somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অভ্রনীল হৃদয়
সকল অপূর্ণতায় পূর্ণ আমি। সব অসাধারন মানুষের ভীরে আমি অতি সাধারন এক মানুষ। পেশায় ছাত্র, নেশায় মুভিখোর আর বইপড়ুয়া। নিজেকে খুঁজে পাবার জন্য হাঁটতে থাকি। স্বপ্নের সাথে হাঁটি, স্বপ্নের জন্য হাঁটি। আর মাঝে মাঝে হাবিজাবি লেখি আমার ভার্চুয়াল খাতায়।

‘আমি এবং মেয়েটি-২’

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়ে!
তুই কি জানিস? তোর ঐ নেশাতুর চোখ দুটির দিকে তাকিয়ে আমি নিমিষেই অজস্র কাব্য রচনা করে ফেলতে পারতাম। কিন্তু তোর কবিতা পছন্দ না। তোর পছন্দ ডিএসএলআর, বাইক সমৃদ্ধ বয়ফ্রেন্ডের তথাকথিত সস্তা ভালোবাসা।
একদিন তোর সেই স্মার্ট ছেলেটির কাছে তোর মূল্য শূন্যের কোঠায় চলে যাবে। তোকে পুরনো ঠুনকো বস্তুর মতো ছুঁড়ে ফেলে দিবে আর সবার মতো। তুই কাঁদবি সেদিন। খুব করে কাঁদবি। চিন্তা করিস না। সেদিন তোর চোখের জল মুছে দিতে আমি আর আসবনা।
আমি সেদিন লুকিয়ে লুকিয়ে তোর ঐ নেশাতুর চোখ দুটি দেখবো। আর কবিতা লিখে যাবো।
-
মেয়ে!
সময় যাবে। তুই এবার আরো অনেক ম্যাচিউর্ড হবি। এবার তুই বেছে নিবি সমাজের তথাকথিত বড়লোক ঘরের কোনো এক সুদর্শন ছেলেকে। তোর গলা ভর্তি থাকবে ভারি ভারি গয়না। থাকবে হাত ভর্তি চুড়ি। আরো থাকবে কানে সোনা কিংবা ডায়মন্ড এর দুল। তুই খুশিতে হাসবি সেদিন। আনন্দ অশ্রু গড়িয়ে পড়বে তোর ঐ চোখ দুটি হতে।
আমি সেদিনও লুকিয়ে লুকিয়ে তোর ঐ নেশাতুর চোখ দুটি দেখবো। আর কবিতা লিখে যাবো।
-
মেয়ে!
আরো সময় বয়ে যাবে। তোর সেই ব্যাস্ত স্বামী প্রায়শই তার কাজে ব্যাস্ত থাকবে। তোকে সময় দেওয়ার মতো সময় তার কাছে হয়ে উঠবেনা তখন। তোর ভালবাসার চাহনিতে ভ্রু কুচকে বিরক্তি প্রকাশ করবে সেদিন তোর স্বামী। তোকে এনে দিবে কাড়ি কাড়ি অর্থ। এনে দিবে কাড়ি কাড়ি লেটেস্ট ডিজাইনের গহনা। ইশারায় বুঝিয়ে দিবে এতো কিছুর পরে আবার ভালবাসা লাগে নাকি?
তার কাছে টাকাই সব রে। ভালবাসা তো কিছুই নয়। নগন্য! তুই একটুখানি ভালবাসার জন্য ছটফট করবি। হাহাকার করে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠবি তখন।
আমি সেদিনও লুকিয়ে লুকিয়ে তোর ঐ নেশাতুর চোখ দুটি দেখবো। আর কবিতা লিখে যাবো।
-
মেয়ে!
একদিন তুই বুড়িয়ে যাবি। তোর চোখের নিচে কালো দাগ পড়বে। দীঘল কালো রেশমি চুল গুলো সাদা বর্ণ ধারণ করবে। চামড়াগুলো কুঁচকে যাবে। তোর স্বামী তোর দিকে ফিরেও তাকাবেনা তখন। নাইট ক্লাব এ গিয়ে তাগড়া তাগড়া মেয়ের সাথে ফুর্তিতে মেতে উঠবে। ভোর রাতে মদ্য পান করে বাড়িতে ফিরবে। তুই কেমন আছিস, খেয়েছিস কিনা ভুলক্রমেও জানতে চাইবেনা। তুই আবারও কাঁদবি তখন।
আমি সেদিনও লুকিয়ে লুকিয়ে তোর ঐ নেশাতুর চোখ দুটি দেখবো। আর কবিতা লিখে যাবো।
-
মেয়ে!
মৃত্যুসজ্জায় তুই একদিন জীবনের হিসাব মিলাতে বসবি। জীবনের সব প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির খাতা খুলে বসবি। আমি সেদিন আর লুকিয়ে দেখবোনা তোকে। ধীর পায়ে হাতে তোর দেওয়া লাল ডায়েরিটুকু নিয়ে আসবো তোর কাছে। আমাকে দেখে কি তুই খুব বেশি অবাক হবি? আমিও তো ততোদিনে বুড়িয়ে গেছি। তুই আমাকে দেখে খুব করে কাঁদবি। কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারবিনা সেদিন আমায়। কাছে এসে তোর হাতে ডায়েরিটুকু ধরিয়ে দিয়ে ফিরে চলে যাবো। তুই অপলক দৃষ্টিতে আমার চলে যাওয়া দেখবি। আমি যাওয়ার পর তুই ডায়েরি খুলে বসবি। প্রতিটি পাতায় পাতায় আমার ছোঁয়া পাবি। খুঁজে পাবি তোর প্রতি আমার নিঃসার্থ ভালবাসা। দেখতে পাবি প্রতিটি পাতায় পাতায় তোকে নিয়ে লেখা আমার কাব্য।
তুই পড়বি আর অঝর ধারায় কাঁদতে থাকবি সেদিন। এতদিনে এসে তুই তোর ভুল বুঝতে পারবি। যেই কবিতাকে তুই বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলে গিয়েছিলি। দিয়েছিলি উপহার একরাশ তাচ্ছিল্য। সেই কবিতার মাঝেই তুই সেদিন ভালবাসা খুঁজে পাবি। তুই সেদিন কি হারিয়েছিলি তা ক্ষনে ক্ষনে বুঝতে পারবি। জীবনটা কতটা ভালবাসায় পূর্ণতা পেতে পারতো সেদিন বুঝতে পারবি। তুই আবারো কাঁদবি। ক্রমাগত কাঁদতেই থাকবি। তোর কান্না যেনো আর শেষ ই হবেনা। দূর হতে তুই তোর মৃত্যু ঘন্টা ভেসে আসতে শুনতে পাবি। তোর শুধু জানা হয়ে উঠবেনা এতো বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তোর ঐ চোখ দুটো আমার কাছে বিন্দু মাত্র ও বদলে যায়নি।
আমি আবারও সেদিন লুকিয়ে লুকিয়ে তোর ঐ নেশাতুর চোখ দুটি দেখবো। আর কবিতা লিখে যাবো।
-
মেয়ে!
আবারও সময় পেরিয়ে যাবে। তোর সাথে এবার আমার দেখা হবে জাহান্নামে। কি করবো বল? তোর মৃত্যুর পর যে আমিও তোর কাছে চলে যাওয়ার পায়তাঁরা কষ ছিলাম। তাইতো ছুরি টা নিয়ে হাতের শিরা এক টানেই কেটে দেই। সত্যি বলছি। আমার এক বিন্দু ও কষ্ট হয়নি। ভালবাসার মানুষের জন্য যেকোনো কিছু করার মাঝেই সুখের ছোঁয়া খুঁজে পাওয়া যায়। এবার আমার তোর সাথে দেখা হবে জাহান্নামে। দুজনে একত্রে জাহান্নামের লেলিহান অগ্নি শিখায় জ্বলতে থাকবো। খুব কষ্ট হবেরে। খুব। জানিস ই তো জাহান্নামের আগুন পৃথিবীর আগুনের চেয়ে সত্তর গুন বেশি প্রখর।
সে যাই হোক, দুজন মিলে একসাথে এই শাস্তি ভোগ করবো। এটুকুই বা কম কিসের? শুনেছি মনে বিন্দু পরিমান ঈমান থাকলেও নাকি একসময় জান্নাতে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। একসময় আমাদের শাস্তির ও অবসান ঘটবে। দুজনের আবার দেখা হবে কোনো এক সময় জান্নাতে।
তুই কি সেদিনও আমায় ছেঁড়ে চলে যাবি অন্য কোনো সুখের আশায়? নাকি শেষমেশ এবার আমার কবিতাগুচ্ছের প্রেমেই পড়বি? প্রশ্ন টা নাহয় তোর জন্যই তুলে রাখা হলো!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০৭
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×