কিছু কিছু মানুষের আসলে কোন ব্যস্ততাই নেই। তারা নিজেদেরকে কোন কিছুতে ব্যস্ত রাখার জন্যই চারপাশে একটা কৃত্রিম ব্যস্ততা তৈরি করে রাখে।
যে ছেলেটি স্বপ্ন দেখেছিল তার ভাল কোথাও চান্স হবে, তাকে আজ রেল লাইনের পাশে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়। সবার ট্রেন আসে, প্লাটফর্ম দাঁড়ায় আবার ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু চান্স না পাওয়াদের ট্রেন আর সঠিক প্লাটফর্ম খুঁজে পায় না। রাতের একাকীত্বকে সঙ্গী করে কাটতে থাকে তাদের জীবন। রাতের পর রাতে জেগে থেকে ট্রেনের অপেক্ষা করাটা কী যে কষ্টের!
যে মেয়েটা ভেবেছিল মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর পরিবারের সবার সাথে প্রচুর ঘুরাঘুরি করবে, তার ঠাঁই আজকে ছোট্ট রুমটা। পাবলিকে পড়া বয়ফ্রেন্ডও চান্স না পাওয়া কোন মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতে রাজী না। না পাওয়ার যন্ত্রণাটা সে ভালভাবেই টের পায় দিন রাত খেটে যাওয়া বাবার মুখটার দিকে তাকালে। অবশেষে সব কিছু শেষ হয় চিরমুক্তির মাধ্যমে।
যে ছেলেটা স্বপ্ন দেখেছিল পরিবর্তনের, তার স্বপ্নগুলো আজ সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। নিকোটিনকে সঙ্গী করে সে বেঁচে আছে দিনের পর দিন। ভিতর বাহির দুদিকেই পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা কতটুকু তা সে ভালভাবেই জানে।
বাইরে থেকে যে ছেলেটাকে প্রচন্ড হাসি খুশি মনে হয় ভিতরে ভিতরে সে কতটুকু যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছে তা খুব কম সংখ্যক মানুষই দেখতে পায়। আগুনে পোড়া মুখের চেয়ে যন্ত্রণায় পোড়া অন্তরও কোন অংশে কম নয়। আগুনে পোড়া মুখ সবাই দেখতে পায়, কিন্তু যন্ত্রণায় পোড়া অন্তর কজন দেখতে পায়?
কিছু কিছু গল্প হয়তো শেষ পর্যন্ত শেষ হয় না। গল্পকার হয়তো চান না গল্পগুলো পূর্ণতা পাক। পূর্ণতা না পাওয়া এই গল্পগুলো আমাদের চারপাশের বাতাসে হাহাকার করে ভেসে বেড়াতে থাকে, কেউ দেখতে পায় কেউ পায় না। হয়তো একটু ভালভাবে তাকালেই দেখতে পাওয়া যাবে, কিন্তু আমরা কজন দেখার চেষ্টা করি? বাইরেরটা দেখে বিচার করার চেষ্টা আমরা সবাই করি, কিন্তু ভিতরে কী আছে তা কি আমরা দেখার চেষ্টা করি আদৌ??
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫০