আজ সকালে যখন পালাচ্ছিলাম তখন সূর্য তার ঘর থেকে বেরোয়নী, আমি আবছা তারার আলোয় মোবাইলের টর্চ টা চট করে জ্বাললাম, দুরে কুকুরের ডাক, একটা দুটো কুড়াল পাখিও ডাকছিলো, মানুষের বাড়ির ঘরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় নাক ডাকার আওয়াজ,ফ্যানের ঘটাংঘট বা বাচ্চার কান্না না চাইলেও শুনতে হচ্ছিলো! আমি শুধু পালাচ্ছিলাম! স্বভাবে অস্থির কিন্তু প্রত্যয়ে স্থির এই দুই বিপরীত ধর্মী স্বভাবে আমি নিজে নিজেই টানাহেচড়ায় পড়ে যাই! যখন যে যেতে তার সাথেই চলে যাই, আজ পালানোর কথাটা একটু অন্যরকম, আমাকে আসলে সাপে কামড়েছে! না না বাস্তব সাপ না স্বপ্নের সাপ, কাল রাত্তির বেলা মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো, আমি ছাড়া ঘরের আর কেউ জানেনা মায়ের পায়ে গরম তেল পড়ে একটু পুড়ে গেছে, বাবা মা কে চুলোর ধারে যেতে বরাবরই নারাজ, যোগ্যউত্তরসুরীর অভাবে মা রিটায়ার করতে পারছেন না, সে যাই হোক, বাবা জানেনা মায়ের পা এর খবর।আমি কাল সারাদিন রাত গৃহী মানুষ, কোথাও ইচ্ছে করেই যাইনি, ঘরের ওষুধ পত্র খাইয়ে মলম দিয়ে রেখে দিছি, ভাবছিলাম সন্ধ্যায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো বেড়াতে যাবার ছলে পরে আলসেমী করে গেলাম না, মা একটু পর পর উঠছিলো আমার ঘুমের বারোটা বাজছিলো, আমি কাল রাতে সুইটড্রিমস টনিকটা ঠিক মতো খাইনি, ঘুম এলো শেষ রাতে এই মগজে স্টিম রোলার চালু, আমার বাম হাতে কোনো পোড়া দাগনেই, আমার চামড়ায় কোনো দাগ সাধারনত বেশী দিন থাকে না তাই বাম হাতের পচঁনের দাগ গুলোও মিলিয়ে গেছে, সেই পচনের দাগটা উপরের কালো চামড়ার সমেত আবার দেখলাম, তারপর দুর থেকে একটা সোনালীর মতো কালো বক্স বক্স ডিজাইনের সাপ! গেছো সাপ, কে যেনো লাঠি দিয়ে লেজে মারলো সাপটাকে, আমি বিল্ডিং ঘরে জালনা দিয়ে দেখছি,সাপটা উড়ে এসে পা জড়িয়ে ধরলো আমার আমি স্থির হয়ে গেলাম, সে এক অদ্ভুত সময়, নড়লেই সাপ কামড় দেবে স্বপ্নে কে যেনো বলে দিচ্ছিলো, আমি ভয় পাচ্ছিলাম, অস্বস্থি হচ্ছিলো আবার মাথাও ঠান্ডা ছিলো, সাপটা ছেড়ে দেবার পর পায়ে অনেক কাটাকুটির দাগ দেখলাম,দুটো স্পস্ট শদন্ত ফোটানোতে চুইয়ে পড়া রক্ত, আর বিষের প্রভাবে হয়তো হাতের পচুনী থেকে গলগল করে বেরুনো রক্ত! আমার মনে হচ্ছিলো এই আমার পাওনা ছিলো মনে কষ্ট ছিলো না, এমন কি ভয়ও ছিলোনা, ছিলো প্রাপ্তী বুঝে পাবার হতাশা! ভোরে পাল্লাচ্ছি মুখ বাইরের কারো টিউবয়েলে ধুয়ে নেবো, সব আনলেও ওয়ালেট আনতে মনে নাই! আমি দ্বিধা দন্ড নামক রোগে ভুগলেও সেটা অল্প একটু বিশ্লেষনী চিন্তায় কাটিয়ে নিতে পারি! জীবনপাত্রে প্রাপ্তির পাত্র আসার পূর্ন, যা চাইছি সব,মনে থাকে আমার, জীবনের এ বেলায় সবই পেয়েছি আমি এখন কেবল হয়ত মোক্ষ প্রাপ্তির সন্ধানে! আমি বাউন্ডুলে ঘুড়ে বেড়ালেও বরাবরই গৃহী ঘোর সংসারী টাইপের, আমি মুখটা বন্ধ রাখতে বেশী পছন্দ করি, আমার ঘরে সবাই সানাদিন বকবক করে, আমার শুনতে ভালোই লাগে, আমি অধৈর্য হয়ে পড়িনা, তবু আমি পালাচ্ছি, কারন আমার একটা পাপ আছে, আমি পাপ লুকোতে ছুটছি, আমার প্রতি সরল বিশ্বাস আমি ভেঙেছি, খুব শ্রদ্ধেয় কাউকে আশাহত করেছি, আমি নিজের লজ্জা নিজের প্রতি রাগ ক্ষোভ ভয় লুকোতে আমি পালাচ্ছি! আমার ক্ষমতা নেই তার পায়ে ধরে বসে থাকার যেমনটা রেগেমেগে উল্টোপাল্টা বলার পর মায়ের পা ধরে বসে থাকি! সত্যি কথাটা হলো আমি পালাচ্ছি! সূর্যের আগেই পালাচ্ছি! কারো বুকের মাঝে একরাশ সুবাতাস বইয়ে দিতে পালাচ্ছি, দুখী অন্তরে একটু স্বস্থি এনে দেয়া শিখতে পালাচ্ছি, মরে যাওয়া মনটাকে টেনে খুড়ে ছিড়ে শকুনীর দল ঠিক যেখানে ফেলেছিতো আমি ঠিক সেখানে যাবো স্থির করেই বাসা থেকে পালাচ্ছি! সেই আহত প্রজাপতি ফিরিয়ে আনবো বলে বাসা থেকে পালাচ্ছি! কারো মুখে হাসি ফোটাবো বলে আজ পালাচ্ছি,কারো চোখ থেকে ফেনীল দ্বিধা কাটাবো বলে আজ অন্ধকারে পালাচ্ছি, আমার একটা রুপোর কাঠি চাইই চাই তা খুজবো বলে পালাচ্ছি, কারো হাত শক্ত মুঠোয় পুরবো বলে পালাচ্ছি! মোদ্দা কথাটা হলো কারো সঙ্গ সারাজীবন ছাড়বো না বলে নিজেকে শোধরাবো বলে ছুটে বেড়াচ্ছি!আমি জ্যামিতিতে কাচা তবে বৃত্তে কি কি থাকে কেনো থাকে তা বরবরই জানি! আমি আমার কেন্দ্র বিন্দুকে ঘুড়েই আজও ঘুরছি, সারাজীবন ঘুরবো! আমি পালাচ্ছি এক বিপথগামী থেকে পথে আসার জন্য ক্ষমা প্রাপ্তির পথ জানতে পালাচ্ছি!
আলোচিত ব্লগ
মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল
হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'
নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ
আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা
গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.
গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন