somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘরকন্নার বন্টন

০২ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৯:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘরের কাজে ঘরের পুরুষরা হাত লাগান কি লাগান না-এই নিয়ে ইদানীং বেশ সরব আলোচনা গল্পে ও প্রবন্ধে চোখে পড়ে। নব্য নারীবাদ, যা মূলত খুব ভুলভালভাবে “পুরুষের কাউন্টার ও অনুকরন করা”কেই স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন হিসেবে প্রতীয়মান করতে ব্যস্ত;
সেই নব্য নারীবাদ ঘরের পুরুষেরা গৃহস্থালী কাজে সাহায্য করেন না-এই প্রতিবাদের ধুয়া বেশ জোরেশোরেই উচ্চারন করে থাকেন।
গৃহস্থালী কাজ (মূলত বাচ্চা পালন, রান্না, ধোয়া, পরিষ্কার, বিলিং, স্কুলিং, সোশ্যাল ইনটারেকশন) এগুলো যে কেবলমাত্র পুরুষের ডোমিনেশনের স্টারভেশন ও জেন্ডার স্পেশালাইজেশনের কারনেই নারীর ওপর চেপে বসেছে-আমি তা মনে করি না।
এখানে ছোট্ট একটি ভাবনা বাদ পড়ে যায় আমাদের নিত্য আলাপে।
তা হল, এই কাজগুলো, যাকে আমরা মূলত গৃহস্থালি কাজ এবং নারীর কাজ বলে একতরফাভাবে চাপিয়ে দিই, কিংবা, দ্বিমত জানাই-উভয়েরই জেনে রাখা ও বিশ্বাসে রাখা ভাল, যে, এগুলো নারীর কাজ হিসেবে একরকম প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বহু বহু যুগ আগে হতে। ঠিক যেমন, আয়, নিরাপত্তা, সুরক্ষা, ভবিষ্যত চিন্তা, সন্তানের শাসন-এই দিকগুলো পুরুষের নামের সাথে জুড়ে গেছে। দুই দিকের বিন্যাসই হয়েছে সুদীর্ঘকাল সময় নিয়ে, ধীরে ধীরে। এবং, সম্ভবত, আদিম মানব সভ্যতার সূত্রপাতের অল্পকাল তক নারী ও পুরুষের সমভূমিকার অব্যবহিত পর হতেই এই বিভাজন সহজাতভাবেই রুপ পেতে শুরু করে বলে আমার ধারনা।
এটা অনেকটাই হয়েছে ন্যাচারালি। জেন্ডার বায়াস ও জেন্ডার ডিসক্রিমিনেশন কিছুটা দায়ী অবশ্যই। তবে মূল দায় আমাদের সিভিলাইজেশন, সোশ্যাল এলোকেশন, বায়োলজিক্যাল প্যটার্ন ও ইকনোমিক সিস্টেমের।
পুরুষকে (ইন জেনারেল) ঘরের বাইরে আয় করবার কাজে দিনের প্রায় ৮-১২ ঘন্টা ব্যয় করতে হয়। বিধায়, গ্রাজুয়ালি ঘরের গৃহস্থালি কাজের আনজাম নারীকেই করবার দায়ীত্ব দিতে, কিংবা নিতে হয়েছে।
অনেকটা পরিপূরক ও স্বাভাবিক প্রবণতা হিসেবে। এখন নারীকে ঘরের ’বুয়ার কাজ’ করবার দায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে অন্যায়ভাবে-এই খুবই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিবাদ যদি কেউ করেন, তাহলে আমারও তাকে বলবার আছে, যে, তাহলে সংসারের রুজি-রোজগার, আয়, আর্থিক চাপ নেবার-তথা চাকরি-ব্যবসা করার মতো ভয়ানক স্ট্রেসের (ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপমানের) কাজ করার একক দায় পুরুষকে কে কবে দিল? কেন দিল? কে সেই দেয়াটাকে হালাল করল?
হ্যা, দুজনই যদি বাইরে জব বা প্রফেশনে থাকেন, তখন দায়ীত্বটি সমান না হলেও সমানুপাতিক হওয়াটাই রেশনাল ডিমান্ড। গৃহস্থালী ওই কাজগুলোকে আমি এখনো ‘বউয়ের কাজ’ বলে মনে করি না। ঠিক যেমন টাকা কামানোকে আমি এ্যবসলুটলি ও সোললি ‘মরদের দায়’ বলে মনে করি না। জীবন যাপনের দুই দিককার সব দায়ীত্বগুলোই অবস্থা ও পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে নানামুখী বন্টন হতেই পারে।
আমার পার্টনার যদি আমাকে অফার করতেন ও সক্ষম হতেন, যে, তিনি আমাদের যৌথ জীবনের টাকা রোজগারের দায়ীত্ব নেবেন, তাহলে আমি খুব হরিষের সাথে ঘরকন্নার কাজ সামলাবার দায়ীত্ব নিতাম। বিন্দুমাত্র হেজিটেশন থাকত না। ইন ফ্যাক্ট, আমি তাকে সেই অফার কয়েকবার ফরমালি করেওছি। আমি চাকরি করি ঠিকই, কিন্তু, চাকরি আমার পছন্দের কাজ নয়।
ঘরের কাজে ’ব্যাডা’টা সাহায্য করে না-এই অত্যন্ত একচোখা দোষারোপকে যদি কারো কাছে হালালাইজড মনে হয়, আমিও তাদের বলতে চাই, কই, কেউতো কোনোদিন ’ম্যাডাম’দের কাছে দাবী করেন নাই যে, তিনিও অফিসে গিয়ে স্বামীর কাজে সাহায্য করুন।
উল্লেখ্য, আমার পার্টনার আয় রোজগারে সরাসরি কনট্রিবিউট করেন না যদিও, তবে তিনি আমার ক্যরিয়ার উন্নতি, আয় বৃদ্ধি ও ম্যানেজমেন্টে ভালই সাহায্য করে থাকেন। আবার, আমিও তাকে গৃহকর্মে যথাসম্ভব সাহায্য করি। মূলত ভারী ও শক্তি নির্ভর কাজ আমার, সূক্ষ্ণ, কম শক্তি সাপেক্ষ ও সৌন্দর্য সূচক কাজগুলো তার। এভাবেই আমরা দায়ীত্ব ভাগ করেছি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৯:৩৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×