পূর্ণিমার আলোয় প৾থম কোন
অপ্সরী দেখে ছিলাম।হ্যা তোমার কথাই
বলছি।সেদিন বলেছিলাম তোমায় হবে কি
আমার?হেসেছিলে তুমি সেদিন। মাথায়
আমার হাত
রেখে বলেছিলে পাগল ছেলে।এরপর থেকেই
শুরু হয় তোমার কাছে আমার সব আবদার।
বলেছিলাম
চলো হাটি শিশির
ভেজা ঘাসে নতুবা যাই নীল নদীর
তীরে যেখানে আকাশের নীল আর পানির
নীল এক হয়।
হ্যা তোমাকে নীলে ভালোই লাগে নীল
শাড়িতে খোপায়
সাদা ফুল বেশ মানায় তোমায়। মনে হয়
নীল আকাশের সাদা মেঘ।নদীর হুহু
বাতাসে নিরবে ভিজেছি পূর্ণিমার আলোয়
দুজোন।
হন্যে হয়ে চেয়েছি কোন এক অপ্সরীর হাত
আমার হাতে।
হারাতে চেয়েছি নীল নিলীমায়। মধ৽
দুপুরে যখন সূর্য মাথার উপর। চেয়েছি
রাখতে তোমার কোলে মাথা তখন সেই সূর্য
ছিলো নিরুত্তাপ যেন সূর্য
পাহাড়া দিচ্ছে এক জলন্ত অপ্সরীকে।
রেখেছি তোমার কোলে মাথা ঠিক
যখনি দিতে চেয়েছিলাম তোমার খোপায়
লাল ফুল কর্কশ
স্বরে বেজে উঠল এলার্ম ঘড়িটা। উঠে বসলাম
মনে পরে গেলো সবই ছিলো স্বপ্ন।
হাহাহা আসলেই
ভালোবাসা কি তা আমি জানিনা।
ভালোবাসার রং কি তাও
জানিনা জানতেও চাই না। মহামূল৽বান
ভালোবাসা ক্রয়ের সামর্থ আমার নাই।এসব
ভাবতে কুচকানো এক শার্ট
পড়ে নাস্তার টেবিলে বসলাম।
মনে পড়ে গেল কেউ তো নায়
নাস্তা বানানোর।টেবিল
থেকে সিগরেটের প্যাকেট থেকে বের
করলাম একটা বেনসন। ধোয়ার সাথে বের
করে দিলাম সব দুঃস্বপ্ন।এক গ্লাস
পানি খেলাম। কাগজের
ফাইলটা হাতে নিলাম
জুতা পড়তে গিয়ে দেখি ছিড়া।
ছিড়া জুতা নিয়া ন্যাংচাতে ন্যংচাতে বেরিয়ে পড়লাম
জীবন যুদ্ধে।
পথে মুচি পেলে জুতার কাজ
সারায়ে নিবো।
এলোমেলো একাকী জীবন উপভোগই করি।
সূর্যের আলো যখন তীর্যক ছায়ার
তৈরি করে ঘরে ফিরলাম।ঘর বললে ভুল হবে।
রুমে ফিরলাম।কোন এক বাড়ির
সামনে একটা রুম ভাড়ায় থাকি।যার জন্য
মাসিক বেতনের ৮০০০ টাকার ৩০০০ টাকাই
চলে যায়।
রুমে এসে কলের শীতল
পানি দ্বারা দেহ ও মন শীতল করে বিছানায়
দেহ এলিয়ে দিলাম। মনে পড়ে গেল কাল
বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। বাবা মারা যাওয়ার
এক মাসের মাঝেই মা আমার দ্বায়ভার
থেকে মুক্তি নিয়া পরপারে চলে গেল।
বাবা মা বেঁচে থাকতে ব্যাবসার জন্যে কম
টাকা নি নায়।পুনঃপুনঃ লস খেয়ে ব্যাবসার
আশা ছেড়ে দিলাম।
বিয়ে দেয়ারও কম
চেষ্টা করেনি কিন্তু
সঙ্গিনীকে খাওয়াবো কি। একাকি জীবন
তেমন কেউ নেই। আত্মীয়
স্বজন থাকলেও খোজ নেয়া হয় না।
যা আছে কিছু বন্ধু। বন্ধুর অভাব নায় আমার
শামস,কল্প,ফাহিম,ধ্রুব,তাজিন, মাসুদ,কাব্য,হৃদয়, পিয়াল,প্রান্ত
আরো কত।সবাই ভালো জায়গায় আছে। রিয়াদ
আজ টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার।ফাইয়াজ আজ
সচিব।
মেহেরাব বাবার ব্যাবসায় বসেছে। সাকিব
ব্যারিস্টার।তার টাকা উড়ানোর স্বভাব
আজো আছে। আড্ডার সকল খরচ সেই দেয়।
নাবিল ও ভালো আছে। তারা সবাই
বিয়ে করেছে।
তবে হ্যা মাসুদুল আজও বিয়ে করেনি।
রাজনীতি করে
সে।কোন এক এলাকার কমিশনার। রাজনীতির
চেষ্টা আমিও ছাত্রজীবনে কম করি নাই।
তাতে বড়ভাইদের পিছে
শুধু চামচামির তেলই খরচ হয়েছে।হঠাৎ
মনে পড়ল কাল রাতের দুঃস্বপ্নের কথা।
ভাবতে ভাবতে বুক
ভারী হয়ে উঠলো।দুঃস্বপ্নের
বোঝা উড়িয়ে দেওয়ার জন্য বেনসনের
ধোয়ার ঘুর্ণিঝড় তৈরি করলাম।কখন
যে ঘুমিয়ে পড়লাম জানিনা।প্রচন্ড উত্তাপ
অনুভব করলাম কাউকে হারানোর উত্তাপ।
ভালোবাসা হারানোর উত্তাপ। পরদিন প্রথম
আলোয়
আসলো ঘরে আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত এক যুবক।আগুনের
উৎস সিগরেটের আগুন। জানিনা এই খবর
পত্রিকার হাজার খবরের
ভিড়ে মানুষের চোখে পড়ল কি না।
তবে পড়লেও খবরের মূল চরিত্রের জীবনের
গভীরতা যে
অদেখাই থাকবে তাও জানি।