somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পূর্ণেন্দু পত্রীর কথোপকথন___(১১-১৭)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথোপকথন – ১১


– তুমি আজকাল বড্ড সিগারেট খাচ্ছ শুভন্কর।
– এখুনি ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি…
কিন্তু তার বদলে??
–বড্ড হ্যাংলা। যেন খাওনি কখনো?
– খেয়েছি।
কিন্তু আমার খিদের কাছে সে সব নস্যি।
কলকাতাকে এক খাবলায় চিবিয়ে খেতে পারি আমি,
আকাশটাকে ওমলেটের মতো চিরে চিরে,
নক্ষত্রগুলোকে চিনেবাদামের মতো টুকটাক করে,
পাহাড়গুলোকে পাঁপর ভাজার মতো মড়মড়িয়ে,
আর গঙ্গা?
সে তো এক গ্লাস সরবত।
–থাক। খুব বীরপুরুষ।
–সত্যি তাই…
পৃথিবীর কাছে আমি এই রকমই ভয়ন্কর বিস্ফোরণ।
কেবল তোমার কাছে এলেই দুধের বালক,
কেবল তোমার কাছে এলেই ফুটপাতের নুলো ভিখারি,
এক পয়সা, আধ পয়সা কিংবা এক টুকরো পাউরুটির বেশী আর কিছু চিনিয়ে নিতে পারিনা।
–মিথ্যুক..।
–কেন?
–সেদিন আমার সর্বাঙ্গের শাড়ি ধরে টান মারনি?
– হতে পারে।
ভিখারিদের কি ডাকাত হতে ইচ্ছে করবে না একদিনও??

কথোপকথন - ১২

কাল বিকেলে
তোমার ঘাড়ে চিবুক রেখে প্রকাণ্ড
বাঘ কি খুঁজছিল
দেখতে পেলে?
-জানি জানি খুঁজছিল তার সুখের নদীর উৎস
এবং পারাপারের
শেষ পারানি
-সমস্ত রাত
নিজের বুকের পাথর খুড়ে বইয়েছে
কাল ক্ষতিকারক
জলপ্রপাত।
-লক্ষী সোনা,
আমি তোমার রৌদ্র ছায়ায় সর্বক্ষনই
সংগে হাটি
সমুদ্র তীর কষ্ট দিলে বিছোই বালির
শীতল পাটি
বুকের কাছে নেই তবুও তোমার
বুকেই বসতবাটি
ভুল কোরো না।

কথোপকথন –১৩

-তোমার মধ্যে অনন্তকাল বসবাসের ইচ্ছে
তোমার মধ্যেই জমিজমা ঘরবাড়ি, আপাতত একতলা
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?
-একতলা আমার এক বিন্দু পছন্দ নয়
সকাল সন্ধে চাঁদের সাথে গপ্পো গুজব হবে
তেমন উচু নাহলে আবার বাড়ি নাকি?
-আচ্ছা তাই হবে
চাঁদের গা ছুঁয়ে বাড়ি,
রহস্য উপন্যাসের মতো ঘোরানো প্যাচানো সিড়ি
বাঁকে বাঁকে সোনালী সাজানো স্বপ্নদৃশ্য
শিং সমেত মায়া হরিণের মুণ্ডু
হাসছো কেন ? বলো হাসছো কেন?
-কাটা হরিণ দেয়ালে ঝুলবে অসহ্য।
হরিণ থাকবে বনে বন থাকবে আমাদের,
খাট পালংকের চারধারে
খাট পালংকের নিচে ছোট্ট একটি পাহাড়
পাহাড়ের পেটচিরে ঝর্ণা।
-আচ্ছা তাই হবে
পাহাড় চিরে ঝর্ণা, ঝর্ণার উপরে কাশ্মিরী কার্পেট
সিলিং এ রাজস্থানী-ঝাড়ঝলে ঝাঝরীর মতো উপুর করা।
জানালার গায়ে মেঘ, মেঘের গায়ে ফুরফুরে আদ্দির
পাঞ্জাবী
পাঞ্জাবীর গায়ে লক্ষ্ণই চিকনের কাজ
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?
-মেঘ রোজ রোজ পাঞ্জাবী পরবে কেন?
এক একদিন পরবে বালুচরী কিংবা
খাটাও এর পাতলা প্রিন্ট
মাথায় বাগান-খোপা-খোপায় হীরের প্রজাপতি
-আচ্ছা তাই হবে।
মেঘ সাজবে জরি পাড় সাড়িতে
আর তখনই নহবতখানার সানাই এ জয়জয়ন্তী
আর তখনই অরণ্যের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বুনো জানোয়ারের হাকডাক।
খাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য জেগে উঠবে জলপ্রপাত
শিকারের জন্য তীর ধনুক, দামামা দুন্দুভি
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন?
-তুমি এমন ভাবে বলছো
যেন ভালবাসা মানে সাপে নেউলো ভয়াভহ
একটা যুদ্ধ।
ভয় লাগছে
অন্য গল্প বলো।


কথোপকথন – ১৪

-দেখো অনন্তকাল ঝিঁ ঝিঁ পোকার মত
আমরা কথা বলছি
অথচ কোন কথাই শেষ হয় না এখনও।
একটা লাল গোলাপের কান্নার গল্প শোনাবে বলেছিলে
কবে বলবে?
-চলো উঠি। বড্ড গরম এখানে।
-দেখ, অনন্তকাল শুকনো বাঁশপাতার মতো
আমরা ঘুরছি
অখচ কেউ কাউকে ছুঁতে পারলাম না এখনও
একটা কালো হরিণকে কোজাগরী উপহার
দেওয়ার কথা ছিলো
কবে দেবে?
-চলো উঠি। বড্ড ঝড়ঝাপটা এখানে।


কথোপকথন – ১৫

তরমুজের বাইরে টা সবুজ
ভিতরটা লাল
আচ্ছা বলোতো, কেন মনে পড়লো কথাটা?
পারলে না?
তোমার সবুজ শাড়ির দিকে তাকিয়ে।



কথোপকথন – ১৭


—নন্দিনী, একটুখানি তো জল
অথচ ভাসাও স্রোতের কলস্বরে।

—তুমিও তো মিহি বাতাস, শুভঙ্কর
অথচ কী করে কাঁপাও সুখের ঝড়ে?



সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×