ডোবার ধারে কোলা ব্যাঙের মেলা বসেছে। এরা ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে ডাকাডাকি করছে। আর তাদের গলা বেলুনের মতো ফুলে উঠছে। ব্যাঙের ডাক শুনে এক বিড়ালছানা ছুটে গেল ডোবার ধারে। ছানাটি ব্যাঙের মতো ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে ডাকতে চাইল। নাহ্, আওয়াজ হয় ‘মিঁয়াও’। ধ্যৎ ‘মিঁয়াও’ ডাক আমার মোটেও ভালো লাগে না। আমি ডাকব কোলা ব্যাঙের মতো, বলে বিড়ালছানা।
একটি কোলাব্যাঙ থপ্ থপ্ করে এগিয়ে এল বিড়ালছানার কাছে।
বিড়ালছানাটি বলল, আমি যদি গলা ফুলিয়ে ‘ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ’ করে ডাকতে পারতাম আর তুমি যদি আমার মতো ‘মিয়াঁও’ করে ডাকতে পারতে, ব্যাপারটা দারুন মজার হতো!
কোলা ব্যাঙ বলল, আমরা সেটা কীভাবে করতে পারি?
খুব সোজা, বলল বিড়ালছানা। আমি আমার ‘মিয়াঁও’ ডাক তোমাকে দিয়ে দেব আর তুমি তোমার ‘গলাফোলা ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ’ দিয়ে দিবে আমাকে। তাহলেই দেখবে আমরা একটা চমক দেখাতে পারব।
দু’জনেই রাজি। ব্যাঙ নিল ‘মিয়াঁও’ ডাক ও বিড়ালের লেজ আর বিড়ালছানা নিল ‘গলাফোলা ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ’।
তারপর বিড়ালছানা গলা ফুলিয়ে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে ডাকল আর কোলাব্যাঙ লেজ নেড়ে ডাকল মিয়াঁও।
টিপলুরা রাতের খাবার খেতে বসেছে। এমন সময় বিড়ালছানাটি ডেকে উঠল ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। ওরা চমকে উঠে বলল, আরে! এখানে ব্যাঙ ডাকে কেন? সবাই ভাতের থালা হাতে নিয়ে পিঠ বাঁকা করে দাঁড়িয়ে গেল। টিপলু বলল, ওটা ব্যাঙও না বিড়ালও না। ওকে তাড়াও। ওরা হাতের কাছে যা পেল তাই নিয়ে দিল তাড়া। বিড়ালছানাটি ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে লাফিয়ে চলে গেল ডোবার ধারে।
সেখানে গিয়ে দেখে কয়েকটা ব্যাঙ একটি ব্যাঙের উপর লাফিয়ে পড়ছে। ব্যাঙটি মিয়াঁও মিঁয়াও করছে। এক বুড়ো ব্যাঙ বলছে, এটা বিড়ালছানা ছাড়া আর কিছুই না। ও এখানে কেন? কাদায় পুঁতে ফেলো। ব্যাঙটি কাদার ভেতর দিয়ে কোনো মতে চলে গেল সেই গাছের তলে, যেখানে বিড়ালছানাটি বসে আছে।
ব্যাঙটি হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, তাড়াতাড়ি আমার জিনিস আমাকে ফিরিয়ে দাও আর এই নাও তোমার লেজ আর মিয়াঁও।
বিড়ালছানা বলল, ভারি বিপদ!
আসলে নিজের যা আছে তাই নিয়ে আমাদের খুশি থাকা উচিৎ। পরের জিনিস নিজের বলে চালাতে গেলেই বিপদে পড়তে হয়। একথা বলে তারা যার যার ঘরে চলে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৪