somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খুব কম সময়েই হাসিনার কর্তৃত্বের অবসান ঘটবে

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গত ৩ ডিসেম্বর কলকাতার দৈনিক টেলিগ্রাফ পত্রিকায় ভারতীয় ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যত নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ন ‍নিবন্ধ ‍লিখেছেন। যার শিরোনাম ছিলো Too quiet for comfort - The looming political crisis in Bangladesh

গুরুত্বপূর্ন নিবন্ধটি পরবর্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের চেয়ারম্যান ডক্টর আলী রিয়াজ ও যুক্তরাষ্ট্রের পিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার বিষয়ক ডক্টর তাজ হাশমীকে তাদের ব্যাক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে শেয়ার দিতে দেখা গেছে।

আসুন দেখে নেই সেই গুরুত্বপূর্ন নিবন্ধটির চুম্বক অংশ >>>>


..... গৃহযুদ্ধ, সাইক্লোন ও উপদলীয় রাজনীতির প্রকোপ থেকে বিকশিত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সে কারণে গুরুত্ববহ। তা সত্ত্বেও যা উদ্বেগের তা হচ্ছে রাজনৈতিক ফ্রন্টে অনগ্রসরতা। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের একমাত্র কারণটি হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগকে পশ্চিম পাকিস্তানীরা কোনো জায়গা দিতে চায়নি। এখন নিয়তির পরিহাসটি হচ্ছে বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রে আওয়ামী লীগই সেই অবস্থানে উপনীত।


..... বলার অপেক্ষা রাখে না ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী আর্মি ভয়ঙ্কর অপরাধ সাধন করেছে, যাতে স্থানীয় দালালেরা সহযোগিতা জুগিয়েছে। তা সত্বেও এই বিচার পরিচালনা এবং পরিণতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে মারাত্মক আপত্তি রয়েছে। এমনকি দুর্ভাবনাটি হচ্ছে এই বিচার পরিচালনায় রাষ্ট্র ও সমাজ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে যেভাবে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ তার রাজনীতি ও মতবাদকে একীভূত করেছে। সেগুলো প্রণোদিত করছে বটে, কেননা পার্লামেন্টে কোনো বিরোধিতা নেই। আর সাংবাদিকেরা যারা যৌক্তিক সমালোচনা করছেন, তারাও জায়গামত নিগৃহীত হচ্ছেন। শিক্ষাবিদ যারা বাংলাদেশের বৃহত্তর গণতান্ত্রায়নের কথা ভাবেন, তারাও গালি খাচ্ছেন।


..... আজকের বাংলাদেশে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ‘হেলো’ বা চন্দ্রবলয় রয়েছে। অনেক ভারতীয় গান্ধীকে গান্ধী বলতে পারলেও মুজিবকে মুজিব বলতে পারার দৃষ্টান্ত সেখানে দুর্লভ। তিনি এককভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’, বাঙ্গালীর বন্ধু। সেই মুজিব দীর্ঘকাল পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন এবং ক্ষমতায় থাকাকালীন মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। শেখ হাসিনার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার পরিচালনা আংশিক, এমনকি পরিপূর্ণভাবেই তার পিতার প্রতি ভালবাসা ও শ্রদ্ধা থেকে উৎসারিত। তারপরও বলা প্রয়োজন যেভাবে তার প্রশাসন কাজ করছে তাতে তার পিতার ‘ইগনোবল’ বা কদর্য সময়কালের ভয়ঙ্কর পরিণতির পানে ধাবিত হচ্ছে, আপাতদৃষ্টিতে যেখানে তিনি ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ১৯৭৫ সালের সূচনায় বিরোধিতাকে আইন বহির্ভূত করতে সংবিধান সংশোধন করেছিলেন।


..... আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপি ও জামায়াত পরাস্ত ও মনোবলহীন। ইতিমধ্যে দ্বিপাক্ষিক সুবিধার্থে আর্মির সঙ্গে প্রশাসন জোট বেঁধেছে। গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়নক হিসেবে আর্মিকে রাস্তা নির্মাণের চুক্তি দিয়েছে। এতে আর্মির শক্তিমত্তা বিপদ পরিসীমায় বিস্তৃত, যেমন- তা মতের অবাধ্য জনপ্রিয় পত্রিকাগুলোকে টেলিকম কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করেছে।


..... ইতিহাসে শেখ হাসিনা এবং তার পরামর্শদাতারা এক-দলীয় সরকার হিসেবে যথাযথ স্থান করে নিতে পারবেন বটে, কেননা ব্যালট-বাক্সের মাধ্যমে তাদের উত্থান। নাৎসীরা ১২ বছরেরও কম সময় ক্ষমতায় ছিল, অথচ তাদের সমর্থকদের হাজার বছরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেস, পাকিস্তানের পিপলস পার্টি এবং শ্রীলংকায় ফ্রিডম পার্টি, সবাই এক-পার্টির রাষ্ট্র গড়তে চেয়েছে, কিন্তু কেউই কয়েক বছরের বেশি টেকেনি।


..... বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি ভবিষ্যতবাণী নিশ্চিত, তাতে শেখ হাসিনা ও তার দলের কর্তৃত্বের অবসান ঘটবে এবং সেটা তাদের প্রত্যাশারও কম সময়ে ঘটবে। সেটা হতে পারে বিরুদ্ধ মতবাদের দরজা বন্ধ থেকে ইসলামী গ্রুপের উত্থান থেকে। অথবা আর্মি নতুন করে ক্ষমতা দখল করে নিতে পারে। এগুলো বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশকে বিলম্বিত করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:১২
৬৫টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×