স্বৈরাচার হাসিনাকে লাথি মেরে দেশ থেকে ভাগিয়ে দেয়ার পর মেঘে মেঘে খানিকটা বেলা হলো। ইচ্ছা ছিল, ড. ইউনুস সরকারের একমাস পূর্তিতে একটা রিভিউ পোষ্ট দিবো। কিন্তু এ্যাজ ইউজ্যুয়াল, ইচ্ছাটা ঠিক রাখতে পারলাম না। তবে খুব বেশী দেরি করি নাই মনে হয়, পাচ সপ্তাহের মাথায় দিতে পারলাম। এই সময়টাতে খুব বেশী কিছু যে প্রত্যাশা ছিল, বিষয়টা তা নয়; কারন প্রত্যাশা পূরণের জন্য সময়টা যথেষ্ট না। ১৬ বছরের জন্জাল পরিস্কার করা কি চাট্টিখানি কথা? কিন্তু তারপরেও মর্ণিং শো'জ দ্য ডে এর মতো একটা বিষয় তো থাকেই, তাই না!!!
সামগ্রিকভাবে সবগুলো মন্ত্রণালয়ের কাজকামের ব্যাপারে আমার ততোটা আগ্রহ নাই, সেটা বাস্তবসম্মতও না। আসলে এই সময়টাতে আমি বিশেষ করে ৬টা মন্ত্রণালয়ের দিকে নজর রাখার চেষ্টা করেছি। সেগুলো হলো, অর্থ (সালেহউদ্দিন আহমেদ), স্বরাষ্ট্র (লে. জে. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী), জন প্রশাসন (ড. মুহাম্মদ ইউনূস), আইন ও বিচার (ড. আসিফ নজরুল), শিক্ষা (ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ) আর স্বাস্থ্য (নূরজাহান বেগম)।
প্রথমেই আসি সালেহউদ্দিন সাহেবের কাজকর্মে। একটা তথ্য দেখলেই উনার কাজ যে কতোটা চ্যালেন্জিং সেটা বুঝতে পারবেন। সেটা হলো, ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার সরকারি ঋণ রেখে দেশ থেকে পালিয়েছে পতিতা হাসিনা। দেশী ও বিদেশী উৎস থেকে এ ঋণ নেয়া হয়েছে। অথচ ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করে, তখন সরকারের ঋণ স্থিতি ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। সে হিসাবে আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলেই সরকারের ঋণ স্থিতি ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বেড়েছে, যা সরকারের মোট ঋণের প্রায় ৮৫ শতাংশ। অন্যদিকে, বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার!!!
বিগত সরকার শুধুমাত্র লুটপাটের জন্য ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছিল যার ফলে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে, ফলশ্রুতিতে অবধারিতভাবেই দেশে মুল্যস্ফীতি দেখা দেয়। তাছাড়া ডলার সংকট, বিদেশে বিপুল পরিমান অর্থ পাচার, ঋণের নামে ব্যাঙ্ক লুটপাট......এইসব তো ছিলোই। ফ্যাসিস্ট সরকারের সহায়তায় এস আলমের উপর্যুপরি ধর্ষণে ইসলামী ব্যাঙ্কের মতো শক্তিশালী ব্যাঙ্ক আজ ইজ্জৎ হারিয়ে অর্ধমৃত অবস্থায় ধুকছে। লুটপাটের জন্য দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে একই দিনে ভিনদেশী নাগরিক হিসাবে স্থায়ীভাবে দেশে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার বিরল ঘটনাও ঘটিয়েছে এস আলম পরিবার!!!! লুটপাটের আরেক নজির হলো কর্নফুলি টানেল, যার প্রতিদিনের আয়ের থেকে ব্যয় অনেক অনেক বেশী।
বর্তমানে ব্লগের কতিপয় অর্ধ-শিক্ষিত নব্য রাজাকারের কথা বাদ; আশ্চর্যের বিষয় হলো কিছু উচ্চ শিক্ষিত ব্লগারও কয়েকটা চাকচিক্যময় ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মোহে পড়ে দেশের অর্থনীতিকে ঝাঝরা করে দেয়া বিগত সরকারের উন্নয়নের গুণগান গেয়েছিলো একটা সময়ে!!! কিভাবে সম্ভব? যাই হোক, বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্ণর আর অর্থ উপদেষ্টার মিলিত চেষ্টা এখন পর্যন্ত যথেষ্টই আশা জাগানিয়া।
সার্বিকভাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাজকামে আমি পুরাই হতাশ। উনি কি কাজ করছেন? আদৌ বলার মতো কিছু করছেন কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। হাসিনার খাস চামচা বসুন্ধরার ভূমিখেকো শাহ আলম বহাল তবিয়তে। তার ছেলে, মুনিয়া হত্যা মামলার আসামী আনভীরের অবস্থাও তথৈবচ। যেসব পুলিশ কর্মকর্তার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ রয়েছে, তারাও তেমন কোন বিপদে আছে বলে মনে হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র সচিবও নিরুপদ্রব অবস্থায় আছে। পুলিশ যথারীতি আগের মতোই নির্দিষ্ট অপরাধের মামলা না করে ঢালাওভাবে এবং গায়েবী মামলা করছে। পুলিশের বদলী বানিজ্যেও কোটি কোটি টাকা হাত বদল হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। মব-চাদাবাজি-দখলবাজি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কঠোর হওয়ার কোন নজীর দেখা যাচ্ছে না। ফ্যাক্টরী পোড়ানোর ষড়যন্ত্র যথারীতি চালু রয়েছে; এটার দিকেও নজর দেয়া প্রয়োজন। কথিত এতো কঠোর নজরদারীর মধ্যে হাসান মাহমুদসহ আরো বেশ কিছু ক্রিমিনাল দেশ থেকে পালিয়ে গেলো!! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আগের উপদেষ্টাই ভালো ছিলেন। যদিও কিছু বেফাস মন্তব্য উনি করেছিলেন, তবে উনি কাজের মানুষ ছিলেন। স্যরি টু সে, এখনকারটাকে আমার কাছে কিঞ্চিৎ অপদার্থ বলেই মনে হচ্ছে!!!
জন প্রশাসন যেহেতু ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেখছেন, এবং একই সঙ্গে যেহেতু উনি আরো বেশকিছু মন্ত্রণালয়ও দেখছেন তাই বেশী কিছু বলতে চাই না। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন জেলার ডিসি নিয়োগে যে ভজঘট অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল এবং আট জেলার নিয়োগ বাতিল করতে হয়েছিল সেটা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা উনার হেল্পিং-হ্যান্ডদের ব্যর্থতা এবং গভীরভাবে খতিয়ে না দেখার কারনে বলেই আমি মনে করি। আশা করি, উনি উনার হ্যান্ডদের স্ক্রু যথাযথভাবে টাইট দিবেন। এখানেই প্রশ্ন আসে, উনার বিশেষ সহকারী আলী ইমাম মজুমদারের কামটা কি?
আইন ও বিচার বিভাগে বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের ব্যাপারেও আমি পুরাপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছি না। উপদেষ্টা হওয়ার আগে উনার যে সকল বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছিল, উপদেষ্টা হওয়ার পরে সেসব অনেক কিছুরই তীব্রতা কমেছে বলে মনে হচ্ছে। উদাহরন হিসাবে বসুন্ধরা গ্রুপের পিতা-পুত্র নিয়ে উনার পূর্বেকার কঠোর স্ট্যান্সের প্রসঙ্গ টানা যায়। তেজ কমে যাওয়ার কারন কি? টাকার কাছে উনি বিক্রি হয়ে গেলেন নাতো?
শিক্ষাতে জনাব ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সকল ভিসিগণের নিয়োগ বাতিল করে নতুন নিয়োগ দিয়েছেন আর আগের শিক্ষাক্রম বাতিল করেছেন বটে, তবে এ'ছাড়া আর তেমন কিছু নজরে আসে নাই। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-শিক্ষকদের লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে উনার নির্দিষ্ট চিন্তাধারা জানাটা জরুরী। উনি কি বুঝতে পারছেন যে, এই লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতে না পারলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি করা প্রায় অসম্ভব?
স্বাস্থ্যখাতে নূরজাহান বেগম একেবারেই ডায়নামিক নন। আন্দোলনে আহতদের সরকারী খরচে সুচিকিৎসার ব্যাপারে ওনার কোন হেলদোল আছে বলে তো মনে হচ্ছে না। চিকিৎসার খরচ মেটানোর জন্য সদ্যোজাত সন্তানকে বিক্রির ঘটনাও ঘটছে। এদিকে সবার সুচিকিৎসা কি দেশেই সম্ভব হচ্ছে? ক্রিটিকাল কাউকে বিদেশে পাঠানোর কোন সংবাদ তো শুনি নাই, নাকি কেউ ক্রিটিকাল কন্ডিশানে নাই!! দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে রাখার পেছনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আর বিএনপি সমর্থিত ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) বহুলাংশে দায়ী। চিকিৎসকদের লেজুড়ভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন নিষিদ্ধ করাটাও জরুরী। এই খাতে যতো দূর্নীতি, অনিয়ম আর টেন্ডারবাজী হয়, তার পেছনের কারন এই লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি। মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে কাজ করা এই সেবা খাতের সত্যিকারের উন্নতি নিশ্চিত করতে চাইলে এসব বন্ধ করার কোন বিকল্প নাই।
যথাযথ শিক্ষা জাতির মোরাল মেরুদন্ড আর যথাযথ স্বাস্থ্য ফিজিওলজিকাল মেরুদন্ড শক্ত করে। দু'টাই স্বৈরাচারের অবহেলার লিস্টে থাকে কারন জাতির এই দুই মেরুদন্ড দূর্বল হলেই তাদের শাসন করা সহজ হয়ে যায়। তারা দেশের মানুষের এই দুই মেরুদন্ড দূর্বল রেখে নিজেদেরটা উন্নত বিশ্বের সহায়তায় ঠিক রাখে। ফলে আমরা দেখি, এরা চিকিৎসা আর তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য বিদেশমুখীতা বা বিদেশ নির্ভরতা গড়ে তোলে। স্বাভাবিকভাবেই দেশে সাধারন মানুষের জন্য এই দু'টা সেবা অবহেলিত রয়ে যায়। তাই এই সরকারের প্রায়োরিটির তালিকায়, অর্থাৎ ৬টা সংস্কার কমিশনের মধ্যে এই দু'টা নাই দেখে চরম হতাশ হয়েছি। যদিও আশার কথা, ড. ইউনুস উনার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া সর্বশেষ ভাষণে এই দুই খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন।
সমস্যা হলো, ড. ইউনুস বা তার উপদেষ্টারা কেউই পেশাদার রাজনীতিবিদ না। তারা রাজনীতির মারপ্যাচও খুব একটা বুঝতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না। কাজেই তাদের এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের মতামত শোনা দরকার। গোয়েন্দাদের তথ্য পর্যালোচনা করা দরকার। দেশে-বিদেশে দেশ বিরোধী যেসব ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেগুলো যাচাই-বাছাইও করা দরকার। সামনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাপূজার উৎসব আসছে। ভারতের বিজেপি সরকার তাদের আওয়ামী দালালদের মাধ্যমে হিন্দুদের উপর হামলা করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার আরেকটা প্রচেষ্টা চালাবে। মোদ্দাকথা, তাদেরকে আরো সাবধানী আর স্মার্ট হতে হবে। যতোদিন যাবে, সাবধানতা ততোই বাড়াতে হবে। ভাবে মনে হচ্ছে, উনারা দিনে দিনে বিপদ কমছে মনে করে কিছুটা রিল্যাক্স মুডে চলে যাচ্ছেন। সত্যিই যদি তাই হয়, তাহলে সেটা হবে উনাদের জন্য আর দেশের জন্য এক অনাগত ভয়ঙ্কর বিপদের সূচনা মাত্র।
মনে রাখতে হবে যে, ভারতের সহায়তায় দেশে ষড়যন্ত্র শুধু আওয়ামী লীগই করবে না; বিএনপি'র লুটপাটে বাধা দিলে তারাও করবে। জামায়াত যদিও লুটপাটে শামিল হবে না, তবে যদি তারা দেখে যে এই সরকার দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকবে, তাহলে তাদেরও ধৈর্যচ্যুতি ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে তারাও ষড়যন্ত্রে শামিল হতে পারে; নাথিং আনলাইকলি। কোনকিছুকেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। এখন পর্যন্ত সরকারের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে না সরকার এসব নিয়ে খুব একটা চিন্তিত। তাদেরকে এইদিক দিয়ে বেশ নির্ভার মনে হচ্ছে। ওদিকে সেনাবাহিনীর কাজকামে মনে হচ্ছে তারা যেন একটা প্যারালাল ছায়া সরকার পরিচালনা করতে চাচ্ছে। তাই প্রচুর চ্যালেন্জ সরকারের সামনে।
এখন পর্যন্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বিশেষভাবে নজরে এসেছেন। উনাকে যথেষ্ট একটিভ মনে হচ্ছে। খুবই ভালো, উনাকে অভিনন্দন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সারজিস, হাসনাতসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে বলবো, রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে নজর দেয়ার সাথে সাথে আহত-নিহতদের দিকেও জরুরী ভিত্তিতে নজর দেন। শুধুমাত্র লিস্টি করাই যথেষ্ট না। আহতদের, তাদের পরিবারের পাশে দাড়ান। আহত-নিহতরা অনেক পরিবারেই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল। তাদের সংসার কিভাবে চলছে, সেই খোজ-খবর নেন। এগুলো আপনাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটিতে থাকা উচিত। সরকারকে এই ব্যাপারে অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রেশার গ্রুপের ভূমিকা পালন করেন। মিডিয়াতে অনেক খবরই আসছে যেগুলো সুখকর না। এই কাজে যতো দেরী করবেন, আপনাদের চেহারায় একধরনের ক্ষমতালোভী বেঈমানের ছাপ ততোই প্রকট হবে। সরকারে দুই ছাত্র উপদেষ্টার জন্য এই কথাগুলো আরো বেশী করে প্রযোজ্য। মনে রাখবেন, সরকারী কাজের চাইতে এই কাজগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ না।
এই সরকারের পথচলা মাত্র শুরু। তবে কাজে কোন ঢিলেমী দেয়া ঠিক হবে না। এটা বুঝতে হবে যে, আপনাদের হাতে অঢেল সময় নাই। যেই উদ্দেশ্য নিয়ে আপনাদের পথচলা শুরু, তাতে যতো দ্রুত সম্ভব দৃশ্যমান সফলতা আনা খুবই জরুরী। জাতি আপনাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে; তবে এটা আনকন্ডিশনাল না। এটা অব্যাহত থাকবে কিনা তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনাদেরই। এখন পর্যন্ত ভাবসাবে মনে হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর বেশীরভাগ উপদেষ্টাই হানিমুন মুড থেকে বের হতে পারেন নাই। ওয়েক আপ গাইজ!! টাইম ইজ রানিং আউট!!!
আইশ এ্যলেন এ্যলেস গুটে!!!
ছবিসূত্রঃ আরটিভি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৪