অ্যাসাইনমেন্টের জন্য নেটে সাইকোলজি জার্নালগুলো ঘাটাঘাটি করছিলাম। অনেকটা এলোমেলোই। তখন একেবারেই অপ্রত্যাশিত ভাবে সালমা ইয়াকুবের একটা জার্নাল আর্টিকেল হাতের কাছে পেয়েছিলাম। খুবই মজা পেলাম পড়ে। দ্রুত গুগল সার্চ করলাম লেখিকা সম্পর্কে আরও কিছু পাওয়ার জন্য। যা পেলাম, তাতে বহুত আনন্দ পেলাম। সালমা ইয়াকুব ইংল্যান্ডের জর্জ গ্যালাওয়ির দল রেসপেক্ট থেকে নির্বাচিত লোকাল রিপ্রেজেন্টেটিভ, বার্মিংহাম সিটি কাউন্সিলের। ৪৯% ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি এবছরই। হ্যা, আমার প্রথম দেশ বাংলাদেশে রোল মডেল পাই না একদম, কিন্তু আমার জন্মভূমিতে তো পেলাম একজনকে! যিনি ইসলামের মৌলিকতায় বিশ্বাসী এবং হিজাব পড়েন। ওহ, জর্জ গ্যালাওয়ি সম্পর্কে যারা জানেন না, তারা ব্লগার অরূপের ব্লগ ঘাটলেই পেয়ে যাবেন জর্জ গ্যালাওয়ির গরম বক্তৃতা। জর্জ গ্যালাওয়ি প্যালেস্টাইন প্রসংগে ভীষণ সত্যি কথা বলে আসছেন গত বিশ বছর ধরে, ম্যানিপুলেটিভ মিডিয়ার সামনে বুক উঁচু করে দাঁড়িয়ে তিনি এমন সব সত্য কথা বলেছেন, যেগুলো বলার সাহস আমাদের মুসলিমদের নেই, তাই লজ্জায় মাথা বার বার কাটা পড়ে। অবশেষে, সালমা ইয়াকুব, একজন মুসলিম নারী সাহসী হয়ে এগিয়ে এসেছেন এবং এই রাজনীতিতে জড়িয়ে নিয়েছেন নিজেকে। কিশোরী বয়সে সালমা ইয়াকুব একবার খ্রীষ্টিয়ানিতে কনভার্ট করার কথা ভেবেছিলেন, মিডিয়াগুলোতে মুসলিম দেশগুলোতে নারীর অত্যাচারিত হওয়ার কথা যেভাবে বলে সেগুলো দেখে। পড়াশোনা করে আস্তে আস্তে জেনেছেন, তার কোনটার জন্যই ইসলাম দায়ী নয়, বরং ইসলামের অনুপস্থিতিতে অনেক আগের গোত্রীয় ব্যপার স্যপার ঢুকে নারীকে অত্যাচারিত করছে। সব বুঝার পরে, ১৮ হতেই হিজাব ধরেছেন। ৯/১১ এর পরে একবার শপিঙে যাওয়ার পরে একজন লোক তার গায়ে থুথু মেরেছিল, সেই থেকে তিনি নতুন করে ভেবেছেন, তিনি কি করছেন, কতটুকু করতে পারবেন, কতটুকু তার করা উচিত, এই অবস্থার প্রেক্ষাপটে অবস্থার উন্নতির জন্য। তখনই জর্জ গ্যালাওয়ির সাথে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ৩৫ বছর বয়সী তিন সন্তানের মা সালমা ইয়াকুব ইংল্যান্ডে মুসলিম এবং অমুসলিম কমিউনিটির জন্য কিছু করার স্বপ্ন দেখেন (ঠিক যেমনটা একজন মুসলিমের হওয়া উচিত!)। তাঁর বড় অবদান অবশ্যই এই কিছু করতে চাওয়া, নিজের যোগ্যতাকে কাজে লাগানো সমাজের উন্নতির জন্য। আর খুব সুক্ষ্ম অবদান হলো, ইসলামের ধারক হয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসা।
!@@!201873 এবং নেটের বিভিন্ন জায়গায় সালমা ইয়াকুব সম্পর্কে পড়ে মনে হলো, যাক, একজন তো এগিয়ে এসেছেন! ইসলামকে ধারণ করেন তিনি। আমরা চারিদিকে এমন মানুষদের খুব বেশি দেখি, যারা ইসলামের খোলসটাকে ধারণ করে, ইসলামকে ধারণ করে না। একটু অন্যরকম সমস্যা হয় তাতে, আমরা সব পিছিয়ে পড়ার জন্য ইসলামকে দোষ দিতে শিখি। শুধু খোলস ধারকদের প্রতি তাই ক্ষোভ হয়। একই সাথে হতাশবাদী, সমালোচনা স্বর্বস্র মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে এই মানুষগুলোকে আকুল হয়ে খুঁজি। খুঁজে পেলে শান্তি লাগে। আর শক্তি পাই, কচি কচি মনগুলোকে স্বপ্ন দেখাতে পারি নিজের সবটুকু দিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



