somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম বিশ্বজনীন ধর্ম, সকল মানুষের ধর্ম

০২ রা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল্লাহ পাক বলেন :
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ
(হে রাসূল! তাদেরকে) বল, হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের প্রতি সেই আল্লহর প্রেরিত রাসূল, যার আয়ত্তে আসমানসমূহ ও পৃথিবীর রাজত্ব। (আরাফ : ১৫৮)
আরো ইরশাদ হয়েছে:
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ
হে নবী! আমি তোমাকে জগতসমূহের জন্য কেবল রহমত করেই পাঠিয়েছি। (আম্বিয়া : ১০৭)
আরো ইরশাদ হয়েছে :
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِينَ
হে মানুষ! তোমাদের কাছে এমন জিনিস এসেছে যা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এক উপদেশ, অন্তরের রোগ-ব্যাধির উপশম এবং মু’মিনের পক্ষে হেদায়াত ও রহমত। (ইউনুস : ৫৭)
ইসলাম মানবধর্ম। জাতি-ধর্ম বংশ-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রতি ন্যায় বিচার, সহমর্মিতা, সৌজন্যমূলক আচরণ, জীবের প্রতি দয়া এই ধর্মের অন্যতম শিক্ষা। কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে :
إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا وَإِذَا حَكَمْتُمْ بَيْنَ النَّاسِ أَنْ تَحْكُمُوا بِالْعَدْلِ إِنَّ اللَّهَ نِعِمَّا يَعِظُكُمْ بِهِ إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا
হে মুসলিমগণ! নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ করেছেন যে, তোমরা আমানতসমূহ তার হকদারকে আদায় করে দিবে এবং যখন মানুষের মধ্যে বিচার করবে, তখন ইনসাফের সাথে বিচার করবে। নিশ্চিত জেন, আল্লাহ তোমাদেরকে যে বিষয়ে উপদেশ দেন তা অতি উৎকৃষ্ট হয়ে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শুনেন, সবকিছু দেখেন। (নিসা : ৫৮)
আরো ইরশাদ হয়েছে :
إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلا تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا
নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি সত্য সম্বলিত কিতাব নাযিল করেছি, যাতে আল্লাহ তোমাকে যে উপলব্ধি দিয়েছেন সে অনুযায়ী মানুষের মধ্যে মীমাংসা করতে পার। আর তুমি খেয়ানতকারীদের পক্ষ অবলম্বন করো না। (নিসা. ১০৫)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاءَ لِلَّهِ وَلَوْ عَلَى أَنْفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ إِنْ يَكُنْ غَنِيًّا أَوْ فَقِيرًا فَاللَّهُ أَوْلَى بِهِمَا فَلا تَتَّبِعُوا الْهَوَى أَنْ تَعْدِلُوا وَإِنْ تَلْوُوا أَوْ تُعْرِضُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا
হে মু’মিনগণ! তোমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হয়ে যাও। আল্লাহর স্বাক্ষীরূপে-যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে কিংবা পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে হয়। সে ব্যক্তি (যার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার আদেশ করা হচ্ছে) যদি ধনী বা গরীব হয় তবে আল্লাহ উভয় প্রকার লোকের ব্যাপারে তোমার চেয়ে বেশী কল্যাণকামী। সুতরাং এমন খেয়ালখুশির অনুসরণ করবে না, যা তোমাদের ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়। তোমরা যদি পেঁচাও অর্থাৎ (মিথ্যা সাক্ষ্য দাও) অথবা (সঠিক সাক্ষ্য দেওয়া থেকে) পাশ কাটিয়ে যাও। তবে জেনে রেখো, আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। (নিসা : ১৩৫)
আরো ইরশাদ হয়েছে :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ لِلَّهِ شُهَدَاءَ بِالْقِسْطِ وَلا يَجْرِمَنَّكُمْ شَنَآَنُ قَوْمٍ عَلَى أَلا تَعْدِلُوا اعْدِلُوا هُوَ أَقْرَبُ لِلتَّقْوَى وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
হে মু’মিনগণ! তোমরা এমন হয়ে যাও যে, সর্বদা আল্লাহর (আদেশসমূহ পালনের) জন্য প্রস্ত্তত থাকবে এবং ইনসাফের সাথে সাক্ষদানকারী হবে এবং কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে ইনসাফ পরিত্যাগে প্ররোচিত না করে। ইনসাফ অবলম্বন করো। এ পন্থাই তাকওয়ার বেশী নিকটবর্তী এবং আল্লাহকে ভয় করে চলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ সম্পর্কে সম্পূর্ণ রূপে অবগত। (মায়েদা : ৮)হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে :
হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যারা মানুষের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন না। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ফাযাইল, হাদীস ৬১৭২)
আরো ইরশাদ হয়েছে :
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, (জীবের প্রতি) দয়াকারীর উপর দয়াময় আল্লাহ দয়া করেন। জমিনে বসবাসকারী মাখলুকের প্রতি দয়া কর, আসমানওয়ালা তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯২৪)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। আল্লাহর কাছে প্রিয় সেই যে তাঁর পরিবারের প্রতি দয়া করে। (শুআবুল ঈমান, বায়হাকী, হাদীস : ৭ )ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র সত্য ধর্ম । এই ধর্ম সকলকে দরদের সাথে সত্যের পথে আহবান করে। ইহকালীন ও পরকালীন নাজাতের পথে ডাকে। কিন্তু কাউকে বাধ্য করে না। সকলের ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বীকার করে।
ইরশাদ হয়েছে :
দ্বীন গ্রহণের বিষয়ে কোন জবরদস্তি নেই। হেদায়েতের পথ গুমরাহি থেকে পৃথক  রূপে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এর পর যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলো সে এক মজবুত হাতল আকড়ে ধরল, যা ভেঙ্গে যাওয়ার কোন আশংকা নেই। আল্লাহ সব কিছু শুনেন ও সবকিছু জানেন। (সূরা বাকারা : ২৫৬)
ইসলাম গ্রহণে কাউকে বাধ্য করা যাবে না। তবে যিনি  স্বেচ্ছায় সত্যধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেছেন, তিনি আল্লাহ তা’য়ালার হুকুম আহকাম পালনে বাধ্য থাকবেন। ক্ষমতানুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে বাধ্যও করবে। বনী ইসরাইল হযরত মুসা আলাইহিস সালামের প্রতি ঈমান আনার পর যখন তাওরাতের হুকুম আহকাম পালনে বাহানা করে, তখন তাদের উপর পাহাড় তুলে ধরা হয়। ইরশাদ হয়েছে :
وَإِذْ أَخَذْنَا مِيثَاقَكُمْ وَرَفَعْنَا فَوْقَكُمُ الطُّورَ خُذُوا مَا آَتَيْنَاكُمْ بِقُوَّةٍ وَاذْكُرُوا مَا فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
এবং সেই সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন আমি তোমাদের থেকে (তাওরাতের অনুসরণ সম্পর্কে) প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলাম এবং তূর পাহাড়কে তোমাদের উপর উত্তোলন করে ধরেছিলাম। (আরও বলেছিলাম যে) আমি তোমাদেরকে যা (যে কিতাব) দিয়েছি তা শক্ত করে ধর এবং তাতে যা কিছু  লেখা আছে তা স্মরণ রাখ, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (বাকারা : ১৩)
হাদীস শরীফে ইরশাদ হচ্ছে :
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোনও গোনাহের কাজ দেখবে শক্তি থাকলে হাত দ্বারা (বল প্রয়োগ করে) তা বন্ধ করে দিবে। এ শক্তি না থাকলে মুখ দ্বারা বন্ধ করার চেষ্টা করবে। এ  শক্তিও না থাকলে অন্তর দ্বারা ঘৃণা করবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৭৮)হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শিশুর বয়স যখন সাত বছর হয় তাদেরকে নামাযের আদেশ কর, দশ বছর হলে (প্রয়োজনে) প্রহার (হালকা শাসন) কর এবং তাদের শোয়ার বিছানা পৃথক করে দাও। (সুনানে আবু দাউদ ৪৯৬)
মুরতাদ সম্পর্কে ইসলামী আদালতকে রাসূল সা. নির্দেশ দিয়ে বলেছেন :
عن ابن عباس مرفوعا، من بدل دينه فاقتلوه. أخرجه البخارى فى صحيحه، كتاب استتابة المعاندين و المرتدين، باب حكم المرتد و المرتدة
হযরত ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে মুসলমান দ্বীন ত্যাগ করল তাকে মৃত্যুদন্ড দাও। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৭২২)
ইসলাম কোনও অমুসলিমকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করে না। তবে একমাত্র বিজয়ী ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত থাকতে চায়।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×