somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতার প্রতি

২০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জড়পদার্থটি একে একে করতলগত করে চলেছে সমস্ত বস্তু-বিষয়; মনুষ্যত্ব, বিবেক ও সবরকমের অনুভুতিও। মন্দিরে, মসজিদে, হাটে বাজারে, সর্বত্র সর্বপ্রকারের দান খয়রাত, এমনকি ভিক্ষাবৃত্তির সময়ও পরকালের জন্য দোয়াপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এই জড় পদার্থটি ব্যবহৃত হচ্ছে। মানে জাগতিক থেকে পারমার্থিক জগৎও ইতোমধ্যে জড়ের নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। এই একটি জড় পদার্থের দাসত্ব শুরুর দিনটি থেকে আমাদের পরাধীন যুগের সূচনা। আমরা নিজেদের বিভিন্ন রাজার, সম্রাটের, বাদশাহর, জমিদারের, সরকারের দাস গণ্য করে আসছি দীর্ঘকাল। অথচ ওরা নশ্বর, কেননা শাসকের জীবন যতদিন দাসত্ব ততদিন। অবশ্য আমরা পরক্ষণেই নতুনের বশ্যতা স্বীকার করে নেবো। আমরা স্বাধীন সরকারের জন্য স্বাধীন বটে। তবে সেটা গোষ্ঠীগতভাবে, জাতিগতভাবে এবং সমষ্টিগতভাবে সীমারৈখিক ভূখন্ডের বিচারে। সামগ্রিকতার বিচারে পৃথিবীর সকল স্বাধীন ভূখন্ডের জণগণকে একসারিতে এনে একই আদম হাওয়ার বংশজাত হিসেবে বিবেচনা করলে সমস্ত 'আশরাফুল মাখলুকাত' আদম সন্তানেরা সেই জড়বস্তুটির নিকট পরাধীনতা স্বীকার করে বসে আছে। সকল প্রবৃত্তি নিবৃত্তিকারক, যাবতীয় অনুভুতির নিয়ন্ত্রক, ইহকাল ও পরকালের লাগাম যে জড়ের হাতে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র পর এই জড় পদার্থটি রূপকার্থে ‘মানি ইজ দ্য সেকেন্ড গড' নামে পরিচিত।
প্রিয় স্বাধীনতা, ইহজগতের মহাপরাক্রমশালী এবং সর্বকার্য্সাধনপটিয়সী জাগতিক জড় বস্তুর নিকট বশ্যতা স্বীকার করেছো- মুদ্রাযুগের প্রারম্ভেই। পলাতক তোমাকেই খুঁজছে জনতার স্বর।

বিনিময় প্রথার যুগে মানুষ পণ্যের বদলে পণ্যের বিনিময় করেছে। তাই উৎপাদন প্রক্রিয়া গতিশীল ছিলো। আর মানুষ নির্ভর করেছে মানুষের উপর। আর মুদ্রাব্যবস্থার প্রচলনের পর মানুষ নির্ভর করছে মুদ্রায়, টাকায়। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় স্থবিরতা এসেছে। মানুষ যতটা টাকার উপর আস্থা রাখতে পারে ততটা আস্থা অন্য মানুষ তো দূরের কথা নিজের উপরও রাখতে পারে না। টাকায় কিনা হয় বলে হ্যাংকার আফটার ফর মানি উইল রেজাল্টস ইন টাকায় খালি টাকা হয়। না খাবার, না বাড়ি, না পথ্য, মানে বেসিক নিডসের কিছুই হবে না এক সময়। পাশ্চাত্যের রোবট নির্ভর সমাজব্যবস্থায় রোবটিক ফলাফলে কিছু হবেই। কিন্তু এই জনপদের বঙ্গ, হরিকেল, রাঢ়, সমতটের মেছোভেতো বাঙ্গালির কপালই পুড়বে। কেননা, শিক্ষার পরবর্তী প্রতিফলিত রশ্মিটি প্রশাসন, চাকুরী, ক্ষমতা, টাকা, আরো টাকা, এবং উৎপাদন বিমুখ জনসংখ্যাকে নির্দেশ করছে। অথচ কথা ছিলো, একেককজন কৃষিবিদ, একেকজন প্রযুক্তিবিদ , চিকিৎসাবিদ, অর্থনীতিবিদ, কুটনীতিবিদ স্বীয় ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। তা হচ্ছে কই? কৃষিকাজ বাদ দিয়ে সবাই কারখানার দিকে ঝুকছে? উত্তর- না। পরাক্রমশালী ভাইরাল হবার আনন্দ বিহ্বল উৎসব মুখর ঘরে বসে ধান্দাবাজিই রন্ধ্রে এখন। কি লাভ এই লোক ঠকানোর নামে নিজের মানুষ ঠকিয়ে। যে পণ্য বহির্বিশ্ব নিচ্ছে না, আমরা গোগ্রাসে তাই গিলছি। জেনে শুনে বুঝেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল গ্রাজুয়েটবৃন্দ শুধু এবং শুধুমাত্র একটি সনদের জন্য টেনে হিচড়ে চার বছর পার করে দিচ্ছে। তারপর কি পড়েছি? ভুলে গেলাম। চাকরীর জন্য নতুন করে পড়ছি। কারণ যা পড়ছি তা প্রয়োগের ধারে কাছেও না থাকায় সেক্টরভিত্তিক প্রয়োজনীয়তা বা চাহিদাটুকু পর্যন্ত অনুধাবন করতে পারি নি। আর বলে বেড়াচ্ছি, 'রাষ্ট্র কেন অপ্রতুল ব্যবস্থার সম্মুখীন করলো'?, কেন সেক্টরভিত্তিক সুযোগ রাষ্ট্র তৈরী করেনি?' , কেন নাগরিক হিসেবে আমরা সেইসব অধিকার থেকে বঞ্চিত হবো? ইত্যাদি প্রশ্নবানে রাষ্ট্র নুয়ে পড়েছে। কেননা এইসব প্রশ্ন সৃষ্টিকারী লোকের সংখ্যাটাই বেশি, এবং সমর্থনকারী অবুঝের সংখ্যাটা আরো বেশি।সমাধানের চিন্তা করার সময় নগণ্যের।

আবিষ্কারের নেশায় মত্ত বিদেশী বৈজ্ঞানিকরা, ওই এডিসন, ফ্লেমিং, এডওয়ার্ড জেনাররা কতটুকু সরকারী সহায়তার উপর নির্ভর করেছেন, পেয়েছেন তা অজানা নয় অনেকেরই। দুঃখের ভিতরে অতিদুঃখের বিষয় হলো বিখ্যাতজনদের অণুপ্রেরণা হিসেবে নেবার আগে ঐই কৃতকর্মগুলো গল্প হিসেবে উপস্থাপন করা হয় মাত্র। বাস্তব ফলাফল যাচাইয়ের সময় কই এবং সময়টাইবা দেবে কে?

এ পর্যন্ত সভ্যতার এত এত আবিষ্কার, কোন সরকারি অনুদানের আশায় থেমে থেকেছে জানা নাই। তাই বেতার অথবা ক্রেস্কোগ্রাফের জগদীশ চন্দ্র বসু, হিগস বোসন কণার সত্যেন বসু, আরহেনিয়াসের সমীকরণের সীমাবদ্ধতা নির্ণয়কারী অধ্যাপক জ্ঞানদাপ্রসাদ, কুদরত ই খুদা, মাকসুদুল ইসলাম প্রমুখের মতো এদেশের ঘরে ঘরে কর্মপ্রাণ, আবিষ্কারের উদ্যমভরা যুবকেরা জন্মায় না। বরং জন্মায় ইউটিউব আসক্ত এবং ইউটিউব অণুপ্রাণিত জোড়াতালি মারা স্বপ্ন দেখা প্রতিভা। ওরা এবং তারা অতীতে এবং বর্তমানে অনেক অনেক বিজ্ঞান প্রজেক্টে মেডেল বাগিয়েছে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে হয় বহির্বিশ্বকে সাহায্য করছে , নাহয় নিজের সামাজিক গন্ডীতে প্রয়োজনীয় ক্ষমতায় আরোহন চেষ্টায় নিয়োজিত থেকেছে। রাষ্ট্রের কথা ভেবে কেউ কিছু করে না, রাষ্ট্র কিছু করা লোকদেরই খুঁজে নেয়। আহমেদ জাওয়াদ চৌধুরী গণিতে স্বর্ণপদক জিতলে বাংলাদেশের নাম জানে সারা বিশ্ব। নিজের প্রয়োজনে নিজের কৌতুহলে টিফিনের টাকা জমিয়ে গবেষণার জন্য ব্যক্তিগত ল্যাবরেটরী গড়ার ইতিহাস আমাদের খুবই নগণ্য, যদিও ওই টাকায় আবেগ কেনার গানে আমাদের পাড়া মহল্লা মেতে থাকার ইতিহাস অনেক। ডাক্তার হচ্ছেন, ফার্মাসিস্ট হচ্ছেন; ঔষধ আবিষ্কার বাঁ পদ্ধতিগত উন্নয়নের মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানে দূরারোগ্য ব্যধির জন্য কাজ কয়জন করে? ইঞ্জিনিয়াররা বড় বড় ও ভালো বেতনের চাকুরীর স্বপ্ন যতটুকু দেখেন, আমদানীনির্ভর বিদেশী পণ্যে দেশের বাজার দখলকারি কোম্পানিতে ঢোকার স্বপ্ন দেখেন, (তাও সরকারী চাকুরী না হলে), ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেক্টরগুলোর আরো উন্নতি এবং নতুন যন্ত্রপাতির উদ্ভাবনের নেশা কজনের আছে? তুলনামূলক কৃষিবিদদের অনেকেই সেক্টরগতভাবে গবেষণায় এগিয়ে রয়েছে। যদিও কৃষিবিদদের জন্যও অতি নিকট ভবিষ্যতে একই ধারাবাহিকতা অপেক্ষা করছে।দূর অতীতে ঘড়ি আবিষ্কারের পূর্বে ভাস্করাচার্যের ঘড়ি ব্যবহারের গল্প সবার জানা, শুণ্যের ব্যবহার আর্যভট্টরাই করেছেন। আর এই অত্যাধুনিক যুগে প্রযুক্তিনির্ভর অলসতায় সকলের প্রিয় সাবজেক্ট ঘরে বসে সহজে আয় বা আউট সোর্সিং। কই একজন বিল গেটস তো আমাদের ইঞ্জিনিয়ারদের ভেতরে জন্মায় না। এর কারণ যে ইতিহাসের গর্বে আমাদের কর্মোদ্যম হবার কথা, সে ইতিহাস আমাদের অতি বিপ্লবী এবং অবুঝে পরিণত করছে। আমাদের বঙ্গজ বিপ্লবীরা মার্ক্সবাদ, লেনিনবাদ, ছাড়া এদেশের কোন মতবাদ অনুসরণ করতে পারেননি তো। অথবা নিজেদেরও কোন স্বীয় মতবাদে আস্থাও নেই। স্বাধীনতা তবে কি বিপ্লবের স্লোগানের রক্তের উপহাসমাত্র?

তাই শিক্ষার প্রকৃত ব্যবহার এবং প্রয়োগে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া বাঙালি মেধাগুলো বৈদেশে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যায়। অধিকাংশের পেটের ব্যবস্থা না থাকলে দেশে ফেরার টান নেই। তারপর তুমুল অর্থকড়ি সমেত একদিন ছুটির ঘন্টা শুনে নিয়তির দিকে এগিয়ে যাবার আগে, এই মাটির জল হাওয়ার গুণ পরিপূর্ণ কাজে লাগিয়ে চলুন সবাই মিলে একদিন দেশের জন্য ভাবি। কেননা, অনলাইন-ভাইরাল-ধান্দাবাজির পাহাড় উৎপাদনবিমুখ, আমদানীনির্ভর অলস ও কর্মবিমুখ জনগণের জন্ম দিচ্ছে। আমদানী-রপ্তানী নির্ভর বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় যেকোন বৈশ্বিক ইস্যুতে বিশ্ব বানিজ্যে যেকোন সময় অবরোধ এবং আমদানীর অভাবে উৎপাদনহীন রাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষ স্বাভাবিক। তাই এই বৈদেশিক ন্যুম্যাজমেটিক (মুদ্রাতাত্ত্বিক) যুগে, শিক্ষার আপতিত রশ্মিটি যেনো কুটির শিল্পকে বৃহৎ শিল্পের ভাবনার বিভেদতলে রেখে প্রতিসরণের সময় উন্নত থেকে উন্নততর সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশের অভিমুখে বেঁকে যায় সেই আশাবাদ ব্যক্ত করি। অর্থনৈতিক মুক্তির প্রশস্ততম পথ তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের গ্রাজুয়েশনের সময়ই উদ্যোক্তা হবার প্রশিক্ষণ প্রদান এবং প্রাথমিক বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের সুলভ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। মিস্টার ইকোনমিক ফ্রিডম আমাদের দেখা হবে একদিন?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১২:০৭
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×