ব্যস্ত নগরীর নাগরিক সভ্যতার যান্ত্রিকতার দাপটে আমরা প্রায়ই হাপিয়ে উঠি। তারপরও জীবনের তাগিদে থাকতে হয় এখানে। প্রতিদিন রুটিনমাফিক করে যেতে হয় নানা কাজ। তাই বাধ্য হয়েই আমরা চাই একটু নির্মল পরিবেশে বেড়ানোর সুযোগ। অল্প সময়ে নির্মল পরিবেশে বেড়ানোর জন্য ঢাকার অদূরে বিরুলিয়া একটি অন্যতম সুন্দর জায়গা।
মিরপুর-১ নম্বর বেড়িবাঁধ দিয়ে এগিয়ে আশুলিয়ার দিকে অগ্রসর হলে হাতের বাম দিকে প্রথমে যে গ্রামটি চোখে পরবে সে গ্রামটির নামই বিরুলিয়া। ভাসমান দ্বীপের মতো দেখতে বিরুলিয়া গ্রাম
মজার ব্যাপার কি জানেন! আজকের এই ছোট্ট বিরুলিয়া গ্রাম প্রায় ১০০ বছর আগে ছিল বিরুলিয়া নগরী। এই বিরুলিয়ায় একসময় বাস করতেন তারকচন্দ্র সাহা, গোপিবাবু, নিতাইবাবু, রজনী ঘোষ প্রমুখ ব্যবসায়ীরা। বংশী, ধলেশ্বরী ও তুরাগ নদী পথে তাঁরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। তারা এখানে বসে নিলাম কিনতেন আর পরিচালনা করতেন জমিদারীর। আর এখানেই একসময় বসতি ছিল আদি ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয় এর কর্ণধার এর পিতৃপুরুষদের। ঢাকার অতি নিকটে হলেও ঢাকার মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে এখানের মানুষের জীবনযাত্রার কোনো মিল নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুত, গ্যাস সব মিলিয়ে পিছিয়ে থাকা লোকগুলো নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে কোনো মতে।
যদি পানাম নগরীর মত বিরুলিয়ার শতবর্ষ প্রাচীন এই সকল স্থাপনাগুলোকে সংরক্ষণ করা হত সরকারী উদ্যোগে, তাহলে এটা হতে পারত ইতিহাস আর ঐতিহ্যের মিশেলে এক অনন্য পর্যটন কেন্দ্র।
বর্ষায় চারিদিকে যখন অথৈ জল নিয়ে ছোট্ট বিরুলিয়া দ্বীপের মত জেগে থাকে তার শতবর্ষ পুরানো এই সকল স্থাপনা নিয়ে, তখন বড়ই নয়নাভিরাম লাগে দেখতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১