে বাপ, দেশের জনগন কানা নয় ওরা দেখতে চায় কে করেছে। যে করেছে তার শাস্তি জনগন নিধারণ করে নিবে।
লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় দোষ হচ্ছে, এরা প্রচার করতে জানে না। ঘটনা যা ঘটে তার ধারে কাছেও যাবে না দূর থেকে আবছা কিছু দেখেই সেটা প্রমাণ করা শুরু করে দিবে। ১২০০ মানুষ মরলে প্রচার করে ১২০ জন মরে গিয়েছে। জনগন কি এই কথাটা বিশ্বাস করে? জনে জনে ধরে জিজ্ঞেস করুন, লীগের কোন প্রচার এখন আর মানুষ বিশ্বাস করে কিনা? খোদ লীগের নিজের দলের লোকেরাই করে না বলেই আমার মনে হয়।
লীগ সরকার এই করেছে সেই করেছে এই প্রচারগুলোও এরা ঠিক মত করতে পারে না। কি করেছে লীগ সরকার বলুন? এই প্রশ্নের উত্তর আশা করলে অগ্রিম উত্তর বলে দেওয়া যাবে। পদ্মা সেতু করেছে? আরে বাপ একটা সেতু দিয়েই দেশের সব উন্নতি নির্ভর করে না। আরো কিছু প্রজেক্ট এর কথা শুনে আপনি বাহ!বাহ! দিতে পারেন এই সরকার কে। আর এই কথাগুলো প্রচার করে লীগের কিছু মানুষ কিন্তু তারা বুঝাতে পারে না আসলেই কি হচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ কিন্তু তাদের সেই কথায় ঠিকই বুঝে যায় আসলেই উন্নতি হচ্ছে। আমি বলছি উন্নতি দেখছেন কিন্তু উন্নয়ন কিন্তু দেখছেন না। আর দেখবেন বলেও আশা করি না। উন্নতি আর উন্নয়ন দুটো ভিন্ন বিষয়। লীগ সরকার উন্নয়ন করছে কিন্তু সেটা যতটা করছে তারচেয়ে লোক দেখানো উন্নতিই করছে বেশি। এই সরকারের আমলে রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে অনেক এটা স্বীকার করতে হবে কিন্তু অন্য বিষয়গুলো কি হয়েছে? অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়া আপনারা যেটাকে উন্নতি বলছেন সেটাকে আমি ও উন্নতি বলছি কিন্তু উন্নয়ন বলতে পারছি না। পদ্মা সেতুতে দেশের উন্নতি হবে কিন্তু উন্নয়ন হবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি মানে দেশের উন্নয়ন কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে হয়েছে উল্টোটা। ৩৯০ টাকা মণ বেগুন ঢাকায় এসে হয়ে যায় ৮০টাকা কেজি। উন্নয়নটা হলো কোথায়।
কিছুদিন আগেও লীগ সরকারের সেইসব কিছুছাগুরা বলে বেড়াত, দেশের মাদ্রসাগুলো জঙ্গি উৎপাদন কারখানা। হলো কি? সব জঙ্গি হামলার পিছনে যে সব মানুষের নাম আসে তাদের অধিকাংশই দেশের নামকরা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র বা পাশ করা। মাদ্রাসা নয় এগুলো, সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আরেকটা বিষয় এখন কোন হামলা হলেই প্রথমে শুনতে হয়, কোন ধর্মের লোকেরা করেছে এই হামলা। আরে ভাই, খুনির আবার ধর্ম কিসের? কিছু হলেই ধর্মের গন্ধ কোথা থেকে যে আসে তাই বুঝি না। প্রথম আলোর একটা নিউজে পরিসংখ্যান দেখলাম ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয়েছে ২৬২টি। সবগুলো নাকি সংখাগরিষ্ঠরা করেছে। গাজাঁখুরি গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। সংখ্যালঘুরা নিজেরা দোয়া তুলসী পাতা নিজেরা গন্ডগোল করে না।
লীগ সরকারের একটু বেশি ভারতপ্রীতি আছে এটা লোক মুখে প্রচলিত কথা। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, যা রটে তার কিছু হলেও ঘটে। এই ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। লীগ সরকার আদৌতেই ভারতের পা চাটা সরকার। কেন জানিনা এদের ভিতরে ভারত প্রীতিটা একটু বেশি।
গুলশান-২ এর হামলা বিএনপি বা লীগ করেছে এটা আমি বিশ্বাস করি ন। কে করেছে সেটা বলছি না, কিন্তু যারা করেছে তাদের উদ্দেশ্য কিন্তু সফল। জঙ্গী, পুলিশ সহ ২৮ জন মারা গিয়েছে গনমাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুযায়ী। কিন্তু আসলেই কি শুধু ২৮ জন মরেছে?
উত্তর না, সাথে ২৮ লক্ষ মানুষকে মেরে রেখে গেছে, সাথে ১৮ কোটি মানুষকে বিপদে ফেলে দিয়ে গেছে। এই ঘটনার পর কূতনীতিক সম্পর্ক কতটা ভালো থাকবে, বিশেষত জাপান, আর ইতালির সাথে? প্রশ্নবোধক হয়েই থাকল প্রশ্নটা।
বিদেশী বিনিয়োগ কতটা কমবে? প্রবাসে কর্মসংস্থান কতটা কমবে? সবগুলোই প্রশ্নবোধক থেকে গেল।
বাবুল আক্তার এর স্ত্রী হত্যার কি হলো ? ভুলে যাবেন না, এই ঘটনাও কিন্তু আমি বা আমার মত যারা লিখবে তাদের লেখার খোড়াক হয়ে থাকবে।
আবার একটু পিছনে ফিরে যাই, বিডিআর বিদ্রোহ, ২০১০ সালের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী, পরবতীতে সোনালী ব্যাংক (হলমার্ক) কেলেঙ্কারী, তারপর রির্জাভ কমে যাওয়া, তারপর রিজার্ভ এর টাকা চুরি যাওয়া এগুলো কিসের ইঙ্গিত বহন করে? লীগ সরকার সফল হয়েছে, ক্ষমতায় থেকে দেশকে উন্নতির জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে বলে যারা চিৎকার করেন তাদের বলছি এই তার উন্নতির লক্ষণ। আপনার পকেট থেকেই টাকা চলে যাচ্ছে সরকারের পকেটে আপনি জানতেই পারছেন না কিভাবে হচ্ছে সেটা। এত কিছুর পরেও কি করে একটা সরকার সফল হতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়।
কিছুদিন আগে একটা পত্রিকায় দেখলাম আমাদের আইসিটি উপদেষ্টা মহোদয় যাকে ভবিষ্যত নেতা ভাবা শুরু করেছে দেশের মানুষ, ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছে লীগ সরকার সেই জয় বাবার আঠার হাজার কোটি টাকার কোন হিসাব নেই । উল্টো দিকে আরেকজন মি. তারেক মিয়া তিনশো কোটি পেটে চালান করে নিজেই চালান হয়ে গিয়েছে দেশের বাইরে। এই ব্যাটা যে দেশে আসতে পারবে না বা কবে নাগাদ পারবে তার কোন হিসাব সে তো দূরের কথা আমাদের স্বরাষ্টমন্ত্রীও বলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।
এতক্ষণ লেখা পড়ে হয়ত অনেকেই ভেবে বসে আছেন, আমি লীগ বিরোধী আর জোট পন্থি। ভাবনাটা ভুল, আমি কোন দলেরই সমর্থন করি না যতক্ষণ তারা কোন কাজ করছে দেশের জন্য। এই যে বিএনপির কথা বলছি, এরা ক্ষমতায় এলেই কি পরিস্থিতি রাতারাতি পরির্বতন হয়ে যাবে? এমন ভাবনা ভাবা আর দিবা স্বপ্ন দেখা একই কথা। এরা ক্ষমতায় এলে বরং আরো পিছিয়ে যাবে দেশ। প্রতিহিংসার রাজনীতি এরাও খুব ভালো ভাবেই দখলে এনেছে। একবার ক্ষমতায় যেতে পারলে লীগের ছাগুদের চামড়া ছাড়িয়ে নিবে এটা দেশের যে কোন মানুষই বলতে পারে। দেশকে লুটেপুটে খাবে কোন সন্দেহ নেই, অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে বিগত অনেকগুলো বছরে। স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নেওয়া হয়েছিল পাচঁ বছর পরপর সরকার পরিবর্তন হবে, আর তাই ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে পরবর্তী পাচবছর এর সঞ্চয় করে, কিন্তু এবার সময়টা একটু লম্বা হয়ে গিয়েছে।
আর লীগ যখন বিএনপির বদনাম করে তখন আমার কাছে হাস্যকর লাগে, কারণ বিএনপি এখন আর বিরোধী দল নয়, বরং নাম মাত্র একটা সংগঠন যারা বিগত নির্বচন এ অংশগ্রহণ পর্যন্ত করেনি। তাহলে কি আওয়ামী লীগ বিএনপি কে ভয় পায়। পেলে পেতেও পারে, কারণ এখন দেশের যা অবস্থা তাতে আওয়ামী লীগ যে খুব বিপদে আছে তা অনুমেয়। নির্বচন দেওয়া মানেই ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়া, এই ভয়ে নির্বচনও দিবে না। অন্য দিকে হাটু ভাঙ্গা দল নিয়ে বিএনপি দেশের উন্নয়ন না করতে পারলেও ক্ষমতায় এলে সাইজ করবে লীগের ছাগুদের ।
-
উত্তরেণের পথ কি এই সংকটময় অবস্থায়? এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। উপায় ত অবশ্যই আছে, আর সেটা হচ্ছে দেশের স্বার্থে দেশের মানুষের স্বার্থে এই দুই দলের নেত্রীকে এক হওয়া যেমনটা হয়েছিল এরশাদ পতনের সময়। আমি দ্বিধাহীন ভাবেই স্বীকার করি, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ক্ষুরদার বুদ্ধিসম্পন্ন কোন ব্যাক্তি যদি থাকে দেশে তবে সে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উনার চেয়ে বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ দেশে নেই আর থাকলেও তার ক্ষমতা নেই। অন্যদিকে খালেদা জিয়া এতটা বুদ্ধিমান না হলেও উনার কিন্তু এই ধরণের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা আমরা দেখেছি পূর্বে। সুতরাং এই দুইজনকে এক কাতারে আনতে হবে, দেশের জন্য ত বটেই, উনাদের নিজেদের ভালোর জন্য হলেও।
-
ছোট্ট করে একটা কথা, আমাদের দেশ তরুন নেতৃত্ব হারাচ্ছে, আগামীর নেতা তৈরি হচ্ছে না।
শিব খেরার একটা কথা মনে পড়ল, সাধারণ নেতা অনুসারী তৈরি করে আর প্রকৃত নেতা নতুন নেতা সৃষ্টি করে। আমাদের নেতারা এই কথাটা বোধ করি পড়ে নাই, তাই শুধু অনুসারী তৈরি করেছে নেতা তৈরি করেনি।
-
ভুলগুলোর জন্য মার্জনা চাইছি, আপনাদের মূল্যবান মতামত আশা করি। কেউ শুনবে না, কেউ জানবে না আমাদের কথা, কিন্তু আমরা নিজেরা ত জানব, কথা ত বলতে পারব।
-
বিঃদ্রঃ অনলাইন ‍নিউজ পোর্টালগুলো ভুয়া খবর দেখে কেউ প্রতারিত হবেন না। সত্যতা যাচাই করুন। একটা নিউজ এর সত্যতা যাচাই করার জন্য প্রয়োজনে দশটা সাইট দেখুন, একটা সঠিক নিউজ দশটা ভুয়া নিউজ জানার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×