somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম আর ভালবাসা এক নয়

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৫:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রেম আর ভালবাসা। দুটো শব্দ। দুটো অর্থ। দুনিয়ার বেশির ভাগ লোকই জানেনা প্রেম আর ভালবাসা কি জিনিস।
কেউ আপনাকে খুব যত্ন নেয়। সকালবেলা গুড মর্নিং, রাতে গুড নাইট। সারাদিন ফোনে কথা হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। হয়তো তার সাথে কথা বলতে বলতে আপনার ইচ্ছে হবে তার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে কিংবা প্রখর রোদে হাত ধরে ঘুরে বেড়াতে।অথবা তাকে মনে আপনার সবচেয়ে ভাল বন্ধু। মনে হবে সে কখনও আপনাকে ছেড়ে যাবে না। আপনার সামান্য শরীর খারাপেসে সকাল-বিকেল আপনার জন্যে শুভকামনা জানায়। সত্যিকারের বেস্ট ফ্রেন্ড যাকে বলে সে হবে তাই। আপনার কাছে বাকী দুনিয়া মনে হবে তুচ্ছ। আক্ষেপ করবেন, কেন সে আপনার জীবনে আগে আসেনি। আসলে আপনি তার প্রেমে পড়েছেন।
আবার কেউ আপনাকে সকাল-বিকেল-রাত ফোনও করেনা, মেসেজ ও না। তার সাথে কথা বলতে আপনার চরম বিরক্তি। কারন সেতো ভাল করে গুছিয়ে কথাই বলতে পারে না। বৃষ্টিতে ভেজা কিংবা রোদে পোড়া। ভাবতেই পারেন না।ধূর, ঠান্ডা লাগবে বলে আপনার স্বপ্নটাকে গুড়িয়ে দিয়ে আপনাকে সোজা ছাউনীর নীচে পাঠিয়ে দেয়। আর রোদে পোড়া, ছাতাটা না নিয়ে রোদে বেরোনোর জন্যে কর্কশ স্বরে শাসন করে। এরকম মানুষ কি কারও বন্ধু হতে পারে ! আপনার অসুখ হলে হয়তো সে একটু ব্যস্ত হয়। ছলছল চোখ করে ডাক্তারের কাছে ছোটে কিংবা ওষুধগুলো খেয়ে নেওয়ার জন্যে অনুরোধ হয়তো করে কিন্তু সেটা আবার কোনও কথা। সেতো, নার্সও করে। ওরকম কিছুকে যদি ভালবাসা বলে তবে দরকার নেই। তার মুখ দেখলেই জীবনটা উচ্ছেপাতা হয়ে যায়।
আপনি বোকা, হ্যাঁ বলছি তো আপনি বোকা। সকালবেলা গুড মর্নিং আর গুড নাইট জীবনে এমন কোনও প্রয়োজনীয় জিনিস না। আর যে আপনাকে ভালবাসবে সে আপনাকে বৃষ্টিতে ভিজে শরীর খারাপ হতে দেবে না কিংবা রোদে পুড়ে অসুস্থ্য হতে। ঠিকই ভেবেছেন। প্রথমজন আপনার সাথে প্রেম করে দ্বিতীয়জন ভালবাসে। যে আপনার সাথে প্রেম করে সে আপনাকে গাদাগাদা মিথ্যে স্বপ্ন দেখাবে। আর যে ভালবাসে, সে আপনার স্বপ্নগুলোকে মনের মাঝে গোপনে ছোট্ট একটা নোটবুকে লিখে রাখবে। চেষ্টা করবে আপনার স্বপ্নগুলোকে পূরণ করার।
আপনি যখন আপনার সদ্য বন্ধুবেশী প্রেমিকের সাথে মুঠোফোনে হঠাৎ উঠে আসা ঝোড় মেখে আকাশ দেখতে দেখতে নক্ষত্রমন্ডল পাড়ি দিচ্ছেন। অক্লান্ত সে হয়তো আপনার ফোনে অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে একটু লাইন পাওয়ার আশায় যে এটুকু সাবধানবানী, আপনি মেঘের ডাকে ভয় পান।
কিংবা আপনি কোথাও যাচ্ছেন, আপনি ব্যস্ত আপনার প্রেমিক কিংবা বন্ধুটা আপনাকে শুভকামনা জানাল কি না। আর সেই বোকা ভালবাসা হয়তো প্রতীক্ষা করছে আপনি নিরাপদে পৌঁছলেন কি’না কিংবা কখন আসবেন। আপনাকে করা প্রত্যেকটা কেটে দেওয়া ফোন যে তার বুকের মধ্যে সূক্ষ্ম ছুরির ফলার আঁচড় কেটে যায়, কখনও ভাবেন না। কখনও ভাবেন না, তার কোনও বন্ধু নেই। সেও মানুষ। তারও ইচ্ছে হয় কথা বলার। সে আপনাকে ভালবাসে বলে, আপনার সামান্য জ্বর হলেও তার বুক শুকিয়ে যায় অথচ তার গায়ে হাত দিয়ে দেখেছেন, সেখানে তো প্রায়ই সারারাত জ্বরে ভোগে সে। আপনার চোখের নীচে একদিন কালি পড়লে সে ব্যকুল হয়ে জানতে চায় আপনার শরীর ভাল তো? অথচ আপনি কিন্তু চোখের কালিতে ক্রীম মাখাতে মাখাতে তাকিয়েও দেখেন না তার চোখের নীচে কত রাতজাগার কালি লেপটে আছে।
আসলে আপনার চারপাশে ঘোরা, আপনার যত্ন নেওয়া, আপনার জন্যে হাতকাটা, আপনার একটা ছবি তুলে দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করা মানুষগুলোর ভীড়ে আপনি কখনও তাকিয়েও দেখেন না সেই মলিন মুখের মানুষটার দিকে সে কিনা আপনার সুখ কিনতে নিজের আত্মাটাকেও হাড়িকাঠে বলি দিয়েছে।
আপনার বন্ধুদের যত্ন নেওয়ার ভীড়ে একদিন সে হয়তো হারিয়ে যাবে নাম না জানা হারিয়ে যাওয়া মানুষের ভীড়ে। তবে দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, নইলে কখনও ভালবাসা পাবেন না। নইলে তার সাথে যা যা করেন করে দেখুন নিজের বেষ্ট ফ্রেন্ড বা প্রেমিকের সাথে। আমি নিশ্চিত মনে হয় ঝাপটানো বালির মতন হারিয়ে যাবে। ভালবাসার যত্ন নিন, নইলে আজকের পাওয়াটা একদিন অপ্রাপ্তির কালবৈশাখি হয়ে আপনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৫:৫২
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×