somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুমি কখন আসবে?

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"তুমি কখন আসবে?"-ম্যাসেজটা বিকালে দিয়েছিল পরি। অফিসের মিটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। একটা প্রেজেন্টেশন ছিল আমার। করেছি, তাও ইনকমপ্লিট। কোনও মতে ম্যানেজ করে নিয়েছি। তাই আর ফোন বের করে পরির ম্যাসেজ দেখার আর রিপ্লে দেয়ার সময় ছিল না।

আমার ভীষণ চিন্তা হচ্ছে। আমি তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে রিকশা নিয়ে নিলাম। জিগাতলা থেকে আজিমপুর। বেশিক্ষণ লাগবে না। আমার চিন্তার কারণ অসংখ্য! এক, পরি প্রেগনেন্ট। দুই, ডেলিভারির শেষ সপ্তাহ। ডাক্তার আমাকে বলে দিয়েছিল শেষ সপ্তাহে যেকোনো সময় ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে। তিন, পরি জানে, আমার অফিস আছে তাও বিকেলে কেন এমন ম্যাসেজ দিল? মুহূর্তে আমাকে হাজারো প্রশ্ন ঘিরে ধরল।

মা বাসায় আছে। ভীষণ আদর করেন পরিকে। এই নিয়ে চিন্তা নেই। যদি কোনও সমস্যা হয়, তাহলে ভাইয়াকে নিশ্চিত ভাবে ফোন দিবেন (ভাইয়া ডাক্তার)।
রিকশায় থাকতে আমি ভাইয়াকে ফোন দিয়ে ব্যাপারটা বললাম। ভাইয়া আমার উত্কন্ঠা বুঝতে পারল। তবুও আমাকে কয়েকটা ভিটামিনের ওষুধের নাম বলে দিল। আমিও রিকশা থামিয়ে কিনে নিলাম।
একটা মেয়ে যখন প্রথম মা হয়, তখন একটা ছেলেও তো প্রথমবারের মতো বাবা হয়! উত্কন্ঠায় থাকা স্বাভাবিক। আমি রীতিমতো চিন্তায় ডুবে আছি।
রিকশা থামার সাথে সাথে আমি কোনও মতে ভাড়াটা দিয়ে দৌড় দিলাম! চার তলায় অন্যদিন উঠতে আমার রাজ্যের ক্লান্তি এসে ভর করে, কিন্তু আজ মুহূর্তে উঠে পড়লাম!

আম্মা দরজা খুলে দিল। "আম্মু, পরি ঠিক আছে?"
মা হেসে দিল। "ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে"
আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম। ড্রয়িং রুমে এসে দেখি, পরি আপেল খাচ্ছে। মাও এসে বসল পরির পাশে। শাশুড়ি-বউ মিলে গল্প করছে!
আমি জিজ্ঞাসা করলাম,"তোমার ম্যাসেজ পেয়ে কি যে টেনশন হচ্ছিল জানো?"। পরি তখন ফিক করে হেসে দিয়ে বলল,"তোমাকে ভীষণ মিস করছিলাম। আর জানো, মা তোমার গল্প বলছিল! তোমার নাকি ভীষণ রকমের ডায়রিয়া হয়েছিল জন্মের পর!"। মাও হাসছে পরিও হাসছে। আমি কিছুক্ষণ রাগান্বিত ভঙ্গিতে তাকিয়ে থেকে দুইজনকেই ভেঙিয়ে দিলাম!

মা আমার জন্য আপেল আনতে গেলেন। আমি পরির পাশে বসলাম। পরি আমার হাত ওর পেটের উপর ধরে বলল,"তুমি আমাকে ছুঁতে পারছো না বলে অনেক রাগ হয় তোমার? আমি জানি, রাগ হয়। কিছুদিন পরে তো বাবু চলে আসবে। রাগ করিও না প্লিজ!"
মেয়েদের এই সময়টায় মেয়েরা একটু আদর চায়, ভরসা চায় কারও। স্বামী যদি একটু ভরসা দেয় যে আমি পাশে আছি, তাহলে মেয়েটা আরও দ্বিগুণ বেশি ভালোবেসে ফেলে তার স্বামীকে! আমি পরির হাতটা শক্ত করে ধরলাম। আমার ওই ধরাতে ভরসা ছিল, আদর ছিল, ভালোবাসা ছিল....❤
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:১৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×