somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিঠিঃ তারপর একদিন হয়ত জানা যাবে বা হয়ত জানা যাবে না

০২ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয়তমেষু,

অযথা কল্পনা আঁকা আমার পুরোন অভ্যেস দোষ। তোমার সাথে যেদিন কয়েকশ ক্রোশের দূরত্বের দলিল বানিয়ে ফেললাম, ঐদিন থেকে বাঁকি শতাব্দির মত দিনগুলোতেও তাই আমার অব্যাক্ত কল্পনায় স্বপ্নের আঁকিবুকি শেষ হয়নি। যেদিন পরিচ্ছন্ন ক্ষুদেবার্তায় বার্তা এসেছিল আমাকে চাওনি কখনো, সেদিনও আমি কল্পনাতে ছোট্ট একটা বারান্দা এঁকেছিলাম। যেখানে আমাদের দু'কামড়ার ফ্লাটের মেঘ মুক্তি পেত। আমি জানতাম এসব স্বপ্ন কেবলই বালির বাঁধ। আমার একার পক্ষে গড়া অসম্ভব! তবুও আমি সেদিন খুব ভোরে হাতে হাত রেখে হাঁটার ইচ্ছেটার খুন করতে পারিনি। আমি পারিনি অবচেতনে লাল নীল পর্দাগুলোর ইতিহাস লেখা থামাতে।


কোন একদিন খুব রাতে আমাদের দূরত্বে স্থিরতা আনার ইচ্ছা হল। এগিয়ে যেতে হবে জীবনে। থেমে থাকা তো অসম্ভব! তোমার অনুপস্থিতিগুলোও তাই বইয়ের ভাঁজে রাখা গোলাপের পাঁপড়ির মত মেঘ লুকিয়ে ফেললাম। আমার মাঝে বাজুক কিছু কান্না জলের শব্দ, বৃষ্টি পড়ুক পথ ভেঁজাতে আমার হয়ে, ছুঁয়ে দিক তোমাকে।

এরপর কেঁটে গেল সাত টি বছরের মত সাত খানা উড়ুউড়ু দিন। হুট করে একদিন মাঝ রাতে বৃষ্টি নামল ছোট্ট একখানা ক্ষুদে বার্তায়। বাহ! আমার পরীক্ষার কথা মনে আছে তোমার? তুমি কি তবে সব আবেগ অবজ্ঞা ভুলে চলে এলে? ফিরে! নাহ! আবার হারালে বইয়ের ভাঁজে। এভাবে ধরা অধরার খেলায় একদিন হটা্ৎ তুমি এলে .! আমার বিশ্বাস অবিশ্বাসের টান-পোড়েনের সংসারে ঝড় তুলে তুমি এলে। খুব অভিমান জমে ছিল, তাই লুকোচুরি তে রাজি ছিলাম। পাও। একটু উপেক্ষা তোমারো প্রাপ্য। খুব উদাসী বৃষ্টি দিনটা বেশ ভালো যাচ্ছিল। পরীক্ষার বাঁকি আর এক দিন। আর তোমার কেয়ার! বাহ! আমার মধ্যে স্বত্তা কাঁপিয়ে যে ভালো থাকার বাতাস ছড়ালে এগুলো তোমাকেও খারাপ থাকতে দেবেনা এই বলে রাখলাম।

কি মনে করে খুব রাতে অমাবশ্যা নামল আমার বারান্দায়। ঝড়ে সব ভেঙ্গে গেল। জেনেছিলাম যখন, তুমি আর নেই সে তুমি! শুনেছিলাম যখন, এ তুমি এখন থেকে অপরিচিতা কারো একান্ত ব্যাক্তিগত সম্পত্তি! তুমি ফিরেছিলে . . . তবে এই যে তোমার একদম নির্ঝনঝাট হারান বিজ্ঞপ্তি , এটা পৌঁছে দিতে।

বালক তোমার, ভালো থাকার দিন এইত কেবল শুরু, তাই আর অযথা কেমন আছো তুমি জানতে চাইব না। পথ চলার যে হাতটি খোজনি কখনো, সেই হাতে হাত রেখে তোমার নতুন পথে হেঁটে যেও। অনন্তকাল ধরে । অযথায় আমাকে মাঝে মাঝে কথা বলা, দেখার করার ছলে কষ্ট দিও। আমি নেব, সবটুকু নিজের করে নেব। খুব বাতাসে তোমার পাল ছিড়ে গেলে যে আজকাল বৈঠা হাতে নেবার জন্য আছে, তাকে খুব করে আগলে রেখ একরাশ নীলচে লাল ভালোবাসা দিয়ে। আমাদের বারান্দার স্বপ্নটা আমি ছাড়তে পারব না, শুধু পাল্টে নেব। ওখানে তুমি আর তাকে রেখে দেব। আমার ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো তার মত করে সাজিয়ে নেব। হয়ত কখনো দেখে হবে হয়ত না , তবুও সেই খুব ভোরে হাত ধরে হাটা আর হবে না। খুব অবাক লাগে জানো তো, আগে যেসব নাটক গুলো খেলাচ্ছলে সাজান ছিল ওগুলোই আজ আমাদের পরম সত্য হয়ে মাথার চুলি বিলি কাটছে!


রাত জাগা ছেলেটার মনে পড়বে অথবা পড়বেনা, তবুও আজ সেলফোনের এপ্রান্তে যে মেয়েটার গলা কাপছিল জল নিয়ে, তার কাছে খুব দেরীতেও আবেগের অবশিষ্টাংশ বাকি পড়ে থাকবে। তোমার নিউরনের যে কোনে আমার ছোট্ট একটা জায়গা হবে, ঠিক তার পাশে আমার খেলাঘড়ে পুতুল বিয়ের মত তোমাদের আলো ছায়া দিনগুলো তোলপাড় করবে। তারাপদ রায়ের কবিতার লাইনগুলো খুব আওড়াতে ইচ্ছে করছে, যা শোনার জন্য তুমি নেই -

এইভাবে যাবে দিনের পর দিন
বৎসরের পর বৎসর।

তারপর একদিন হয়ত জানা যাবে
বা হয়ত জানা যাবে না,
যে
তোমার সঙ্গে আমার
অথবা
আমার সঙ্গে তোমার
আর দেখা হবে না।


হয়ত কোন একদিন কাঁক ডাকা কুয়াশা ভোরে খুব প্রিয় মানুষটার সাথে পথ চলতে হাতে হাত রেখে মেয়েটির মনে পড়বে - " একটা ছেলে ছিল, যার সাথে ঠিক এমনই এক ভোঁরে হাটার কথা ছিল, বিনিময়ে সে শুধু একটিবার হাতে হাত রাখতে চেয়েছিল। আচ্ছা, ছেলেটা এখন কোথায়? সাংসারিক হিসেব নিকেশে বিশাল ব্যাস্ত কোন বাবা নাকি সেই আগের মত এলোমেলো খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর চশ্মার তলে লুকিয়ে রাখা তীক্ষ্ণ দৃষ্টির আঘাতে হৃদয় চুর্মার করা ক্ষমতার অধিকারী রাত জাগা ছেলেটা? নতুন করে যার হাত ধরে পথ চলা শুরু সে নিশ্চয় বদলে ফেলেছে আমার দেখা পুরন নিরেট মানবকে!"

বালক হয়র তার একান্ত ব্যাক্তিগত সম্পত্তির ঠোঁটে বাতাস খুঁজে নিচ্ছে। আর বালিকা অন্ধকারে আলো খুঁজেছিল যা একেবারে হারাল আজ ।


ইতি,
যে মেয়েটি চোখের ছবি আঁকত
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×