somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুরআন অনুধাবন

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুরআন তো শেলফে কাপড় দিয়ে ঢেকে সাজিয়ে রাখার মত কোন কিছু না।

আবু দারদা (রাঃ) বলেন,
“যখন শেষ যুগ আসবে তখন তোমরা তোমাদের মাসজিদগুলো আর মুসহাফগুলো (কুরআনের সংকলিত কপি যা আমরা একটি কিতাব হিসেবে দেখি) সাজিয়ে রাখবে, এটিই হল সেই সময় যখন তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে কারন এটি একটি ইঙ্গিত যে তোমরা (কুরআনের) বিষয়বস্তুর তুলনায় এর
প্রতীকের (কুরআন সাজিয়ে রাখার) পক্ষে অবস্থান গ্রহন করছ।”

আবু দারদা (রাঃ) এর সময়ে কুরআন
লিখে রাখা হতো হাড়, পাতা আর চামড়ার টুকরোতে। আর বর্তমানে কুরআন এমনভাবে সাজিয়ে রাখা
হয় যে লোকেরা এমনকি সেটা ছুঁতে আর পড়তে চায় না কারন এটা তো দেখতে খুবই সুন্দর লাগে!
যদি লোকেরা দেখত যে কুরআন হাড়
বা কোন টুকরোতে লিখে রাখা হয়েছে তবে তারা সাথে সাথেই বলত যে এমন
কাজ করার মাধ্যমে কুরআনকে অসম্মান করা হয়েছে। এরপরও লোকেরা এটা চিন্তা করে দেখে না যে কুরআন অনুসরণ না করাই হল
কুরআনকে অসম্মান করা। কুরআন আমাদের জন্য কি করতে পারে আর আমাদের কিভাবে আল্লাহর এই কিতাব অধ্যয়ন করা দরকার সেই পথ থেকে আমরা হারিয়ে গিয়েছি।

রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
“এই পৃথিবীর শেষ যুগে বোকামিপূর্ণ চিন্তা আর ধারনা বিশিষ্ট যুবকদের দেখা যাবে। তারা ভাল কথা বলবে কিন্তু ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে ঠিক
তেমনভাবে যেমন করে একটি ধনুক থেকে তীর বের হয়ে যায়, তাদের ঈমান তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না…” (বুখারি)

এই যুগে কুরআন তিলাওয়াত করা হয় কোন অনুষ্ঠানের শুরু বা শেষে।
লোকেরা তাদের পুরো জীবন অতিক্রম করে কুরআনকে শেলফে
বসিয়ে রাখার মাধ্যমে এবং যখন তারা মারা যায় তখন লোকেরা এটা শেলফ
থেকে বের করে আনে আর সেখান থেকে কিছু অংশ তিলাওয়াত করে এবং এরপর এই কুরআন আবারও সেই শেলফে ফিরে যায়।
কোন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করা হয় আর কেউ মারা গেলে সুরা ইয়াসিন তিলাওয়াত করা হয় – কুরআনের হক আদায়ের জন্য লোকেরা এসব করে!
সুবহান আল্লাহ!

প্রথম যুগের মুসলিমদের জন্য আল্লাহ’র কিতাব ছিল এক প্রবাহমান শক্তি। সাহাবীদের সেরকম ভিন্ন হওয়ার কারন কি ছিল ?
কারনটি ছিল কুরআন, আর কিছুই না। এই কুরআনই সাহাবীদের পুরোপুরি পরিবর্তন করে দিয়েছিল তাদেরকে নিন্মস্তর থেকে উচ্চস্তরের মনুষ্যত্বে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে। আমাদের ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটবে যদি আমরা তাতাব্বুর (গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করা) করি।

উসমান ইবন আফফান (রাঃ) কিয়ামুল লাইল (রাত্রিকালীন সালাত) শুরু করার পর দুই রাকআতে যে কুরআন তিলাওয়াত শুরু করতেন তাতে তার রাত অতিবাহিত হয়ে যেত,
এরপরও তার সেই দুই রাকআত সালাত অতিবাহিত হতো না।
তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা সালাতে দাঁড়িয়ে থাকতেন আর আমরা সুনিশ্চিত যে তিনি এতে কোন রকম বিরক্তি বা যন্ত্রণা অনুভব করতেন না কারন এটা ছিল আল্লাহর কিতাবের সাথে তার সম্পৃক্ততা। আল্লাহ তার জন্য এটা সহজ করে দিয়েছিলেন।

আল্লাহর কিতাবকে সাথে নিয়ে জীবন পরিচালনা করা আর একে খুব সিরিয়াসলি গ্রহন করা এটা দাবী করে যে আমরা আল্লাহর কিতাবকে ভালবাসবো। কুরআনের সাথে নিজেদের
সংযুক্ত না রেখেই যদি আমরা তা তিলাওয়াত করি তবে আমরা তা থেকে উপকার পাব না।
এটা বুঝা যায় উস্মান ইবন আফফান (রাঃ) এর এই উক্তি থেকে –

“যদি অন্তরগুলো বিশুদ্ধ হয় তবে সেগুলো আল্লাহর কিতাবের তৃষ্ণায় কখনও পরিতৃপ্ত হবে না।”
আমরা যদি আল্লাহর কিতাবকে ভালবাসি তবে আমরা কখনোই যথেষ্ট পরিতৃপ্ত হবো না।

আমরা আল্লাহর কাছে দুয়া করছি যেন তিনি আমাদেরকে তার দ্বীনের ব্যাপারে ফিকহ (আন্ডারস্ট্যান্ডিং) দান করেন এবং আমাদের সকলকে কল্যাণ দান করেন, আমিন।

সূত্র : কুরআন অনুধাবন (লেকচার ও প্রশ্ন-উত্তর পর্ব)
– শায়খ আনওয়ার আল আওলাকি- Black Flag Series in Bangla.
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পথ হারিয়ে-খুঁজে ফিরি

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৩


মনটা ভালো নেই। কার সাথে কথা বলবো বুঝে পাচ্ছি না। বন্ধু সার্কেল কেও বিদেশে আবার কেও বা চাকুরির সুবাদে অনেক দুরে। ছাত্র থাকা কালে মন খারাপ বা সমস্যায় পড়লে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×