somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

এরশাদ বাদশা
জীবনের সব রঙিন মূহুর্তগুলো এখন শুধুই দুই এনজেল এর মাঝে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। তারা হাসলে আমি হাসি..তাদের বিন্দুমাত্র কষ্টে ভীষন ব্যথিত হই.. ব্যস্ততা যদিও দেয়না অবসর..তবু এক আধ টুকরো অবসরের মুহুর্তগুলো রাঙিয়ে দেয় ওরা দুজন..দে আর মাই ওয়ার্ল্ড..দে আর মাই ডটার..দ

স্বপ্নচোর- ৩য় র্পব

০৮ ই মে, ২০০৮ রাত ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফখরুদ্দিনের বউ ঘোমটা মাথায় দেওয়া একটা মোষকে (প্রথমে তাই ভেবেছিলো ও) সঙ্গে করে নিয়ে এলো।
ওর পাশে বসানো হলো মোষটাকে। জয় এসবের মাথা-মুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছিলোনা, কোন প্রশ্ন করার সাহসও হলোনা। ‘সালাম কর, মা, সালাম কর,’ বলল ফখরুদ্দিনের বউ।
বলার যা দেরি, সাথে সাথে হুকুম তামিল করলো মেয়েটা। হতভম্ব জয় এমনকি পা সরিয়ে নেওয়ারও সময় পেলোনা।
‘ঘোমটাটা সরাও না, ছেলেটা একটু দেখুক।’ বউয়ের উদ্দেশে বললো ফখরুদ্দিন।
কাপড় দিয়ে ঢাকা এক দলা কয়লার উপর থেকে যেন কাপড় সরানো হলো। দেখে তাই মনে হলো আতংকিত জয়ের। ‘এতো সাক্ষাত মা কালী!’ মনে মনে বলল ও, আরেকটু হলে সরাসরিই বলে ফেলতো।
‘তোমরা কথা বলো, আমরা আসছি।’ জলহস্তীর সাথে জয়কে একা রেখে বেরিয়ে গেলো স্বামী-স্ত্রী।
‘কিছু বলছোনা যে,’ মদির (জয়ের মনে হলো মরণ) কটাক্ষ হেনে বললো মা কালী, জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকা জয়ের উদ্দেশে।
‘অ্যাই মেয়ে, অ্যাই, কোন সাহসে আমাকে তুমি করে বলছো, অ্যাঁ?’ রাগে ফেটে পড়লো জয়।
‘ওমা, তুমি করে বলবোনা তো কি আপনি করে বলবো, ক’দিন পর....’ গলায় আহ্লাদ মা কালীর।
‘ক’দিন পর কী, অ্যাঁ, কদিন পর কী? শোনো মেয়ে, আয়নায় নিজেকে আপাদমস্তক দেখো, তারপর এরকম স্বপ্ন দেখার সাহস করো। তুমি জানো কী রকম লাগে তোমাকে?’
‘কী রকম?’
‘ফানুস দেখেছো, ফানুস? বড়–য়ারা পার্বনে উড়ায়। তুমি হচ্ছো ফানুস, ঢাউস সাইজের ফানুস। আর রঙটাও মাশাল্লা, কারেন্ট চলে গেলে তো তোমাকে দেখাই যাবেনা!’
যদিও ফখরুদ্দিনের উপর ভীষণ রেগে গিয়েছিলো ও,তবু কথাগুলো বলার পর জয়ের নিজের কাছেই বেশ খারাপ লাগলো। এখানে মেয়েটার তো কোন দোষ নেই। দোষ হচ্ছে ফখরুদ্দিনের, মেয়ে অসুন্দর বলে রাস্তা থেকে লোক ধরে এনে বিয়ে দিতে হবে নাকি!
তবে যার উদ্দেশে উত্তপ্ত বাক্যবাণ বর্ষণ করা হলো সে কিন্তু নির্বিকার। জয়ের কথাগুলো যেন ওর কানেই যায় নি, বললো-‘আজ কিন্তু আপনি খেয়ে যাবেন, বাবা বলেছে আপনাকে যেন যেতে না দেই।’
‘কেন গো, আমি কি আলাদীনের চেরাগ, নাকি সলোমনের গুপ্তধন, যে আমাকে যেতে দেওয়া যাবেনা?’ মনে মনে বলল জয়।
সুযোগ বুঝে সেখান থেকে ভেগেছিলো জয়, আসার সময় এমনকি একবার ওদের বলে পর্যন্ত আসে নি। জানে কাজটা উচিত হয়নি, কিন্তু ফর্মালিটি করতে গেলে বিপদ বাড়তো বৈ কমতো না। তাই পালিয়ে চলে এসেছিলো ও। পরে ফখরুদ্দিন ওকে অনেকবার বলেছে যে এভাবে চলে আসাটা ওর মোটেও উচিত হয়নি। সখিনার মা (মেয়েটার নাম সখিনা) ওর জন্য অনেক আয়োজন করেছিলো। সব নাকি বরবাদ হয়েছে। জয় তখন মনে মনে বলছিলো ‘আমার জীবন বরবাদ হওয়ার চেয়ে খানা বরবাদ হওয়াটা তেমন বেশি কিছু নয় গো।’

মদিনা হোটেলে ক্যাশ এর পাশে একটা সিডিসেট আছে, যেটায় এ মুহূর্তে ফুল ভলিউমে হিন্দি গান চলছে।
মন দিয়ে শুনছে জয়। গানের কথা শোনা যাচ্ছেনা অত্যাধিক মিউজিকের কারণে, তবু ওর কাছে চেনা চেনা লাগছে গানটা। মন দিয়ে শুনতেই চিনতে পারল। পুরোনো দিনের গান, রিমিক্স বানানো হয়েছে। রিমিক্স গানের ব্যাপারে ওর একটা অপিনিয়ন আছে। সেটা হচ্ছে এরকম, ‘‘খুব সুন্দর একটা মেয়ের চেহারায় প্রথমে এসিড মারা হলো, তারপর ওর সেই মুখের উপর করা হলো প্লাস্টিক সার্জারি। এতে যদিও কোনোরকমে ওর চেহারাটা ঢাকা গেলো, কিন্তু আগের সেই সৌন্দর্য ফিরে পাওয়া গেলোনা মোটেও।’’ জয়ের চোখে রিমিক্স গানগুলো এরকমই।
মদিনা হোটেল থেকে বেরিয়ে এলো জয়, তক্ষুনি ওর মোবাইল বেজে উঠলো। ধরল জয় ,বন্ধু মারুফ।
‘কিরে সোনার চান, কোথায় ডুব মেরে আছিস?’ মারুফ বলল।
‘সেটা করতে পারলে তো কথাই ছিলো না, আরামসে মৎস্যকুলের সাথে ঘুরে বেড়ানো যেতো, খাওয়া-পরার চিন্তা থাকতোনা।’
‘বুঝতে পেরেছি, বেশ কদিনের উপোস তুই। মরে যাওয়ার আগেই অফিসে চলে আয়।’

চলবে.....

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১০ ভোর ৫:৩৩
১৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×