somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও বাংলাদেশিদের আতিথেয়তা!!

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

International Film Festival আসলে কি জিনিস? কোন চলচ্চিত্র বোদ্ধা কি এর ব্যাখ্যা দিবেন? বিষয়টা সম্পর্কে একটু ক্লিয়ার হতে চাই। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব মানে কি শুধু দেশি বিদেশী সিনেমা প্রদর্শন আর ঢাকা ক্লাবের আড্ডা? নাকি এর বাইরেও কিছু লিখিত অলিখিত ব্যাপার স্যাপার থাকে বা থাকতে পারে??
A few cubic meters of love নামের একটি অসাধারণ সিনেমা দেখে বের হয়েছি মাত্র। মনের ভেতরে অন্য রকম ভালোলাগা। বাইরে বের হতেই দেখা হয়ে গেল চায়নিজ পরিচালক Ji Zhi এবং জাপানী পরিচালক Yusuke Inaba ও তার প্রযোজকের সাথে। স্বভাবতই যেটা হওয়ার কথা, কিঞ্চিৎ গল্প পরিচয়, তাই হল। কথার এক ফাঁকে Ji Zhi জানাল তার কাছে কোন স্কেডুল নাই। একটা তার খুব প্রয়োজন। কেননা সে জানেই না কখন কোন সিনেমা দেখানো হচ্ছে। ভালো কথা। নিজ দায়িত্বেই তাকে নিয়ে গেলাম ইনফর্মেশন বুথে। নিজেই জোগাড় করে দিলাম স্কেডুল। জাপানী বা চাইনিজদের যে বিষয়টা খুব লক্ষণীয় তা হল তারা ইংরেজিতে কথা বলতে খুব একটা পটু না। এদের বিষয়টাও একই রকম। ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে আমাদের গল্প তখন প্রায় জমে উঠেছে।
হাটতে হাটতে আমরা পুনরায় আবার ইনফর্মেশন বুথ থেকে থিয়েটারের সামনের পূর্বের স্থানে ফিরে এসেছি। হটাত মনে হল প্রানবন্ত একটি আড্ডার মাঝে পানি ঢেলে দেওয়া হল। উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল কোন বিশেষ কারন ছাড়াই তাদের সাথে চিৎকার চ্যাচামেচি শুরু করে দিলেন। উপস্থিত আমি ও অন্যরা সবাই 'হা' হয়ে গেলাম। মানে কি?? এই ভদ্রলোক চিৎকার করছেন কেন? চিৎকার করার মত কি ঘটেছে??
তার বক্তব্য গুলো ঠিক এরকম- "এই কোথায় গিয়েছিলে? বললাম না কোথাও যাবে না, এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে। তোমাদের নিয়ে ঢাকা ক্লাবে যাওয়া হবে। তোমারা কেন জেনারেল মানুষের সাথে চলাফেরা করছ? কথা বুঝতে পারনি?" (ইংরেজি অনুবাদ)
তারা অন্তদন্ত হয়ে গাড়িতে উঠে বসল। মিঃ জামাল তখনো চিৎকার করে যাচ্ছেন। ফ্যাটিভ্যাল কমিটির অন্য একজন ভদ্র মহিলা (আমি ঠিক চিনি না) জামাল সাহেবকে ঠাণ্ডা করতে চেষ্টা করলেন- "ওকে বলে লাভ নাই। ও ইংরেজি বোঝে না। আপনি ওকে বলুন"।
এই ঘটনার পরের পরবর্তী ১০ মিনিট আমি জাস্ট 'হা' করেই দাঁড়িয়ে ছিলাম ঐ প্লেসে। আতিথেয়তায় বিশ্ব খ্যাতো বাংলাদেশের আতিথেয়তা দেখে আমার চোখ তখন কপালে। এই কি তবে বাংলাদেশের কালচার? বিদেশিরা ইংরেজি জানে না বলে যে কোন ভঙ্গিমায়ই কি তাদের সাথে কথা বলা যায়?? এটাও জানতে চাই general people, VIP & VVIP এর সংজ্ঞা।
দুরদেশ থেকে কোন মানুষ বাংলাদেশে এসেছে। এখানের মানুষদের সাথে কথা বলবে, সেয়ারিং হবে, আড্ডা হবে এটা তো খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তাছাড়া আমরাও তো কোন না কোন ভাবে সিনেমার সাথেই জড়িত। যারা সেখানে উপস্থিত ছিল তারা তো কেউই সিনেমার বাইরের মানুষ না। তা হলে এই বিষয় নিয়ে এতো উত্তেজিত হওয়ার কি আছে??
আমি অবশ্যই স্বীকার করে নিচ্ছি যে, উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল একটি বড় দায়িত্ব পালন করছেন। সারা শহরকে সিনেমা দেখানোর দায়িত্ব এখন আপনার কাঁধে। অনেক দিক সামাল দিতে গেলে মেজাজ ঠিক রাখাটা খুব কঠিন। কিন্তু তাই বলে বিদেশিদের সাথে এই আচারন??
জামাল সাহেব, আপনি যদি একা সামাল দিতে না পারেন তা হলে অন্যের সাহায্য নিন। এতে আপনার গৌরব কমবে না। আন্তর্জাতিক মানের হোস্টিং এ পারদর্শী বহু শিক্ষার্থী এদেশে আছে। এদেশে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ানো হয়। এদেশে ইংরেজি ভাষার চর্চা হয়। এমন কি এদেশে বহু মানুষ ইন্টারপ্রেটার হিসেবে, টুর গাইড হিসেবেও করে খাচ্ছে। আপনি তাদের সাহায্য নিচ্ছেন না কেন??
-
আরেকটা বিষয়। গতকাল মিঃ জামালের বক্তিতায় তিনি বলেছেন বাংলাদেশ সরকার অনুদান হিসেবে ২০ লক্ষ্ টাকা দিয়েছে। সেন্সর ফি মৌকুফ করেছে। আবার দেখালাম এতো এতো স্পন্সর। তা হলে টাকা গুলো দিয়ে হচ্ছে কি?? শহরের কোন মানুষই জানে না যে, এই শহরে আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্ট হচ্ছে। এমন কি চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কর্মীরাও জানে না। যাকেই প্রশ্ন করি, সেই বলে জানে না। তা হলে জানেটা কে? কার জন্যই বা এই ফেস্টিভ্যাল? Rubaiyat Hossain এর আন্ডার কন্সট্রাকশনের খাতিরে কিছু মানুষ আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছেন। ইনফ্যাক্ট আমিও এই আমন্ত্রণ পত্রের মাধ্যমেই জেনেছি। আমার কথা ছেড়েই দিলাম। আমি না হয় চুনো পুঁটি। কিন্তু শহরের দর্শকরা?? নেই কোন প্রচার প্রচারণা। নেই কোন আমেজ। আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভালের পরিবেশ আমাদের নাই সেটা বহু আগেই প্রমানিত। কিন্তু যতটুকু হচ্ছে সেটাই বা সবার কাছে পৌঁছে দিতে এতো কার্পণ্য কিসের? বুঝি না!!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×