somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্রেক ডাউন

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-ব্রেক আপ !
-মানে??
-আমি নির্ণয়ের সাথে ব্রেক করবো।
-আজিব ! কি বলছিস উলটাপালটা । নির্ণয় ভাইয়া কত ভাল একটা ছেলে। তোকে এত্তোগুলো ভালোবাসে।
-এখানেই তো আমার সমস্যা। পুরুষ মানুষ এমন হয় কি করে?
-কিছু বুঝতে পারছি না অহ্নি । তোর মাথাটা কি গেল ?
-আমার মাথা ঠিকই আছে, রিনি। ঐটা একটা বোকার হদ্দ। যখন যা বলি তাই শোনে। উঠতে বললে ওঠে, বসতে বললে বসে। এমন হাদা মার্কা ছেলে কোন মেয়ের পছন্দ, বল তুই?
-কারণ ভাইয়া তোকে ভালোবাসে।
-এমন ভালোবাসা আমার লাগবে না। পুরুষ মানুষ হবে rough and tough. সব কথায় হ্যাতে হ্যা মিলাবে। এমন লুতুপুতু প্রেম আমার চাই না।
-তুই ব্যাপার ভুলে ভাবে নিচ্ছিস। ভাইয়া শুধু তোকে হারাতে চায় না। তাই তোর সব আবদার প্রতিবাদ না করেই মেনে নেয়।
-আমার থেকে তুই বেশি জানিস? ওর তো আমি ছাড়া কোন কিছুতেই আগ্রহ নেই। অন্য কোন মেয়ের দিকে ইচ্ছা করে তাকাতে দেখিনি। How boring one !
-দেখ অহ্নি , পাগলামি করিস না। যা করবি ভেবে দেখ।
-আমার ভাবাভাবি শেষ। আজ বিকেলে ঢেকে ব্রেক আপ করবো।
-অহ্নি, প্লিজ। ভাইয়াকে অযথা কষ্ট দিস না।
-Shut up

বিকাল পাচটা

নির্ণয় আর অহ্নি একসাথে হাটছে। গন্তব্য তাদের চিরচেনা ধানমন্ডি লেক। অহ্নি মুখ বেশ থমথমে। ভেতর ভেতর যুদ্ধ করছে। কি করে এই ছেলেটাকে আজ দুঃসংবাদ টা দেবে? অহ্নি জানে, এই ছেলেটার পুরো জগতটা ঘিরে আছে অহ্নি। চলার পথে অদূরে দুইটা ছেলে দাঁড়িয়ে ছিলো। স্থানীয় বকাটে ছেলে হবে। ওরা কিছুটা কাছে গেলেই একজন বেশ জোড়েসোরে তাদের নিত্য দিনের কর্তব্য করা শুরু করে দিলে। জঘন্য ভাষায় ইভটিজিং করা। দুজনেই জোরে হেটে কাটিয়ে যেতে চাইলো। কিন্তু ছেলে দুটোও ওদের পিছু নিতে শুরু করলো। নির্ণয় যথারীতি প্রতিবাদহীন, চুপচাপ হয়ে অহ্নির হাত ধরে জোরে হাটতে লাগল। আর নির্ণয়ের এই মহাপুরুষ ভঙ্গিমা দেখে একটু আগে যে অহ্নির যে খারাপ লাগা টা শুরু হয়েছিলো সেটা আগ্নেয়গিরিতে রূপ নিলো। মনে মনে ভাবতে লাগলো, আজ শুধু ব্রেক আপ না। পারলে নির্ণয়ের গালে কষিয়ে চড় বসিয়ে আসবে। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখলে ওর ওড়নার আচল ধরে কে হ্যাচকা টান দিচ্ছে। পিছনে ফিরে দেখলে যে ছেলেটা ইভটিজিং করছিলো সেই ছেলেটা ওড়না ধরে অহ্নিকে কাছে টানার চেষ্টা করছে। ভয়ে অহ্নি এবার বাধ্য হয়ে নির্ণয়ের সাহায্য চাইবে এমন সময় দেখলো নির্ণয় ওর পাশে নেই। ঐ ছেলেটা ওড়না ধরে টান দেবার সাথে সাথে নির্ণয় সোজা কোন কিছু বুঝে উঠবার আগেই ঐ ছেলেটার সামনে গিয়ে সজোরে ওর নাক বরাবর ঘুষি বসিয়ে দিয়েছে। ছেলেটা খুব ক্ষীন গতিতে নিজের নাকে দিয়ে দেখলে লাল রং এর পরচিতি তরলের স্রোত ভেসে যাচ্ছে নাক দিয়ে। ব্যাপার টা এতো দ্রুত ঘটে গেছে যে আহত ছেলেটির সাথে সহকারী ছেলেটাও প্রতিক্রিয়া দেখাবার জন্য বেশ সময় লেগে গেল। আর এই সময় টাকে কাজে লাগিয়ে নির্ণয় অহ্নিকে নিয়ে হাওয়া। এতো দ্রুত ঘটে যাওয়া ঘটনায় অহ্নি অনেকক্ষন পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছিলো না, আসলে আজ ঘটলো টা কি!!
ধানমন্ডি লেকে পৌছে অহ্নির প্রশ্নবোধক মুখ দেখে নির্ণয়ও চিন্তিত হয়ে বললো,
-অহ্নি, ভয় পেয়েছো?
অহ্নি কিছু না বলে ফ্যালফ্যাল করে নির্ণয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। যেন নির্ণয়ের চেহারা আজ নতুন করে আবার নির্ণয় করছে।
-কোন ভয় নেই অহ্নি। আমি তো আছি।
বেশকিছুক্ষন পর অহ্নি স্বাভাবিক হলে নির্ণয় বললো,
-হ্যা, তুমি কি যেন বলছিলে, আজ আমার সাথে খুব সিরিয়াস কথা আছে। কি কথা? কোন ছেলে দেখতে আসবে নাকি।
- কথা ! কিসের কথা ? ও আচ্ছা। আরে না । কিচ্ছু না। এমনি বলেছিলাম । আর ছেলে ! তুমি ছাড়া কোন হারামজাদা আমাকে বিয়ে করতে আসলে জুতিয়ে বের করে দেব না।
-এতো উত্তোজিত হচ্ছো কেন? এখনো ভয় করছে?
-না। তুমি পাশে আছো না !
এমন সময় বান্ধবী রিনির ফোন বেজে উঠলো,
-কি রে, ব্রেক আপ হলো?
-না রে। কিন্তু ব্রেক ডাউন হয়ে গেছে।
-মানে ! কি ব্রেক ডাউন হলো আবার?
-নাক।
-নাক? কার নাক? কিসের নাক?
-আহ! আমি এত্তো কথা বলতে পারবো না। আমি এখন নির্ণয়কে নিয়ে মুভি দেখতে যাবো। তোকে পরে সব বলবো।
-অহ্নি...হ্যালো...

The basic ingredients of manliness are not roughness and toughness perhaps displaying it before people. A real man preserves his manhood to protect his dear ones even compromising his life.
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১০:০০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×