-হ্যালো,এই তুমি এখনও ঘুমোচ্ছ
-হ্যাঁ কিন্তু তুমি কি করে বুঝলে-
-কেন সিম্পল ফোনটা ধরে গাধার মত হাই দিয়ে ওঠলে যে তাই বুঝে গেলাম।
-আচ্ছা গাধারা কি ঘুম থেকে উঠে হাই দেই নাকি
-শুন কথা বাড়িও না (কিছুটা উচ্চস্বরে)।
-কেন আবার কি হল,রেগে যাচ্ছ কেন।
-আচ্ছা এখন দিনের কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে তোমার,তুমি এখনও বিছানায় পরে ঘুমাচ্ছ!
-তো কি করব,তুমি তো জানো আমি,আকার ছাড়া বেকার।আর বেকারদের সবচেয়ে উত্তম কাজ হল ঘুমিয়ে কাটানো।
-আচ্ছা হইছে তোমাকে এখন আর আমার কাছে বেকার এর ডেফিনেশন দিতে হবে না।
-কিছু খেয়েছ,
-আরে সবে তো ঘুম থেকে উঠলাম,
-বুয়া কি রেধেছে ।
-জানি না,দেখতে হবে।
-আজব জানি না মানে বাজার কে করে তুমি না বুয়া।
-না আমিই করি
-তাহলে জানো না কেন
-বুঝেছি তোমার ঘরে খাওয়া লাগবে না তুমি এখনি আমার সাথে দেখা কর।
-কেন?
-এত কথা জানতে হবে না,বলেছি দেখা করতে ব্যস্ ,শুন তোমার আসা লাগবে না বাসার কাছে যে পার্কটা আছে না ঐটার পুকুর পাড়ে আস ১৫ মিনিটের মধ্যে আমি আসছি।
৩৫ মিনিট পর
-এই তোমার আসার টাইম হল কতক্ষন দেরি করেছ জানো।
-কি করে জানব ধরে ঘড়ি নেই,হাতেও নেই আর মোবাইলের ডিস্প্লেটাও নষ্ট,সরি আজকের মত প্লিজ
-আচ্ছা হইছে এখন বস এইখানে
-হ্যাঁ বল বল এত জরুরী ডাকলে
-এই নাও ।
-এইটা কি?
-আরে বাবা খুলে দেখ তোমার ফেবারিট নুডুলস এনেছি।আর এই নাও
-এটা আবার কি?
-খুলে দেখ !
-একি এ তো সিগারেট,এক প্যাকেট কেন?
-কারন তুমি রাত থেকে সিগারেট না খেয়ে আছ,শুন তাই বলে আমার সামনে না ওকে আমি যাওয়ার পরে খাবা।
-আচ্ছা নুডুলস এনেছ ভাল কথা কিন্তু, এক ক্যারিয়ার বক্স কেন?এগুলো দিয়ে কি আমি গোসল করব নাকি আর এই গুলো খেলে আমার ঘরের খাবার কে খাবে শুনি।
-এই শোন আমি জানি আজ তোমার আজ না কিছু রান্না হয়নি,আমার সাথে চালাকি করবা না আর এও জানি তুমি কাল রাতে কিছু খাও নি এখন আমার সামনে বসে তুমি এই পুরোটা শেষ করবা।নাও শুরু কর আচ্ছা যাও তোমার কষ্ট করতে হবে না ,দাও আমি খাইয়ে দিচ্ছি।নাও হা কর
-কি ব্যাপার মুহিত তোমার চোখে পানি।
-কই না তো এমনি ঐ কি যেন একটা পড়েছে।
-এই তুমি আমার সাথে মিথ্যে বলতেছ কেন আমি স্পষ্ট দেখতে পাছি তোমার চোখে পানি।
-দেখ মারজান তোমার কাছে আমি কিছুই লুকোতে পারি না শত চেষ্টাতেও না,আমি কাল রাতে খাইনি তুমি ধরে ফেলেছ,আজ সকালে আমার মেসে বাজার নেই বলে রান্না হয় নি তুমি সেটাও বুঝে ফেলেছ।আমার জন্য নাস্তা করে এনেছ।
কিন্তু আর কতদিন এইভাবে চলবে বল পড়ালেখা শেষ করে দুবছর ধরে চাকরির জন্য ঘরছি টিউশনিটা করে কোনরকমে চলে যায়।গ্রামের বাড়িতে ঠিক মত টাকা পাঠাতে পারি না ।মা একটা কিছু করার জন্য খুব প্রেসার দিচ্ছে।কিন্তু,আমি নিরুপায় হয়ে বসে আছি।তুমি আমার জন্য আর কত করবে।
-শুন আমি তোমার চোখের পানি দেখতে এইখানে আসি নি,চোখ মুছ আর খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর।আর চিন্তা কর না দেখবে একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।আমি এখন উঠবো।
আসি
মারজান চলে যাচ্ছে।মুহিত এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।মারজান আজ এসেছিল অনেক্ষন থাকবে বলে।কিন্তু, মুহিতের চোখের পানি মারজান সহ্য করতে পারবেনা,তাই উঠে চলে যাচ্ছে।মুহিত আজ একা কাঁদে নি ,মারজানও কেদেছে।কিন্তু, মুহিত সেটা দেখে নি।মারজান চায় না ওর চোখের জল মুহিতের কষ্টটাকে আরও বাড়িয়ে তুলুক ।
(অসমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫