বিশ্বকাপে খেলতে এসেছেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে। নিজের জন্মদিনের তিন দিন আগে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন দলের অধিনায়কত্ব। অধিনায়ক হওয়ার উচ্ছ্বাসটা প্রকাশও করে ফেলেছেন সরাসরি_ 'এ অনুভূতি অন্যরকম। এটা বলে বোঝানো যাবে না।' বিশ্বকাপে এখনও গোল না পেলেও দলকে জেতাতে রাখছেন অসাধারণ ভূমিকা। তাই আর্জেন্টাইনদের হৃদয়ে ম্যারাডোনার পাশাপাশি এখন আছেন তিনিও। ছেলেবেলা থেকেই স্পেনে বেড়ে ওঠা বলে আর্জেন্টিনার জাতীয় সঙ্গীতও ভালোভাবে গাইতে পারেন না। কিন্তু হৃদয়ে রয়েছে তার প্রিয় স্বদেশই। তাই স্পেনের ডাক উপেক্ষা করতে পেরেছেন। জন্মভূমির জন্য লড়ে যাচ্ছেন বিশ্বমঞ্চে। গ্রিসের বিপক্ষে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে সেটার প্রমাণ আবারও দিলেন। পাশাপাশি জন্মদিনের জন্য নিজেই নিজেকে দিয়ে রাখলেন আগাম এক উপহার। আজ লিওনেল আন্দ্রেস মেসির ২৩তম জন্মদিন। কীভাবে তিনি আজকের মেসি হয়ে উঠলেন সেটাই তুলে ধরা হলো এ লেখায়।
নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াতে কে চায়! কিন্তু ওই ছোট্ট ছেলেটার জন্য বনের মোষ তাড়িয়েছে যারা তাদের পুরো পৃথিবী আজ কুর্ণিশ করুক। ছেলেটার জন্ম 'বিখ্যাত' রোজারিও শহরে। ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন । ছোট থেকেই খেলাপাগল। পাড়ায় একটা ফুটবল ক্লাব ছিল। নাম গ্রান্ডোলি। ক্লাবের জুনিয়র দলের এক ম্যাচে একাদশ সাজাতে গিয়ে একজন কম পড়ে গেল। কোচ পড়ে গেলেন ঝামেলায়। ওই দলেই খেলতেন তার বড় ভাই রদ্রিগো। কোচ অগত্যা রদ্রিগোর মায়ের শরণাপন্ন হলেন। মা রাজি হলেন না। ছেলের বয়স যে মাত্র চার। অথচ যাদের সঙ্গে খেলবে তারা পিচ্চিটার চেয়ে দুই-তিন বছরের বড়। তবে রাজি হলেন শাশুড়ির চাপাচাপিতে। কিন্তু দেখা গেল, তার সঙ্গে বড়রা কেউই পারছে না! তবে গোল দেয়া হয়নি ওই ম্যাচে। গোল দিল পরের ম্যাচে। এরপর থেকে আর কোনো বিশ্রাম নেই। খালি গোল আর গোল! তখন থেকেই ওর সঙ্গে খেলার জন্য সবাই ব্যতিব্যস্ত। ক্লাসের ফার্স্ট বয়টার সঙ্গে এক বেঞ্চে বসতে কে না চায়। তবে অন্যদের লক্ষ্যটা ছিল ওকে হারানোর। কিন্তু যে শক্তি প্রকৃিতদত্ত, সে শক্তি আটকাবে কে?
ছাত্র হিসেবেও ছেলেটা নজর কেড়েছিল। সব বিষয়েই ভালো নম্বর পেত। সঙ্গীত ও অঙ্কনে আরেকটু ভালো। কিন্তু সবসময়ই বেশি নম্বর পেত শারীরিক শিক্ষায়। শতকরা একশ ভাগ। শিক্ষকরা বলতেন, সাত বছরের এ ছেলেটা সবার চেয়ে আলাদা। পড়ালেখা, খেলাধুলা এবং অবশ্যই তার মানবীয় আচরণে। সবকিছুর গড় হিসেবে স্কুলের অন্যতম সেরা ছাত্র।
আট বছর বয়স থেকে খেলা শুরু হলো বড় পরিসরে। শহরের ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েসে। তার খেলা এমনই মনোমুগ্ধকর ছিল, কোচরা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হতেন এ ছেলেকে আমরা কী শেখাব, ওই তো বরং সবাইকে শেখাতে পারে! প্রতি মৌসুমে তার গোল সংখ্যা ১০০-এর ওপর থাকত! ক্লাবে তার মতোই আরেকজন অসাধারণ ফুটবলার ছিল। গুস্তাভো রোজা। কিন্তু রোজা তার থেকে পিছিয়ে পড়েছিল মানসিক দক্ষতা ও পারিবারিক উৎসাহহীনতার কারণে। যেটা জর্জ ও সেলিয়ার পরিবার তাদের সন্তানের জন্য সুনিশ্চিত করেছিলেন।
১১ বছর বয়সে ছেলেটার জীবনে শুরু হলো এক আলাদা সংগ্রাম। ধরা পড়ল শারীরিক সমস্যা। গরিব বাবা-মায়ের অভাবের সংসারে ঝড় নামিয়ে দিয়ে গেল সোমাটোট্রপিন। ছেলের শরীরে উচ্চতাবর্ধক হরমোনের অভাব, কিন্তু মাসে প্রায় ৯০০ মার্কিন ডলার খরচ করার ক্ষমতা তো তাদের ছিল না। চিন্তিত বাবা-মাকে রক্ষা করলেন চার্লস রেক্সাস। তার ফুটবলীয় জ্ঞান দেখেই ক্রীড়া পরিচালক রেক্সাসকে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার স্কাউটিং ক্যাম্প তাকে নেওয়ার জন্য 'ইয়েস' বলে দিল। রেক্সাসও বার্সেলোনার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জর্জকে জানিয়ে দিলেন। জর্জের পুরো পরিবারই চলে এল স্পেনে। আর তার ছেলের সময় কাটতে লাগল বার্সার ট্রেনিং ক্যাম্পে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উন্নতি ঘটতে থাকল ছেলেটার শারীরিক গড়নেরও। এরপর ২০০৪ সালে উত্থান। প্রথমে রোনালদিনহোর ছায়ায় থাকতে হয়েছিল। কিন্তু নিজেকে আলোয় আনতে মোটেও সময় লাগল না। ২০০৬ সাল থেকেই পুরো বিশ্ব তাকে চিনে ফেলল। লিওনেল আন্দ্রেস মেসি নামে বার্সেলোনায় খেলা 'আগামী'র বিশ্ব কাঁপানো আরেকজন আর্জেন্টাইন ফুটবলার তৈরি হচ্ছে। তার উত্থানের ছয় বছর পর আজকে যখন চলছে বিশ্বকাপের উন্মাদনা-আনন্দযজ্ঞ, তখন পুরো বিশ্বের কাছে তিনি এক মহাতারকা। পুরো বিশ্বই হয়তো এজন্য কুর্ণিশ করছে বার্সেলোনাকে। সেটা বার্সার প্রাপ্যও। অবশ্য মেসির প্রতিভা না থাকলে তাদের মূল্যায়নটা কেমন হতো সেটা আর কোনো দিনই জানা সম্ভব হবে না। এমন বিতর্কে তারা জড়াবে কেন? তবুও হয়তো এ জানাটাই সান্ত্বনা_ প্রতিভাবানদের স্থান তাদের অসাধারণত্বের মাঝেই তৈরি থাকে!
(দৈনিক সমকাল থেকে কপি করা হয়েছে)
(শুভ হোক তোমার ২৩তম জন্মদিন
বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে স্মরনীয় করে রাহ তোমার ২৩তম জন্মদিন
আজকের পৃথিবীতে যতফুল ফুটবে সব তোমার জন্য)
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।