বাংলাদেশে দূর্নীতি ছিল, আছে এবং থাকবে। কারণ এদেশে একজন আমলা থেকে কামলা পর্যন্ত সবাই দূর্নীতিপরায়ন । যারা দূর্নীতি করেন না তারা হয় সুযোগের অভাবে চরিত্রবান অথবা সাহসের অভাবে নীতিবান। এ দেশে দু-চারজন যারা সত্যি সাত্যি সৎ তারা এক্সেপশনাল, তাদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা। একজন দূর্নীতিগ্রস্থ মানুষ অনেকটা আইস বার্গ বা হিমবাহের মতো, যার ১০ ভাগ থাকে পানির উপরে বাকি ৯০ ভাগ পানির নিচে। পানির উপরের দশ ভাগ দেখেই তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কারও বুঝতে অসুবিধা হয়না।
সরকারী যে সমস্ত দপ্তরে দূর্নীতির সুযোগ আছে সে সব দপ্তরের কর্মচারী/ কর্মকর্তাদের প্রত্যেকের জীবনযাত্রার মান দেখলেই বৈধ আয়ের সাথে সেই মানের যে বিস্তর পার্থক্য সেটা বুঝা যায়। এই পার্থক্যটা কেন তা বুঝতে কারোর অসুবিধা হয় না। তারপরও আমরা তাদেের সাথে বন্ধুত্ব করি, আগ বাড়িয়ে সামাজিক সম্পর্ক তৈরী করি, এমনকি আত্মীয়তাও করি। তার মানে হচ্ছে আমাদের মধ্যেও রয়েছে একটা কলুষিত লোভী মন। সব কিছু জানা বুঝার পরও আমরা এমন ব্যক্তির সাথে চলতে দ্বিধা করিনা, দূর্নীতি গ্রস্থ ব্যক্তিও জানেন সবাই তার দূর্নীতির কথা জানে- বুঝে কিন্তু তারপরও তিনি সমাজে বুক ফুলিয়ে চলতে সংকোচ করেন না। সব কিছু ওপেন সিক্রেট, তারপরও কোন সমস্যা নাই।
কিন্তু গণেশ উল্টে যায় তখন যখন সিক্রেটটা খসে পড়ে ওপেন হয়ে যায়, পত্রিকার পাতায় বা টিভির কোন নিউজ চ্যানেলে সে সব চিত্র ফুটে উঠে। সাথে সাথে কিস্তিমাত; তখন তিনি একেবারে একঘরে। যে নেতার পায়ে তিনি নিত্য দিন উপঢৌকন পৌঁছে দিতেন সেই নেতার দরজা পর্যন্ত আর যেতে পারেন না, যে হালুয়া রুটি খোর উচ্ছিষ্টটুকু খাওয়ার জন্য পায়ের কাছে মেকুর এর মতো বশে থাকতো সেও তার উপর বিষ্টা ত্যাগ করে সরে পড়ে। এটাই হচ্ছে সমাজের চরিত্র।
তবে শত নিরাশার মধ্যও আশার কথা হচ্ছে সামষ্টিক ভাবে আমাদের সমাজের মনে হয় এখনও একটা ইতিবাচক চরিত্র আছে তাই দূর্নীতি করুন কোন সমস্যা নাই, সবাই জানুক তাতেও কোন সমস্যা নাই কিন্তু গনমাধ্যমে এসে গেলেন তো ফেঁসে গেলেন।
ছবিঃ নেট থেকে