somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রাম বাংলার ভূত। বাংলাদেশের মত এত ভূত পৃথিবীর আরো কোন দেশে নাই। আসেন একটু পরিচিত হই ভূতের সাথে।

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের এই দেশ সুজলা সফলা ভূতে ভরা দেশ। গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে রয়েছে কত ভূত, কত কল্প, কত কাহিনী কত গল্প! ভূত নিয়ে একটু আলোচনা করি।

শাকচুন্নী
এটি হচ্ছে পেত্নী জাতীয় ভূত। অল্প বয়সে যাদের বিয়ে হয় এবং অপঘাতে, অত্যাচারে মারা গেলে এ ধরনের শাকচুন্নী তৈরি হয়। এরা সাধারনতো সাদা কাপড় পড়ে। থাকে খাল -বিল -পুকুর ঘাটের পাশে গাছে। এরা আমার মতো সুন্দর ছেলেদের ধরতে চায়। :p পুকুর থেকে মাছ ধরে দিতে বলে। তবে ভূলে ও এ কাজ করা যাবে না।

চোরাচুন্নী
এরা হচ্ছে চোর ভূত এবং ভূতের বউ। এরা সাধারনত মানুষের অনিস্ট করে মজা পায়। খালি বাড়ি পেলে ভিতরে ঢুকে জিনিস পত্র ভাংচুর করে। এদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ঘরের দরজায় কোরআনের আয়াত লিখে রাখা হয়। হিন্দুরা গঙ্গার জল রাখে ঘরে।

মেছোভূত
মাছলোভী ভূত। বাংলার ইতিহাসে সব চেয়ে ছেঁছড়া ভূত। বাজার থেকে কেউ মাছ কিনে নিয়ে যদি একা একা রাতে বাড়ি ফিরে তাহলে ধরে। এরা সুযোগ মতো পেয়ে বসলে মাছ খেয়ে মাছের কাটা শরীরে ডুকায়া দেয়। এদের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো " মূত্র বিসর্জন " :p আপনি আপনার মূত্র দিয়ে একটা সার্কেল তৈরি করে ঐ সার্কেল এ বসে থাকবেন। মেছোভূত আপনাকে গালাগালি করবে! বউ থাকলে বউ নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখাবে। তারপর গালি দিতে দিতে চলে যাবে।

পেঁচাভূত
পেঁচার সাথে একটা পেঁচি ও থাকে। এদের চোখ রাতের বেলায় লাল রং ধারন করে এবং জ্বল জ্বল করে। এরা একা কাউকে পেয়ে বসলে মেরে ফেলে। এদের খপ্পরে পড়লে বাঁচার কোন ওয়ে নেই।

মামদো ভূত
হিন্দু শাস্ত্র মতে এরা নাকি মুসলমান ভূত। এদের এই যুগে দেখা যায় না।

ব্রহ্মদৈত্য
এরা খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পছন্দ করা ভূত। এদের খপ্পরে পড়লে যদি আপনাকে ভালো লাগে বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পায় তাহলে ছেড়ে দিবে। কিন্তু নোংরা, অপরিষ্কার থাকলে ধরে ঘাড় মটকে দেয়। বাঁচার উপায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।

স্কন্ধকাটা
মাথা নাই ওয়ালা ভূত। এরা অনেক প্রাচীন কালের ভূত। অতীতে এদের মাথা কেটে শাস্তি দেয়া হতো। এদের চোখ থাকে বুকে, অনেকেরই আবার থাকে না। এদের ধড় দিয়ে রক্ত টগবগ করে। বিশ্রী গন্ধ ছড়ায়। এরা সাধারণত হাতের লাগ পেলে আপনাকে ধরে মাথা টেনে ছিঁড়ে ফেলবে। কি ভয়ংকর! :3 বাঁচার উপর গায়ে যত শক্তি আছে তা কাজে লাগিয়ে দৌড় দেয়া।

আলেয়া :
এ ভূত থাকে জলাশয়ে, নদীতে। এরা ধোঁয়াশা করে রাখে সবকিছু। পথ ভুলিয়ে নিয়ে যায় জেলে, মাঝিদের। তারপর ডুবিয়ে মারে। তবে মেয়ে আলেয়া ভূত জেলেদের উপকার করে।

নিশি
এইটা হলো মায়াবী ভূত। এরা ছেলে মেয়ে উভয় হইতে পারে। এরা রাতে আসে। আপনাকে মায়ার সুরে ডাকবে। ঘরের বাইরে নিবে। তারপর মেরে ফেলবে। এদের আবার লুইচ্চা তান্ত্রিকরা পোষে । অন্যের বউকে নিয়ে যায়, সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে যায়। এদের থেকে বাঁচার উপায় হইলো রাতে যখন এরা ডাকবে তখন তিনবার না ডাকা পর্যন্ত সাড়া না দেয়া। কারন এরা দুবারের বেশি কাউকে ডাকতে পারে না।

কানাখোলা
এরা থাকে চরাঞ্চলে। একা পেলে আপনাকে সম্মোহিত করে বার বার এ মাথা থেকে ও মাথা হাঁটাবে। এদের খপ্পরে না পড়ার উপায় হইলো একা একা চরে না যাওয়া।

কাঁদরা মা :
এরা তিন রাস্তার মোড়ে লালশাড়ী পড়ে কান্না কাটি করে। আপনাকে মিথ্যা অথচো বিশ্বাস্য গল্প শুনিয়ে লোভ দেখিয়ে নির্জন জায়গায় নিয়ে যাবে। তারপর আপনাকে মেরে ঝুলিয়ে দিবে। বাঁচার উপায় রাস্তায় এসবের দেখা পেলে সূরা কেরাত পড়তে পড়তে দূরান্ত গতিতে চলে যাওয়া। কিন্তু কপাল খারাপ থাকলে পা চলবে না। তখন সালাম দিবেন। খালা বলে ডাকবেন। একটু দয়া হলে বাঁচার সম্ভাবনা আছে।

ভূলো :
এরা আপনার সাথে কোন খাদ্য থাকলে আপনাকে হাঁটাবে। আর খাদ্য খেয়ে শেষ করবে। আপনি কোন পঁথে কোন দিকে যাচ্ছেন কিছু বুঝতে পারবেন না। একসময় হাঁটতে হাঁটতে আপনার কান্না চলে আসবে। তখন আপনাকে ছেঁড়ে দিয়ে চলে যাবে।

শাকিনী :
এরা মেয়ে ভূত। যারা শশুর বাড়িতে নির্যাতনে আত্মহত্যা করে তারা শাকিনী হয়ে যায়। এরা শাশুমা কে বেশি জালাতন করে।

ডাকিনী
এরা হচ্ছে ডাকাত ভূত। ডাকিতে করতে গিয়ে যারা গৃহস্তের হাতে নির্মমভাবে বলি হয়েছে তাদের আত্মা। এরা যুগ যুগ ধরে ঐ পরিবারের মানুষকে জ্বালাতন করে। নতুন বউদের অত্যাচার করে।

মোহেনী :
এরা হলো সব থেকে রুপসী ভূত। এরা মেয়েদের আত্মা থেকে তৈরি। এসব তৈরি হয় প্রেমে ছেঁকা খেয়ে আত্মহত্যা করা মেয়েদের মাধ্যমে।এরা অত্যন্ত ছেলে লোভী। কি সুন্দর কি কালো! কাউকে ছাঁড়ে না। এদের থেকে বাঁচার উপায় হলো যথাসময়ে বিয়ে করে ফেলান।

বোবাভূত :
এরা হলো বকচো* ভূত। আমারেও ধরে :'( বুকের উপর বসে গলা টিপে ধরে। জানটা যেন যায় যায় অবস্থা! শেষে ছাইড়া দেয়। এরা শতকরা ৭০ ভাগ মানুষকেই ধরে। এদের হাত থেকে বাঁচার জন্য তেঁড়া, বাঁকা হয়ে শুইতে হয়। আলিফের মতো লম্বা হয়ে শোয়া যাবে না। পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল আর নাক এক দম টান টান হলে এ ভূতে ধরার সম্ভাবনা বেশি।

উফফ!! ভূত নিয়ে কত কথা? ভূত দেখছেন?
আমি দেখছি। কাঁদারমা আর সাদা কাপড় পড়া কবরী ভূত। সেই এক ভয়াবহ হিস্টোরি। :'(

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:১১
৬১টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×