somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তবুও তুমি জাগবে না...

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশের সমস্যা শুধু অভ্যন্তরীণ সীমায়ই আবদ্ধ নেই। তাই বাংলাদেশের স্বার্থের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট আছে তাদের প্রত্যেকেই এই ব্যাপারে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আসছে। শুধু উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাই নয় অনেকে কূটনৈতিক সীমালঙ্ঘন করে প্রায়শঃই নানা ধরনের উপদেশ, অনুরোধ পেশ করছে বাংলাদেশে বিবদমান দলগুলোর প্রতি। এক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশ ভারত সবচেয়ে এগিয়ে। এরপরেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান। বাংলাদেশের সঙ্কটে কার কী ভূমিকা থাকবে এ নিয়ে এই দু’টি দেশের মধ্যে চলছে কূটনৈতিক ঠাণ্ডা যুদ্ধ। কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত ভারতের দূতাবাসের এক কর্মীর সাথে ঘটে যাওয়া উদ্ভূত পরিস্থিতিকে অনেকেই মনে করছেন এই ঠাণ্ডা যুদ্ধেরই পার্শ¦-প্রতিক্রিয়া হিসেবে। যাই হোক, আড়ালে-আবডালে বাংলাদেশ নিয়ে গভীর খেলা চলছে তা এখন আর অপ্রকাশ্য বিষয় নয়। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিদেশি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর প্রচারিত খবর এবং অনুষ্ঠানমালা থেকেই এ বিষয়টি আরো বেশি পরিষ্কার হয়ে যায়।

বাংলাদেশ পৃথিবীতে একটি অতি ক্ষুদ্র দেশ। আয়তনের দিক দিয়ে এর অবস্থান ৯২তম। কিন্তু গুরুত্বের দিক দিয়ে তা আনুমানিক প্রায় ২০ এর ঘরে। এর বিশেষ কারণও রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানগতভাবে বাংলাদেশ এমন একটি অবস্থানে রয়েছে যার গুরুত্ব অসামান্য। বিশেষ করে বিশাল ভারতের পায়ের তলায় অর্থাৎ একটি বিশাল সমুদ্র এলাকা দখল করে আছে বাংলাদেশ। ভারতে সমস্যা সঙ্কুল ও স্বাধীনতাকামী প্রায় ৭টি পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাংলাদেশকে হাতে রাখা ভারতের প্রধান কর্তব্যগুলির মধ্যে পড়ে। অপরদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ- তেল, গ্যাস নিয়ে রয়েছে অন্যদের ব্যাপক আগ্রহ। এ সকল মৌলিক কারণ নিয়ে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর তৎপরতা থাকাটা মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রতিটি জাতির মধ্যে জাতি রাষ্ট্রের ধারণা বিদ্যমান থাকায় তারা অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি করে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করাকে নীতিগতভাবেই অন্যায় জ্ঞান করে না। এ কারণেই বাংলাদেশও জাতি রাষ্ট্রের ধারণার বাইরে থাকতে পারে না। কিন্তু বাস্তবতায় দেখতে পাওয়া যায় আমাদের দেশে যারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় যান না কেন তারাই এ ব্যাপারে অতিশয় উদাসীন। এমনকি তারা বাংলাদেশের অবস্থানগত গুরুত্বটুকুও উপলব্ধি করতে পারেন না। অথচ বাংলাদেশ যদি এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারত তাহলে বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবেই অনেক উন্নতি করতে পারতো। উপরন্তু বাংলাদেশের কর্তা-ব্যক্তিরা নিজেদেরকে নিয়েই ব্যস্ত আছেন। বাইরের দেশগুলোর কাছ থেকে যেখানে বৈধভাবেই সুবিধা পেতে পারতো সেখানে তারা উপলব্ধি করতে না পারার কারণে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দেশের সাথে দাসখতের চুক্তি করে, বিদেশিদেরকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানোর সুযোগ করে দেয়। এর একমাত্র উদ্দেশ্য ক্ষমতায় আসার জন্য ঐ বিদেশী শক্তিগুলোকে হাতে রাখা।

পরিতাপের বিষয় হচ্ছে এই করে করে বাংলাদেশের জন্মকাল থেকে আজ পর্যন্ত অর্থাৎ দীর্ঘ ৪২টি বছর কাটিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের সমসাময়িক দেশগুলো যেমন মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন যেখানে উন্নতির শিখরে পৌঁছে গেছে সেখানে বাংলাদেশ এগোচ্ছে কচ্ছপ গতিতে। এর পেছনে মূলত দায়ী বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা। ছোট ছোট ইস্যুকে কেন্দ্র করে দেশে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের কারণে তারা এখন পর্যন্ত একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হতে পারলো না। অথচ এই ঐক্যই এই জাতিকে এনে দিতে পারতো কাক্সিক্ষত সাফল্যের সোনার কাঠি।

বিংশ শতাব্দী পার করে এখন চলছে একবিংশ শতাব্দীর কাল। কিন্তু এখনো কি এদেশ জাগবে না? এখনো কী জাগার সময় হয় নি? মাত্র সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ১৯৭১ সালে একতাবদ্ধ হয়ে এক অসম যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে এ দেশকে মুক্ত করে এনেছিল। এরপরে অন্ধকারে কেটে গেছে ৪২টি বছর। এখন এ দেশের মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬ কোটিতে যাদের ৩২ কোটি হাত। তারা যদি একতাবদ্ধ হয় তাহলে কি তাদের সামনে বাধা হয়ে কোন শক্তি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে? প্রাকৃতিক নিয়ম কী বলে? প্রাকৃতিক নিয়মই তো বলে ঐক্যের শক্তিই প্রবল। সুতরাং জাতিকে চলমান সঙ্কট এবং পেছনে হাঁটা থেকে ঘুরিয়ে সামনে হাঁটার জন্য একমাত্র পথ্য হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। এই সত্যকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কিন্তু আমরা এই পরম সত্যকে গ্রহণ করছি না কেন? আমাদের বাধা কোথায়? বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম কি এই পরম সত্যকে উপলব্ধি করবে না? তারাও পুরনো ঐক্যহীনতাকে পুঁজি করে পারস্পরিক কলহে দিনাতিপাত করেই যাবে?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×