somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব, ভয়, আড়ালের গল্প ছিল নিয়মিত।

কিন্তু সময় বদলেছে।
এখন আলোচনার কেন্দ্রে—
তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা MIT।

জামায়াত তাদের রাজনৈতিক যোগাযোগে MIT–কে নতুন শক্তি হিসেবে তুলে ধরছে,
আর বিএনপি এই নতুন বাস্তবতায় ভেতরে ভেতরে অস্বস্তি অনুভব করছে।

প্রশ্ন উঠছে—
এটা কি কেবল গুজব?
নাকি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নতুন কোনো “গোপন খেলোয়াড়” প্রবেশ করে ফেলেছে?

এই ব্লগে আমরা দেখবো—
সত্য-মিথ্যে বাদ দিয়ে এই আলোচনার পেছনের বাস্তব কারণ,
এবং কেন এটা রাজনৈতিক কৌশলের নতুন অধ্যায় তৈরি করেছে।

১. কেন তারেক রহমান উদ্বিগ্ন?—রাজনীতির বাইরে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বাস্তব ব্যাখ্যা
তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন।
যে কোনো রাজনৈতিক নেতার জন্য এটি সুবিধাও, আবার সমস্যাও।

তার উদ্বেগের তিনটি মূল সূত্র আছে—
ক. দলের ভেতরের ভাঙন ও অস্থিরতা
বিএনপি এখন ঐক্যের চেয়ে বিভক্তির জায়গাতেই বেশি পরিচিত।
নেতৃত্ব সংকট, কৌশলগত দুর্বলতা, একাধিক গ্রুপ—
এসব কারণে তারেক রহমানের অবস্থান আরও দুর্বল হচ্ছে।
খ. আন্তর্জাতিক রাজনীতির অনিশ্চয়তা
বিশ্ব রাজনীতিতে ভয়ানক রোলার-কোস্টার চলছে।
একদিন কেউ মিত্র, পরদিনই সমীকরণ পাল্টে যায়।
এই অবস্থায় বিদেশে থাকা নেতারা স্বাভাবিকভাবেই ঝুঁকিতে থাকেন।
গ. ব্যক্তিগত নিরাপত্তা
বিদেশে বসে রাজনীতি করলে “সিকিউরিটি ম্যাটার” অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তুরস্ক বা অন্য কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নাম উঠে আসলে
যে কোনো নির্বাসিত নেতাই উদ্বিগ্ন হবেন—এটাই বাস্তব।

এটা শক্ত নেতার দুর্বলতা নয়—
এটাই আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রকৃতি।

২. জামায়াত–তুরস্ক সংযোগ: নতুন নয়, শুধু আলোচনায় নতুন
অনেকে ভাবেন জামায়াত হঠাৎই তুরস্কের দিকে ঝুঁকেছে।
আসলে এটা বহু পুরনো।

জামায়াত দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ইসলাম ঘরানার তুর্কি মডেলকে অনুসরণ করে আসছে।
এরদোয়ানের AKP পার্টির সঙ্গে অনেক মতাদর্শিক মিলও আছে।

কেন তুরস্ক দক্ষিণ এশিয়ায় আগ্রহী?
** রাজনৈতিক ইসলামপন্থী নেটওয়ার্ক
** মধ্যপ্রাচ্যের সম্প্রসারণ নীতি
** কূটনীতিতে নতুন প্রভাব সৃষ্টি
** আন্তর্জাতিক মুসলিম রাজনীতিতে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা
তাই জামায়াত–তুরস্ক যোগাযোগ তত্ত্বগতভাবে অস্বাভাবিক নয়—
সম্প্রতি কেবল আলোচনায় বেশি এসেছে।

৩. তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থা MIT—“গুজবের সংস্থা” নয়, স্ট্র্যাটেজিক শক্তি
MIT এখন আন্তর্জাতিকভাবে খুব সক্রিয়।
কেবল দেশের ভেতর নয়—
তারা সীমান্তের বাইরেও সক্রিয় অপারেশন চালানোর জন্য পরিচিত।

MIT–এর আলোচিত কর্মকাণ্ড—
** সিরিয়ায় অভিযান
** লিবিয়ায় অপারেশন
** কাতারে নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান
** ইউরোপে গুপ্তচরবিরোধী কার্যক্রম

MIT এখন তুরস্কের আন্তর্জাতিক ক্ষমতা–প্রদর্শনের প্রধান হাতিয়ার।
তাই MIT–এর নাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে এলে
এটা “গুজব” শুনে হাসার বিষয় না—
বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুরস্কের বাড়তি আগ্রহের সংকেত হতে পারে।

৪. “রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা” আসলে কী?—এটাই সবচেয়ে রহস্যময় অংশ
বাংলাদেশের নিরাপত্তা কাঠামো বহুস্তরীয়।
এখানে—
** সকল সংস্থা
** কর্মকর্তারা
** ভেতরের প্রভাবশালী গোষ্ঠী
সবাই একই মতে কাজ করে না।

যখন বলা হয় “রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা”—তা মানে...
এটা খুব কমই সরাসরি সরকারের নির্দেশ।
বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের কোনো অংশ,
কোনো গোষ্ঠী,
বা প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি
নিজেদের ভূরাজনৈতিক লাভের দিকে তাকিয়ে
নির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক শক্তির সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

এটাই রাজনীতির Hidden Dynamics।

৫. কেন এই প্রসঙ্গ এখন এত গরম?—বড় ছবির ব্যাখ্যা
কারণ বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন খেলোয়াড় পাচ্ছে।

আগে বাংলাদেশের ভূরাজনীতি ছিল তিন শক্তির হাতে—
ভারত – চীন – যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু এখন—
তুরস্ক, কাতার, সৌদি আরব
মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রভাব বিস্তার শুরু করেছে।
এটা রাজনৈতিক power map পুরো বদলে দিচ্ছে।
যারা শুধু “র”-এর গল্প শুনে বড় হয়েছে, তারা এখন বিভ্রান্ত

আজ হঠাৎ
MIT
Qatar Intelligence
Saudi GID
এসব নাম আসায় অনেকে যেন নতুন প্রশ্নপত্র দেখে ফেলেছে।

এটাই স্বাভাবিক।

এ ঘটনা শুধুই গোয়েন্দা সংস্থার নাম–খেলা নয়

এটা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন এক শক্তিসমীকরণের ইঙ্গিত—
** নতুন alliance তৈরি হচ্ছে
** পুরনো শত্রু-মিত্রের হিসাব বদলে যাচ্ছে
** আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় বাড়ছে
** দেশীয় রাজনীতি তার চেয়েও দ্রুত পাল্টাচ্ছে

এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলো শুধু নিজেদের শত্রু নিয়ে চিন্তিত নয়—
বরং কে কোন বিদেশি শক্তির সাথে যুক্ত হচ্ছে—
এই প্রশ্নটিই এখন ক্ষমতার কেন্দ্রে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×