ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্বে হা লং উপসাগরের বুক জুড়ে নয়নাভিরাম পাহাড়গুলোকে নিয়ে রয়েছে বর্ণিল সুপ্রাচীন ইতিহাস।
অনেক অনেক বছর আগের কথা, ১৭৫০ ইয়োন পর (৩৬০ বর্গ-বৎসর বা এক লাখ উনত্রিশ হাজার ছয়শত বছরে এক ইয়োন) ভগবান যেইদ (Ngọc Hoàng Jade) অমরত্ব পেলেন। ভিয়েতনাম সবে নতুন রাজ্য। উত্তরের সাগর থেকে বহিঃশত্রুরা মূর্মুহুর্ত ভিয়েতনামকে আক্রমণ করে যাচ্ছে। শত্রু জাহাজ থেকে ভিয়েতনামীজদের বাঁচানোর জন্য ভগবান নক্ হোয়াং যেইদ স্বর্গ থেকে একটা ড্রগন আর তার বাচ্চাদের পাঠালেন। শত্রু জাহাজগুলো যখন ভিয়েতনামের সমুদ্রসীমায় ঢোকে, ড্রাগন পরিবার মুখ দিয়ে আগ্নিগোলা নিক্ষেপকরে শত্রু জাহাজগুলোকে ভস্মীভূত করে ভিয়েতনামিজদের রক্ষা করে। এরপর তারা সাগরের উপর থুথুর সাথে হীরে, পান্না, মণিমাণিক্য ছিটাতে থাকে। হাজার বছর পর ওইসব হীরে, পান্না, মণিমানিক্য জাদুবলে দ্বীপ আর ক্ষুদ্র-দ্বীপে (Islet) পরিনত হয়। শত শত ছোট বড় পাথুরে দ্বীপ ওই উপসাগরে প্রতিবন্ধকতার দেয়াল তৈরী করায় শত্রুরা আর আক্রমণ করতে পারেনা। যুদ্ধে বিজয়ের পর মা ড্রাগন আর সন্তানেরা স্বর্গে ফিরে যায় নি, তাদের তৈরী শত শত ছোট ছোট পাহাড়ী দ্বীপ সাগরের এই অঞ্চলকে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এনে দিয়েছে। ড্রাগন পরিবার এই এলাকাকে ভালোবেসে ফেলে। তারা মানুষের রূপ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে মিশে যায়, সংসার ধর্ম করে রাষ্ট্রকে সমৃদ্ধশালী করে তোলে। ভিয়েতনামী জনসাধারণ বিশ্বাস করে তাদের পূর্বপুরুষেরা ড্রাগন ছিলো। উপসাগরের যেখানটায় মা ড্রাগন নেমেছিলো তার নাম ‘হা লং’, আর বাচ্চারা যেখানে নেমেছিলো তার নাম ‘বাই টু লং’। ভিয়েতনামের সবাই এই কাহিনী জানে। ড্রাগন পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতার চীরস্থায়ী প্রকাশে এই উপসাগর এবং শহরের নাম রাখা হয় Hạ Long, অর্থাৎ ‘ড্রাগন অবতরণ’।
আজকের সভ্য, সুন্দর, সুশৃংখল এবং শক্তিশালী ভিয়েতনাম আমেরিকানদের চীরস্থায়ী লজ্জ্বা হয়ে পৃথিবীর বুকে সগর্বে দাঁড়িয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৩৭