সবার অজান্তে শুরু হয়েছে জাতীয় কবি নজরূল ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। এবং এ ষড়যন্ত্র’র কবলে আজ বাংলাদেশ থেকে হারাতে বসেছে নজরুলের লেখনীগুলো। কিন্তু করা? কারা এরুপ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কি তাদের পরিচয়? আসুন দেখে নেয়।
মনে আছে, একদিন চট্টগ্রাম আউটার স্টোডিয়ামে অনুষ্ঠিত বই মেলায় এক আলোচনা পর্বে বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ অত্যন্ত দম্ভ করেই বলেছিলেন, ‘নজরুল কোন কবি’ই নয়, তিনিও সাম্প্রদায়িক ছিলেন, ইসলামি গান, গজল ইত্যাদি লিখেছেন সুতরাং তাকে কবি বলা যায় না, বড়জোর পদ্য লেখক বলা যেতে পারে’ ইত্যাদি।
কালকে যেমন হুমায়ুন আজাদ নজরুলকে কটু করেছিলেন আজ তারই উত্তরাসুরি কথিত সুশিল সমাজ করে যাচ্ছেন, তাইতো আজ সেই সুশিল সমাজের মুখে হুমায়ুনের দম্ভকে মুক্তচিন্তা জয়গান বলে প্রচার করলে জাতীয় কবির গুনগানকে বিন্দুমাত্র তারা আলোচনা করছেন না।
*
আমাদের জাতীয় কবি এদেশের মাটি মানুষের কবি, দুনিয়ার মজলুম মানুষের কন্ঠস্বর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের শতবার্ষিকী বলেন বা আজও যে বার্ষিকী পালন করা হয়, কিন্তু জাতীয় কবি হয়ে যেমন আমরা তার বার্ষিকীতে মহা ধুমধাম হবে এমন প্রত্যাশা করি, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জাতীয় কবির জন্ম অনুষ্ঠান বলেন বা মৃত্যু বার্ষিকী বলেন মনে হয় কর্তৃপক্ষ শুধু দায় এড়ানোর জন্য যাচ্ছেতায় একটি আয়োজন করছে। জাতীয় কবির প্রতি দেশের আপামর মানুষের যে ভক্তিশ্রদ্ধার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে এর কোন প্রতিফলনই আজ দেখা যায় না সরকারী কিংবা আজকের সুশিল সমাজের কোন অনুষ্ঠানে।
*
বলাবাহুল্য, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের সরকার ‘কবি নজরুল ইসলাম কলেজ’ এর নামটি থেকে ‘ইসলাম’ শব্দটিকে বাদ দিয়ে কলেজটির নামকরন করে ‘কবি নজরুল কলেজ’। এরাইতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফজলুল হক মুসলিম হল’ এবং ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হল’ দুইটির নামও অনুরূপ ভাবে ‘মুসলিম’ নিধনের মাধ্যমে সংশোধন করেছিলো।বর্তমানে এ সংশোধিত নাম দুটি হলো- ফজলুল হক হল, এবং সলিমুল্লাহ হল। এখন মুসলিম শব্দটি আর নেই। জাতীয় কবির নাম থেকে ‘ইসলাম’ নিধন করেই এরা ক্ষান্ত নয়, তার যাবতীয় কর্মকান্ড ও অবদানকেও এরা মুছে দিতে চায় অতীব কৌশলে। রেডিও, টিভি থেকে নজরুল ইসলামের ইসলামী সংগীত ও প্রাণস্পর্শ গজলগুলো প্রায়ই হারিয়ে যাচ্ছে বললে অত্যুক্তি হবেনা।
এখন আজকের সুশিল সমাজের কাছে খোলা প্রশ্ন- নজরুল ইসলামের ‘ইসলাম’ যদি সাম্প্রদায়িক হয় বলে একে সরানো হয়েছে তাহলে আজ সিরাজগঞ্জের শাহজাদ পুরে বিশ্বভারতীর আদলে যে রবীন্দ্র কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে তাহলে রবীন্দ্রর’ ‘ইন্দ্র’ “নাথ” কি নিরপেক্ষতার পরিচয় বহন করে..? এখানে যদি সত্যিকার ভাবে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখা যায় তাহলে দেখা যাবে ইসলাম যেমন ইসলামী হওয়ায় নিরপেক্ষতার বিপরীত ঠিক তেমনি রবীন্দ্র’র ‘ইন্দ্র’ বা ‘নাথ’ শব্দটি হিন্দু ধর্মের হওয়ায় সেটাও নিরপেক্ষতার বিপরীত। তাহলে নিরপেক্ষতা স্থাপনের কথা বলে নজরুলের পাশে ইসলাম যদি সুশিল সমাজ কাটতে পারেন তাহলে ‘ইন্দ্র’ ‘নাথ’ কাটতে এত অনীহা কেন.? ঠিক তেমনি নজরুল ইসলামের ইসলাম যদি বাদ দেওয়া যায় তাহলে জগন্নাথ কলেজের ‘নাথ’কে বাদ দেওয়া হচ্ছে না কেন। নজরুল ইসলামের ইসলামকে যদি বাদ দেওয়া যায় সাম্প্রদায়িক বলে তাহলে রবীন্দ্রর’ ইন্দ্র বাদ দিয়ে রবী কলেজ’ই হচ্ছে সত্যিকারের নিরপেক্ষতা। আর যদি দম্ভ করে রবীন্দ্রনাথ কলেজ স্থাপনে “ইন্দ্র” জগন্নাথ কলেজের “নাথ” সাম্প্রদায়িক না হয় তাহলে কবি নজরুল কলেজে পুনরায় ইসলাম শব্দ যোগ করে ‘কবি নজরুল ইসলাম’ কলেজ পুনস্থাপিত করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
*
সেই সাথে জাতীয় কবির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া গভীর ষড়যন্ত্র রুখে দিতে কবি প্রেমিক সকলকে এগিয়ে আসা এখন সময়ের প্রয়োজন। কারন আজ জাতীয় কবি নেই, কিন্তু তার লেখা চির অম্লান হয়ে থাকবে, অনুপ্রাণিত করবে নির্যাতিত দুঃখী মানুষদের। অথচ, এ লেখাগুলোও আজ সুকৌশলে আড়াল করে ফেলেছে তথাকথিত আজকের সাহিত্যিক নামক কুকুরগুলো’। তাই, আসুন জাতীয় স্বার্থে, মুসলমানদের স্বার্থেই জাতীয় কবির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী কুকুরদের বিষদাঁত ভেঙ্গে দেই।
(বিঃ দ্রঃ জাতীয় কবির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’র রহস্য উম্মোচন এর উপর লেখা এই লেখাটি লেখার ১ম অংশ মাত্র, ২য় অংশে প্রকাশ করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে জাতীয় কবিকে মৌলবাদ সাবস্ত করে তাকে আড়াল করছে করছে আজকের তথাকথিক সাহিত্যিক কুকুরগুলো)
ষড়যন্ত্রের কবলে- জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম। (নজরুলের ইসলাম যদি সাম্প্রদায়িক হয় তাহলে রবীন্দ্র’র ইন্দ্র সাম্প্রদায়িক নয় কেন) Part-01
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।