রাজনৈতিক দলগুলোর একগুয়েমির কারণে চরম সংকটে পতিত হয়েছে দেশ। বিবদমান দুটি পক্ষই এখন মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে গেছে। ক্ষমতা ধরে রাখা এবং ক্ষমতা দখলের অনড় অবস্থানে রয়েছে তারা। কেউ কাউকে সামান্যতম ছাড় দিতে রাজি নয়। বরং যে কোন উপায়ে তারা একে অপরকে নির্মূল করতে বদ্ধ পরিকর। দ্বন্দ্ব সৃষ্টি এবং সেই দ্বন্দ্বকে বাড়াতে বাড়াতে তারা এখণ এমন একটা অবস্থানে পৌঁছে গেছে তারা কেউ এখন অন্যকে ছাড় দেওয়ার অবস্থানে নেই। তাদের মনোভাব ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনী’। বৈদেশিক শক্তিগুলোও অতীতে চেষ্টা করে বিফল হয়ে যাওয়ায় তারাও এদেশ নিয়ে আর ততটা আগ্রহ প্রকাশ করছেনা। তাছাড়া এটা এদেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে তাদের হস্তক্ষেপের সুযোগও কম। তাই নিকট ভবিষ্যতে রাজনীতিকদের মধ্যে কোন ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনাও একেবারেই ক্ষীণ। তাদের একের প্রতি অন্যের অবিশ্বাস, সন্দেহ সৃষ্টি হয়ে গেছে। এই অবস্থায় দেশ যত দিন পার করবে ততই সংকটের মাত্রা বাড়তে থাকবে। চলমান অবস্থা এভাবে আর কিছু দিন চলতে দিলে তাদের মধ্যে যদি গৃহযুদ্ধও শুরু হয়ে যায় তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। এর জন্য মারাত্মক ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হবে এদেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকেই।
আর একবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দেশ ধ্বংসের মুখে পতিত হবে।
এর মানে হচ্ছে ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা লাভের যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে নিরস্ত্র হাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে লাখে লাখে প্রাণ দিয়েছিল, জীবনের বাজি রেখে দীর্ঘ নয় মাস অসম লড়াই করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল তার পরাজয়। পরাজয় হবে অপার সম্ভাবনাময় সুজলা-সুফলা এই দেশটির। এমতাবস্থায় এদেশের সকল দেশপ্রেমী ও সাধারণ মানুষ, চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ডাক্তার, আইনজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে স্বাধীনতা রক্ষার আরেকটি বড় সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এদেশকে নিরাপদ করে তোলা। আগেই বলা হয়েছে বর্তমান রাজনীতিবিদগণ আমাদেরকে একটি দ্বন্দ্ব-সংঘাতহীন শান্তিময় একটি দেশ উপহার দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আরো বেশিদিন তাদের উপর ভরসা করলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য। তাই এখন দেশপ্রেমিক জনতাকে আর বসে থাকলে চলবে না।