somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিনেমা কি করে দেখতে হয় সেটাও শেখার আছে।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সিনে ক্যামেরা চলতে চলতে অর্থহীন ভাবে একটু জার্ক করে গেছে। বা ধরুন নায়িকা ১৯৭১ সালের কাপড় পড়তে গিয়ে ভুল করে ১৯৭৫ সালের ব্লাউজ পড়ে ফেলেছে। অথবা তির্যক করে লাইট ফেললে হয়ত আরও সুন্দর লাগত, কিন্তু লাইট ফেলা হয়েছে সফট করে। এগুলো সিনেমা বিচার না। অদ্ভুত ভাবেই লক্ষ্য করেছি সিনেমা বিচার করতে গিয়ে আমরা একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট নিয়ে অকারন জল ঘোলা করে থাকি। বেশির ভাগ সময়ই সেটা হয়ে থাকে পুরো সিনেমার তুলনায় খুবই সামান্য বিষয় অথবা সেটা হয়ত সিনেমার মূল বিষয়ই না। একারনে আমি একবার বলেছিলাম, সিনেমা কি করে দেখতে হয় সেটাও শেখার আছে। সেই শিক্ষা থেকে আমরা এখনো বহু দূরে।
সাবজেক্টিভ বা অবজেক্টিভ এই দুটি শব্দের মাঝে সমন্বয় সাধন করতে গিয়ে কখনো কখনো সিনেমার উপর অবিচার করা হয় (এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত)। অনেক সময়ই অনেক সমালোচক নিজের সমালোচনাকে অবজেক্টিভ প্রমান করতে গিয়ে একটা অদ্ভুত ব্যালেন্সড করে থাকেন। তাতে মূলত হয় যে সিনেমার বড় বড় ত্রুটি গুলো হালকা ভাবে উপস্থাপিত হয় অথবা দৃষ্টি সীমার বাইরে চলে যায়।
সিনেমার একটা নিজেস্য ভাষা আছে। সেটা শুধু এডিটিং না, শুধু মেকাপ না বা শুধু সাউন্ড না। সব কিছুর সমন্বয় একটি গতি। যা আপনাকে সিনেমার সাথে কানেক্ট হতে সাহায্য করে। দর্শক নিজেও সিনেমার অংশ হয়ে ওঠেন।
প্রতিটা দর্শক বা সমালোচক সমালোচনা করেন একটি নির্দিস্ট দৃষ্টিকোণ থেকে। মূলত বলা যায় তার সিনেমার সাথে বোঝা পড়ার এক্সপেরিয়েন্স থেকে। আমি কখনোই মনে করি না, একজন সিনেমা মেকার কেবলই একজন গল্পকার, একজন দার্শনিক, একজন বিশ্লেষক বা একজন ইন্টার্টেইনার। এগুলো সব কিছুর সমন্বয়েও কেউ ডিরেক্টর হতে পারেন বা এগুলোকে বাদ দিয়েও কেউ ডিরেক্টর হতে পারেন। অদ্ভুত কোন এক কারনে আমরা সিনেমায় গল্প দেখতে চাই। হোক সেটা লিনিয়ার বা নন লিনিয়ার ফর্ম। কিন্তু সিনেমা মানেই কি গল্প? বা সিনেমা মেকার কি গল্প বলতে বাধ্য? গল্প ছাড়া কি সিনেমা পূর্ণতা পায় না? ভেবে দেখার সময় এসেছে। যদি বলি সিনেমা হল পরিচালকের ভাবনা বা তার কথা। তা হলে এটাও সত্য যে, ভাবনা সব সময় শৃঙ্খলা বদ্ধ হয় না। এলো মেলো ভাবনা যদি ভাবনা হয়ে উঠতে পারে তবে এলো মেলো ইমেজের বিন্যাস কেন সিনেমা নয়??
দর্শক সিনেমার সাথে কানেক্ট হওয়ার মানেই কিন্তু বিষয়টা এমন নয় যে দর্শক সিনেমাটা বুঝবেন বা তাদের ভালো লাগবে। কখনো কখনো সিনেমার ইমেজ, সাউন্ড, এডিটিং দ্বারা দর্শকের ইন্দ্রিয়র উপর টর্চার করা অথবা ঘটনার মনস্তাত্ত্বিক বা দার্শনিক বয়ানের সাথে দর্শকের সামঞ্জস্য না হওয়াটাও এক ধরনের সম্পর্ক। মানে পরিচালক যা ফিল করেন, বিষয়টা তাকে যতটা বিরক্ত করে ঠিক সেই বিরক্তি দর্শকের মনে ঢুকিয়ে দেওয়াটাও একটি দুর্দান্ত ক্ষমতা। সব পরিচালকের সে ক্ষমতা থাকেও না।
প্রিয়ডিক সিনেমার ক্ষেত্রে অদ্ভুত ভাবে সব কিছু আমরা বাস্তবের সাথে কানেক্ট করতে চাই। কখনো কখনো এটা ভুল একটা প্রসেস। দৃশ্যমান গল্পের সত্যতা, প্রপ্স, সেট, কস্টিউমের প্রিয়ডের থেকে গল্পের গতি, গল্পের বর্ণনা, গল্পের দর্শনগত বা মনস্তাত্ত্বিক প্রিয়ডও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অধিকাংশ সময় এগুলো আমরা এড়িয়ে যাই। একটু সরল করে বললে বলা যায় যে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রিয়ডিক সিনেমা বুনতে বাংলাদেশের মাটিই লাগবে এই ধারনাটা ভুল। ইট কাঠের আজকের লন্ডন শহরে বসেও বাংলাদেশের গণহত্যার দৃশ্য ধারন করা সম্ভব। শুধু লক্ষ্য রাখলেই হল বক্তব্যটা ১৯৭১ এর সাথে যায় কি না। এই যে ঠিক as it is দেখানোর বা দেখার মানসিকতাটা বোধে হয় এসেছে হলিউডের স্টুডিও ফিল্মের ধারনা থাকে। তবে স্বীকার করছি যে, প্রিয়ডিক সিনেমায় as it is দৃশ্যকল্প নির্মাণ দর্শকের কাছে ম্যাসেস পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ডিরেক্টরের কষ্ট লাঘব করে।
গল্পের ক্ষেত্রে সময়গত নির্দিষ্ট অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ বাদেও কল্পনার সময় বলেও একটি আলাদা সময় থাকতে পারে। যা বাস্তবের সাথে মিলতেও পারে বা নাও পারে। (সংক্ষপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৩
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×