somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কার্জন এর নিজের লিখা কষ্টের কথা থেকে কিছুটা অংশ আমি তুলে ধরলাম।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আপনারা কেউ কিছুই জানাননি। তাই আমি এই কাহিনী টা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি না।
তাই আজ তার নিজের লিখা কষ্টের জীবনের ক্ষুদ্র একটা অংশ তুলে ধরলাম।

এই অংশটা আমি শুধু কপি করে দিলাম।



কিছুদিন হলো একটা বিষয় খেয়াল করলাম। তা হলো বর্ণ যতদিন আমার জীবনে ছিলো ততদিন আমার জীবন টা সুন্দর ছিলো। আর বাকি সময় টা ছিলো অকল্পনীয় কষ্টের।
কিছুদিন হলো একটাায় আসি। সেই সময় বর্ণ না করে দেয়ার পর আমি পুরো ছন্নছাড়া হয়ে গেলাম। বন্ধুদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলাম। সবসময় একা থাকতাম। খুব খারাপ লাগতো তখন। কোনভাবে নিজেকে সামলাতে পারলাম না। আগে বন্ধুরা মিলে শখ করে সিগারেট এ টান দিতাম মাঝে মাঝে। এই সময় টাতে তা নিয়মিত হয়ে গেলো। আস্তে আস্তে আরো অনেক খারাপ কিছুর দিকে ঝুকে গেলাম। ( নাম উল্লেখ করলাম না। ) তখন আমার জীবনের অনেকটাই শেষ করে দিলাম। খুব ধীর গতিতে আমার পড়া লেখা চলল। মানে পড়াশুনা করতে হবে বলে করা আর কি। এস.এস.সি পাশ এর পর ডিপ্লোমা শুরু করলাম। বিষয় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। এর মাঝে ক্লাস ১০ এ উঠার পর মাথায় একটা চিন্তা এল, তা হলো " আমি কি দেখতে এতই খারাপ অথবা আমার চলাফেরা কি এতই খারাপ যে বর্ণ এর জন্য আমাকে পছন্দ করে নাই" । এর পরে ভাবলাম তাহলে অন্য মেয়েদের সাথে মিশে দেখি তাদের কাছ থেকে কেমন feedback পাই। ( একটা কথা বলে রাখি। এই ক্লাস ১০ এর আগে পর্যন্ত আমি মেয়েদের সাথে কথা বলতে বিব্রত ও লজ্জাবোধ করতাম। ) প্রথমে হাই স্কুল থেকে ক্লাস নাইন এর একটা মেয়েকে প্রপোজ করলাম। তাও নিজে পারি নাই। একটা বন্ধু কে দিয়ে করেছি। কয়েকদিন পর রাজি হলো। কিন্তু মজার কথা হলো ওই মেয়ে টা ১ বছর মনোহরদী ছিলো। এর মাঝে তার সাথে কথা হয়েছে মাত্র ৩ টা।
★ কেমন আছো
★ আমাকেও একটু পানি দিও
★ সৈকত কে একটু ডেকে দিও
এই ৩ টা কথাই হয়েছে তার সাথে।
এই শুরু হলো আমার মেয়েদের সাথে সম্পর্ক করা। সেই সময় থেকে এর পরের সাড়ে ছয় বছরে আমি সর্বোমোট ৯৮ টা মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছি। (বর্ণ ছাড়া। )
যাই হোক, ২০১০ থেকে আমি আপুর সাথে ঢাকা থাকতে লাগলাম। তখন আমি পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আপু কে কখনো বুঝতে দেই নাই। আমি প্রতিদিন ক্লাস না করলেও পরীক্ষা গুলো ভালোভাবেই দিতাম। ৩য় সেমিস্টার এর মিড টার্ম পরীক্ষা শুরু হলো। আমি প্রথম পরীক্ষা দিতে গিয়ে জানতে পারলাম যে আমার ১৫০০ টাকা বাকি আছে। আমি প্রথমে দীপা কে কল করে বললাম এই কথা। সে বললো বাবা কে বলতে। আমার মোবাইলের টাকা শেষ হয়ে গিয়েছিলো। তাই ভাবলাম যে বাবা কে সন্ধায় কল করবো। সন্ধায় কল করার পর প্রথমেই বাবা কে বললাম যে আমার কিছু টাকা লাগবে। কিসের টাকা তা কিন্তু আমি বলি নাই। টাকা লাগবে শুনেই বাবা বলল যে আমি তো এই পরীক্ষার আগে সব টাকা ক্লিয়ার করেছি। তাহলে আবার কিসের ১৫০০ টাকা লাগবে? আমি বললাম যে এই টাকা টা অতিরিক্ত কিসের যেন ফি। আমি ঠিক জানি না। বাবা রেগে বললো। তুমি অযথাই ঢাকা পরে আছো। তুমি পড়ালেখা করনা। তুমি এমনিতেই আমার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছ। আমি আর টাকা দিবো না। তুমি আজকেই মনোহরদী চলে আসো, এমন আরো অনেক কিছুই বললো।
( আমার প্রশ্ন: আমি তো বাবা কে বলি নাই কিসের জন্য টাকা চেয়েছি। আর বাবা কিভাবে জানলো যে আমার ১৫০০ টাকাই লাগবে। এই ফিস এর ব্যাপার টা আমি শুধু দীপা কে বলেছি। আপুকেও বলি নাই। ) আমি আমার পরীক্ষার জন্য টাকা চাওয়ার পর যখন এসব শুনতে হলো, খুব কষ্ট লেগেছিলো। আমি তখন ৪ টা পরীক্ষা দিতে পেরেছিলাম। আমার ওই টাকা টা বাকি থাকার কারনে দিতে পারি নাই। এর পর ক্লাস পরীক্ষা সব বন্ধ। সারারাত নেট এ বসে থাকতাম আর ওই নেশার জিনিস গুলো খেয়ে নিজের জীবন টাকে ধংস করতাম। নেট থেকে এক বড় ভাই এর মাধ্যমে একটা চাকরী পাই। একটা সনামধন্য কোম্পানি'র web developer and website security in charge হিসেবে। প্রতি মাসে ভালো টাকা পেতাম। শুধু এটুকু বলি, বাবা প্রতি মাসে আমাদের থাকা খাওয়ার জন্য যেই টাকা টা দিত তার থেকে দ্বিগুণ এরো বেশী। সুতরাং আমার জীবন নষ্টের জন্য যা লাগতো তার টাকা টা আমি পেয়ে যেতাম। আমি তখন আবার পড়ালেখা শুরু করতে পারতাম কিন্তু করি নাই কারন বাবার ওই আচরন এবং আমাকে নিয়ে আমাদের পরিবারের ওই সমস্যা।
সারারাত নেশা এবং নেট নিয়ে থাকতাম। আর বিকাল পর্যন্ত ঘুমাতাম। বিকালে বের হয়ে টুকটাক কাজ এবং আমার জিনিস গুলো জোগার করতাম। বাসায় এসে রাতে খেয়ে আপু শুয়ে পড়তো আর আমি আমার রুমে কম্পিউটার চালু করে প্রথমে বর্ণ'র ছবি দেখতাম। ছবি দেখার সময় মনে মনে বলতাম " বর্ণ আমার থেকে বেশী কেউ তোমাকে ভালোবাসতে পারবে না।"
কথা টা ১০০% সত্যি। এভাবেই আমি নিজেকে শেষ করছিলাম আর একের পর এক মেয়ের সাথে সম্পর্ক করছিলাম। ( কোন মেয়ের সাথেই একবার দেখা হওয়ার পর আর তার প্রতি কোন আগ্রহ থাকতো না। ) আর প্রতিটা মেয়ে কে আমি বর্ণ র কথা বলেছি। তারা এটাও জানতো যে বর্ণ আমার জীবনে আসলে তাদের আমি ভুলে যাবো। এভাবেই বর্ণ কে হারিয়ে এবং আমার পরিবারের কাছ থেকে এসব কষ্ট পেয়ে সবার সামনে থেকেও সবার অযান্তে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিলাম।

এসবের মাঝেও আমি ওই সাড়ে ছয় বছর যে কয়বার সুযোগ পেয়েছি বর্ণ কে প্রপোজ করেছি। প্রায় সব ঈদ এর কয়েকদিন পর বর্ণ রা সবাই আমার গ্রামের বাড়ি আসতো। তারা আসার আগেই আমি দীপা কে অনুরোধ করতাম যাতে হোন্ডা দিয়ে বর্ণ কে নিয়ে ঘুরতে পারি। সে বেশ কয়েকবার সুযোগ করে দিয়েছে। হোন্ডা দিয়ে ঘুরার সময়ও তাকে প্রপোজ করতাম। সে না করে দিত। আমি তারপরেও হাল ছারতাম না। ২০১০ এর সেপ্টেম্বর এর ২৪ তারিখ আপুর বিয়ে হয়ে গেলো। আমি তখন পুরা একা হয়ে গেলাম। আপুর বিয়ের কিছুদিন পরেই ছিল ঈদ। ঈদ এর পর বর্ণ রা আসলো আমার গ্রামের বাড়িতে। সবাইকে নিয়ে হোন্ডা দিয়ে ঘুরে সবার শেষে বর্ণ কে নিয়ে বের হলাম। আমাদের বাসা থেকে ৭ কি: মি: দূরে একটা মাজার আছে। শাহ ইরানী মাজার। তাকে সেখানে নিয়ে গেলাম। সেখান থেকে আসার পথে তাকে প্রপোজ করলাম। সে না করলো। বর্ণ রা চলে যাওয়ার পর দীপা জানতে চাইলো যে এবার তাকে প্রপোজ করেছি কি না। আমি বলেছি যে করেছি কিন্তু রাজি হয় নাই। সে তখন বলল যে এত মেয়ের সাথে সম্পর্ক করলা কিন্তু একমাত্র তাকেই রাজি করাতে পারলা না। আমি আর কিছু বলি নাই। এর পর তারা আরো ২ বার গ্রামের বাড়িতে এসেছিলো কিন্তু বর্ণ হোন্ডা দিয়ে ঘুরেনি। পরে জানতে পারলাম আমি তাকে নিয়ে ঘুরতে গেলেই যে তাকে প্রপোজ করি এটা দীপা আলো আন্টি কে বলে দিয়েছে। তাই আর আমার সাথে ঘুরতে দেয় না।

এসব ঘটনার মাঝেই সাড়ে ছয় বছর কাটলো।

এর পরই আবার সব বদলালো।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×