আচ্ছা........আমরা এই যে ''সাইকোপ্যাথ'' শব্দটা ব্যবহার করি, এর আসলে মানেটা কি? অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি, এর সংজ্ঞা কি?
অক্সফোর্ডের ল্যাঙ্গুয়েজ ডিকশনারী অনুযায়ী, সাইকোপ্যাথ সেই ব্যক্তি যে কিনা অস্বাভাবিক বা হিংসাত্মক সামাজিক আচরণসহ দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ব্যাধিতে ভুগছে। আরও বলা আছে, আত্মকেন্দ্রিক এবং অসামাজিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন মানুষ..........কর্মের জন্য অনুশোচনার অভাব, অন্যদের প্রতি সহানুভূতির অভাব এবং প্রায়শই লাগামছাড়া কার্যকলাপ যার প্রধান বৈশিষ্ট্য।
আমি আসলে সাইকোপ্যাথের উপরে কোন ক্লাশ নিচ্ছি না। এই সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারনা ব্লগারদেরকে দিলাম মাত্র। লেখা বড় হয়ে যাবে বলে ''সাইন এন্ড সিম্পটম''সহ আরো বিস্তারিত বিবরণ বাদ। আগ্রহীরা গুগলের সাহায্যেই সব জানতে পারবেন। প্রচুর আর্টিকেল আছে এ'বিষয়ে। তার চাইতে বরং চলেন, আমাদের ব্লগের দিকে একটু চক্ষু ফেরাই। একটা কুইজ। প্রথমেই সাইকোপ্যাথের সংজ্ঞা আর বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে দু'চারটা কথা বললাম, সেগুলো আমাদের ব্লগের কার সাথে মিলে যায় বলেন দেখি! পার্শ্ব-অভিনেতার ভুমিকায় যেসব তৈলবাজ তারা বাদে চোখ খোলা, কান্ডজ্ঞান সম্পন্ন, বিবেকের দরওয়াজা এখনও বন্ধ হয়ে যায় নাই এবং অন্যায় আর অস্বাভাবিক আচরণ সম্পর্কে ন্যুনতম ধারনা রাখেন এমন ব্লগারগণ খুব সহজেই একে চিহ্নিত করতে পারবেন। ইয়েস......ঠিক ধরেছেন! এই ব্লগারকে সাইকোগাজী বললেও অত্যুক্তি হবে না!!
আমি সবসময়েই বলি, ব্লগ আমাদের একটা সুবৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের সদস্যদের সাথে, তথা ব্লগারদের সাথে আমরা খোলা মনে আমাদের সুখ-দুঃখ শেয়ার করি, হাল্কা হই; যেটা আমরা আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব পরিবারের সদস্যদের সাথে অহরহই করে থাকি। স্থান-কাল-পাত্র-বিষয়কে অবজ্ঞাকারী এই ব্লগার যে কোনও পোষ্টে হাজির হয়ে অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ব্যক্তি আক্রমণ বা সাইকোগিরি করতে এতটুকু কার্পন্য করে না। এটাকে সে পৈশাচিক আনন্দ লাভ করার একটা মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে। সেই মন্তব্যে কে আহত হলো কিংবা নিহত, তাতে তার কিছুই যায় আসে না। উহা তার বিকৃত আনন্দ ভোগ করতে পারলেই খুশী। উদাহরণের কোন অভাব নাই। আমার কাছে অসংখ্য স্ক্রীণশট আছে, তবে সেসব দেখিয়ে পোষ্টকে লম্বা করার কোন মানে নাই। বরং যেই কারনে আমার এই পোষ্টের অবতারণা, সেটাতে সরাসরি চলে আসি।
গত বছরের অক্টোবরে আমার আম্মা ইন্তেকাল করেন। আমি আমার মনের যন্ত্রণা লাঘবের জন্য একটা পোষ্ট দেই। তাতে এই সাইকোর মন্তব্য দেখেন,
এই মন্তব্যের সোজা অর্থ হলো, আম্মার চিকিৎসার জন্য যা করা দরকার ছিল, আমরা, ভাইবোনেরা তা করি নাই। বুঝতে পারছেন, কতোটা বিকৃতমস্তিস্ক এই মানুষ! এখন আমার কি করনীয় হবে, আম্মার চিকিৎসায় আমরা কি করেছি, তার বিতং বর্ণনা করা? কেউ কি করে সেই সময়ে বা আদৌ কি তার দরকার আছে? সবাই জানে বা চাইলে জেনে নিতে পারে, পারকিনসন্স বা আলঝেইমার্স, কোনটাই কিওরেবল না। আর বছরের পর বছর ধরে আমরা কি কি করেছি, আম্মার অন্যান্য শারীরিক সমস্যা বা কন্ডিশানের কারনে কি কি করা সম্ভব ছিল না; মেডিকেশান, ফিজিওথেরাপী, বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনা কোন লেভেলের ছিল তার বর্ণনা দিয়ে কি আমাকে আরেকটা পোষ্ট দিতে হবে? মা'কে বাচানোর জন্য সন্তানরা যে কোন কিছুই করতে পারে.......ক্ষমতার বাইরে গিয়েও চেষ্টা করে। বরং বলা যায়, সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করে। এটা স্বতঃসিদ্ধ একটা ব্যাপার। একটা কথা বলি, কেউ অন্যভাবে নিবেন না। আমাদের পরিবারের যেই আর্থিক সামর্থ আছে, তা দিয়ে আমরা বর্তমান বিশ্বের সবচাইতে উন্নত চিকিৎসাই এভেইল করতে পারি। সেখানে লন্ডন-আমেরিকা কোন বিষয়? একসময়ে কিছু গেরাইম্যা অশিক্ষিত মানুষের ধারনা ছিল, যে কোনও সমস্যায় ঢাকায় যেতে পারলেই সমাধান অবশ্যম্ভাবী! এই সময়েও তেমনি কিছু আদেখলা মানুষের অভাব নাই। উহারা ভাবে, লন্ডন-আমেরিকা মানেই সব সমস্যার সমাধান! ইহার আসল উদ্দেশ্য ছিল আমাকে কথা দিয়ে আঘাত করে যন্ত্রণা আরো বাড়ানো। সাইকো বলে কথা, তাই না!!!
আমার উত্তর দেয়ার পরেও সাইকোর আবার আগমন। এবার ভিন্ন আঙ্গিকে।
অর্থাৎ সোজা বাংলায়, আমার বোন একটা স্বার্থপর। কাজের সময়ে আম্মাকে ব্যবহার করেছে, আর যখন প্রয়োজন ছিল (সাইকোর বক্তব্য অনুযায়ী), তখন আমেরিকায় তার কাছে নেয় নাই। এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়ার কোন মানে হয়? ঠিক কোন লেভেলের ইডিয়েট হলে কেউ এমন কথা বলতে পারে, ভাবতে পারেন? খুব সত্যি করে যদি বলি, এমন বদ চরিত্রের মানুষের কথা সিনেমায় দেখেছি, বইয়ে পড়েছি......কিন্তু নিজস্ব অভিজ্ঞতা এই প্রথম, তাও আবার আমাদের এই প্রিয় প্ল্যাটফর্মে!!
আসলে সেই সময়ে এটা নিয়ে বাহাস করার মতো মন-মানসিকতাও আমার ছিল না। ভেবেছি যাকগে, সাইকো তার সাইকোগিরি করুক, ডাষ্টবিনে গিয়ে মরুক.........আমি ইগনোর করি। কিন্তু না, আমার এই ইগনোরকে সে দূর্বলতা ভেবে নিয়েছে। আমার সর্বশেষ পোষ্ট, যেটা দেশে যাওয়া-আসার সময়ে তোলা কিছু ছবি নিয়ে একটা ছবিব্লগ, সেখানে আবার ইহার নোংরা চরিত্রের প্রদর্শণ দেখেন,
অর্থাৎ আম্মার পরলোকগমন আর তার পরবর্তী আমার মানসিক অবস্থা মিথ্যা হওয়ার চান্স আছে!? প্রিয় ব্লগারদের কাছে আমার প্রশ্ন, দুনিয়ার কোন সন্তান তার মায়ের ইন্তেকাল আর সেই সংশ্লিষ্ট রিপারকেশান নিয়ে মিথ্যা বলতে পারে? আমার তো মাথায় আসে না..........আসলেই না!!!
ব্লগে ব্যক্তি আক্রমণ এখন পারিবারিক আক্রমণে রুপ নিয়েছে। কি অভাবনীয় উত্তোরণ!!! এই সাইকোপ্যাথের নোংরামি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা কি আসলেই খুব কঠিন?
কোন পরিবারে এই ধরনের মানসিকতা-সম্পন্ন সদস্যকে চিকিৎসা করে ভালো করার চেষ্টা করা হয়; তবে ব্লগে তো আর সেটা সম্ভব না! কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে (যেমন, কমেন্ট ব্যান, প্রথম পাতার এক্সেস বন্ধ করা কিংবা সুলেমানী ব্যান ইত্যাদি) চেষ্টা করা হয়ে থাকে বটে, তবে একজন সাইকোপ্যাথের জন্য সেসব যথেষ্ট না। আপনারা সেই পাগলের গুলতি দিয়ে জানালার কাচ ভাঙ্গার গল্পটা নিশ্চয়ই জানেন! উহার হয়েছে সেই দশা। আগে ব্যান করলে সে বলতো, আমি এখন থেকে ব্লগের নীতিমালা মেনে চলবো। যখন দেখলো, ব্যানে তেমন একটা সমস্যা হয় না, তখন বলা শুরু করলো, আমি আমার ব্লগিং স্টাইল পরিবর্তন করবো না। আর এখন নতুন নিকে সে ক্রমাগত বলে চলেছে, তার আগের নিক অন্যায়ভাবে ব্যান করা হয়েছে, ব্লগ টিম ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ব্লগ টিম তার অধিকার খর্ব করেছে........ইত্যাদি ইত্যাদি যতোসব আবর্জনা!!
আমাদের দেশে সরকারী পর্যায়ে একটা অদ্ভুত নিয়ম চালু আছে। কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী অপরাধ করলে তাকে বদলী করে দেয়া হয় শাস্তি হিসাবে। ভাবখানা এমন, নতুন জায়গাতে গেলে সে সাধু হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটে না। নতুন জায়গায় সে নতুন উদ্যোমে তার শয়তানী শুরু করে। আসলে চরিত্রই যার খারাপ, তাকে দুধ দিয়ে গোসল করালেও সে দুর্গন্ধ ছড়াবেই। ব্লগে তেমনটাই দেখতে পাচ্ছি।
নিক বদলালেই কি বদ-চরিত্র বদলায়? আমাদের চোখের সামনেই কি যথেষ্ট প্রমাণ নাই? ব্লগে কি দূষিত ব্যক্তি-চরিত্রকে ব্যান করা হয়? নাকি নিককে? এটাই মডারেশান টিমের কাছে আমার বিনীত জিজ্ঞাসা।
ছবি সূত্র।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০২২ সকাল ১১:৩৬