somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাঠির জয় হোক, লাঠিয়ালদের জয় হোক....

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খাঁটি মুসলমানদের খাঁটি লাঠির 'ফজিলিয়ত'!
লাঠির জয় হোক, লাঠিয়ালদের জয় হোক....
-আবছার তৈয়বী
বাংলাদেশের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় ওহাবী-কওমীদেরকে খাঁটি মুসলমান বলে 'ফতোয়া' দিয়েছেন। ওহাবী-কওমীদের খাসলত হলো- তারা কথা বলার আগে লাঠি বের করেন। তাদের লাঠি আবার 'যেন-তেন লাঠি' নয়। এই লাঠির গুণাগুণ অনেক। তাদের লাঠি দুই কিসিমের। ১. গতরের লাঠি এবং ২. হাতের লাঠি। তাদের গতরের সাথে সংযুক্ত লাঠি আমাদের দেশের অবুঝ বাচ্চাদের পশ্চাৎদেশে চালান করে দিয়ে 'ফয়জে গলিজ' দেন। এই গলিজ ফয়েজ পেয়ে ওহাবী-কওমী মাদ্রাসায় পড়ুয়াদের পশ্চাৎদেশের 'ছিদ্রখানি' মোটামুটি প্রমাণ সাইজের সুরঙ্গ হয়ে গেছে। এতে তাদের কয়েকটি রোগ চিরতরে উধাও হয়ে গেছে। তৎমধ্যে প্রধান রোগটি হলো 'কোষ্ঠ-কাঠিন্য রোগ'। হেকিমি শাস্ত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগকে 'উম্মুদ দা' বা 'মাদার ডিজিজ' বলা হয়। ওহাবী-কওমীরা তাদের গতরের লাঠি দিয়ে দরিদ্র-পীড়িত বাংলাদেশের বড়ই উপকার সাধন করছেন। এই জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে একটি করে 'শাহাদাতুত ত্বীব' বা 'সিকিৎসা সনদ' দেয়ার দাবি জানাই। তবে এর সাথে এই দাবিও জানাই যে, সনদ দেয়ার আগে তথাকথিত কওমী-ওহাবী মাদ্রাসার প্রতিটি ছাত্র-শিক্ষককের ব্লাড নিয়ে 'এইচআইভি টেস্ট' যেন অবশ্যই করেন। আর তখনই বুঝা যাবে- এই দরিদ্রটা দেশটার জনস্বাস্থ্যের কতোটা উন্নতি তারা করছেন?

যদি তারা এইচআইভি পরীক্ষায় উৎরে যান, তো তারা মাস্টার্স সাটিফিকের সাথে একটি করে হেকিমি সনদও পেতে পারেন। আর যদি রক্ত পরীক্ষায় কোন গোঁজামিল ধরা পড়ে, তাহলে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাঁচাতে তাদেরকে খাঁচায় বন্দি করতে হবে এবং বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। গরীব অবুঝ শিশুগণের পশ্চাৎদেশে 'লাঠি চালান' দিয়ে এই দেশ থেকে কোষ্ঠ-কাঠিন্য রোগ দূর করার বিশেষ অবদানের জন্য তাদেরকে জাতীয় সংবর্ধনার ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের এই অবদানের জন্য তারা জাতীয়ভাবে পুরস্কার পেতেই পারেন। এতে বেজার হওয়ার কিছুই নেই; বরং তাদেরকে অবমূল্যায়ণ করা হলেই জাতির ওপর গজব নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বর্তমান সরকার 'সোচ-সমঝ'কে তাদেরকে মূল্যায়ণ করার উদোগ গ্রহণ করেছেন। আসুন, সবাই একবার সমস্বরে বলি- মারহাবা!

কওমী-ওহাবী খাঁটি মুসলমানদের গতরের লাঠির আরেকটি ফজিলত এই যে, মেয়ে লোক দেখলেই ওহাবী-কওমীদের এই লাঠি থেকে লালা নির্গত হয়। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃষ্টানসহ সকল জাতির এই জাতীয় লাঠির লালা নাপাক এবং অপবিত্র হইলেও ওহাবী-কওমী জাতির লাঠি থেকে নির্গত লালা কারো কারো মতে 'অতীব পবিত্র বস্তু'। ওহাবীদের হাকিমুল উম্মত মৌলোভী আশ্রাফালী ছাহেবসহ অনেকেই লাঠির লালার এই 'ফজিলিয়ত' বর্ণনা করেছেন। তাই তারা এই লালা মিশ্রিত কাপড়ে এবং দেহে ইবাদাত করতে পারেন। এমনকি ইবাদাতের মগজ বলে খ্যাত 'দোয়া-মুনাজাত'ও করতে পারেন। মধ্যখানে দোয়া-মুনাজাত ভুলে গেলে আড়চোখে তেঁতুলের দিকে তাকালে লাঠি দিয়া লালা নির্গত হয় এবং 'আচম্বিত' দোয়া মনে পড়ে যায়। এই দোয়ার 'ফজিলিয়ত' অত্যধিক। দোয়া করার সাথে সাথেই কবুল হয়ে যায়। তবে আল্লাহর দরবারে নয়, ক্ষমতাসীনদের দরবারে। 'বঙ্গদেশে ইহার যথেষ্ট প্রমাণ রহিয়াছে'।

কিন্তু সঙ্গতঃ কারণেই ওহাবী-কওমীরা তাদের গতরের এই খাঁটি লাঠি যখন তখন জাতিকে দেখাতে পারেন না। তাই জাতিকে দেখানোর জন্য তারা বাঁশের লাঠি, গজারি কাঠের লাঠি, স'মিলের চৌফালা গাছের লাঠি জাতিকে প্রদর্শন করে থাকেন। এই লাঠি দেখে জাতির কলিজার পানি শুকিয়ে গেলেও কিছু কিছু লোক এই জাতীয় লাঠিধারীগণকে বড়ই সম্মান করেন। লাঠিওয়ালাদের জন্য পানীয়জলের ব্যবস্থা করেন। আবার কেউ কেউ ওহাবী-কওমীদের লাঠি খরিদ করার জন্য আন্দরে আন্দরে 'হেড লাঠিয়াল'কে বস্তায় বস্তায় টাকাও সরবরাহ করে থাকেন। এই জাতীয় খাঁটি লাঠিধারী খাঁটি মুসলমান এবং খাঁটি লাঠিয়ালদের বাংলাদেশের সরকারও বড়ই আদর-আপ্যায়ন করেন। কারণ তারা জাতির গৌরব এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের মাদ্রাসাই জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বাকিসব 'বকওয়াজ'। কিন্তু সেখানে কোনদিন জাতীয় পতাকা উড়ে না। এটাও লাঠির বরকতের ফল। এই লাঠির আঘাতে বাংলাদেশের অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে। দেশপ্রেমিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জীবনবাজি রেখে তাদের লাঠির আঘাত হতে জাতিকে বারবার রক্ষা করেছেন। 'পোড়া কপাইল্যা' জাতির পক্ষ থেকে আমাদের জাতির এই গর্বের সন্তানদের আমি অধম শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

এই খাঁটি মুসলমানদের খাঁটি লাঠির আঘাত হতে জাতিকে রক্ষা করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য আহত-নিহত হয়েছেন। হাটহাজারীতে তাঁদের সরকারি বন্দুক ছিনিয়ে নিয়েছেন খাঁটি লাঠিধারী খাঁটি মুসলমানরা। হাটহাজারী থানার দরোজা-জানালা ভেঙে পার্শ্ববর্তী পুকুরে নিক্ষেপ করা হলেও খাঁটি মুসলমানদের খাঁটি লাঠির বরকতের বদৌলতে তাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। হলেও খাঁটি লাঠির ফয়েজে সেই মামলা পুলিশের খাতা থেকে গায়েব হয়ে গেছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর 'জাতির এই গর্বিত সন্তান'রা কি জানতেন- তাঁদের হাতের লাঠি নয়; বরং দুষ্ট রাজনীতির প্রভাবে কওমী-ওহাবীদের হাতের লাঠিই 'জাতীয় লাঠি'র মর্যাদা পাবে? বর্তমান বাংলাদেশে খাঁটি লাঠিধারী খাঁটি মুসলমানদের জয়-জয়কার অবস্থা। যাদের হাতে লাঠি নাই- তারা সবাই 'ভেজাইল্যা মুসলমান'। মাননীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী জাতিকে ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন- 'যদি খাঁটি মুসলমান হতে চাও, তো হাতে লাঠি নাও'। কারণ, 'পুরো বাংলাদেশটাই লাঠিময়'। অতীতে সরকারের আদেশে পুলিশের ভেজাল লাঠির টোকায় দেশের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়গণের 'হেড মোবারক' হতে 'লাল ঝোল' বেরুতে জাতি দেখেছেন। আমরা সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে এই দোয়া করছি যে, 'ইয়া মাবুদ! তুমি আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের নসিবে এই জাতীয় খাঁটি লাঠির ফয়েজ নসিব কর'। মাবুদ গো! তাঁকে অন্ততঃ পুলিশের ভেজাল লাঠির আঘাত দিও না। দিলে এই 'লাঠিহীন ভেজাইল্যা মুসলমান'দের অন্তরে বড়ই কষ্ট অনুভূত হবে। ইয়া আল্লাহ! এই জগতে তোমার অসাধ্য কিছুই নাই। "তুমি রাতকে দিন কর আর দিনকে রাত কর। মৃত থেকে জীবন বের কর, আর জীবিতকে মৃতে পরিণত কর। তুমি যাকে ইচ্ছা অফুরন্ত-বেহিসাব জীবিকা দান কর। ( সূরা আলে ইমরান: ২৭) আল্লাহ! নিশ্চয়ই তুমি সর্বশক্তিমান।

(বি.দ্র: জিহাদের নিয়তে খাঁটি লাঠিধারী তথাকথিত খাঁটি মুসলমান ওহাবী-কওমীদের কলিজায় জাহান্নামের আগুন ধরাতে লেখাটি বেশি বেশি শেয়ার করুন। কপি করে নিজেদের টাইমলাইন থেকে একযোগে পোস্ট করুন। বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে দিন। সকলকেই ধন্যবাদ।)

তারিখ: ২১ এপ্রিল, ২০১৭ খৃ.
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১২:৫৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×